১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
নাজিরপুরে পাশাপাশি খোঁড়া হচ্ছে একই পরিবারের সেই ৪ জনের কবর ভোলায় পূজা মন্ডপের গেট ভাঙচুরের সময় হিন্দু যুবক আটক রায়পুরায় পূজামণ্ডপের প্যান্ডেল ভাঙচুর নিয়ে গুজব ছড়ানোর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন কলাপাড়ায় সরকারী খাল দখলমুক্ত করতে দু-পক্ষের হামলা, আহত-৫ ঝালকাঠিতে প্যানেল চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক বরগুনায় ধ*র্ষ*ণ প্রতিরোধক জুতা আবিষ্কার করলো স্কুলছাত্র দুমকিতে ছাত্র ব*লাৎকা*রের অভিযোগে প্রাইভেট শিক্ষক আটক বরিশালে পূজা মণ্ডপ পাহারা দিচ্ছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা স্কুল-কলেজের শিক্ষার মতো মাদ্রাসা শিক্ষাকেও কর্মমুখী করতে হবে: স্বপন মুলাদীতে পুকুরে গোসলে নেমে প্রাণ গেল কলেজছাত্রের

আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে উজিরপুরের ‘সাতলা বিল’

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশালের উজিরপুর উপজেলার সাতলা বিল লাল আর সাদা শাপলার অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমিতে পরিণত হয়েছে। সেই সৗন্দর্য উপভোগ করতে দূরদূরান্ত থেকে ছুটে যাচ্ছেন দর্শনার্থীরা।

বরিশাল নগরী থেকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে উজিরপুর উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল সাতলা ইউনিয়নের উত্তর সাতলা গ্রাম। স্থানীয়ভাবে এ এলাকাটি শাপলা রাজ্য হিসাবে পরিচিত। গ্রামের নামেই বিলের নাম ‘সাতলা বিল’।

সরেজমিনে দেখা গেছে, লাল-সবুজে বিস্তীর্ণ এ সাতলা বিলটি দূর থেকেই চোখ পড়ে পর্যটকদের। কাছে গেলে ধীরে ধীরে সবুজের পটভূমিতে লালের অস্তিত্ব আরও গাঢ় হয়ে ধরা দেয় বাহারি সৌন্দর্য। সূর্যের আভাকেও যেন হার মানিয়েছে। সাতলা বিলের পানিতে লতা পাতা গুল্ম ভরা শত সহস্র লাল ও সাদা শাপলা। এ যেন প্রকৃতির বুকে আঁকা এক নকশিকাঁথা।

প্রতি বছর বর্ষার শুরুতেই ফুটতে শুরু করে শাপলা ফুল। প্রতি বছর মার্চ-এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত এখানে শাপলার সিজন। প্রায় ১০ হাজার একর জলা ভূমির মধ্যে জন্ম নেওয়া লাল, নীল ও সাদা রঙের কোটি শাপলা এক নজর দেখার জন্য সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা বয়সের হাজারও পর্যটকের ভিড় থাকে। পর্যটকদের আনাগোনায় দিন দিন মুখরিত হয়ে উঠছে ‘শাপলার রাজ্য’ খ্যাত সাতলা বিল এলাকা। এ বিলে ভ্রমণের জন্য রয়েছে ছোট আকারের নৌকা। সূর্যের উদয়ক্ষণে সূর্যরশ্মি পড়া মাত্রই বিলটির সৌন্দর্য আরও মোহনীয় হয়ে ধরা দেয়।

স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, শুধু সৌন্দর্যই নয়, সুস্বাদু খাবার হিসেবেও শাপলার বেশ কদর রয়েছে। ওই এলাকার গ্রামাঞ্চলের সহজ সরল মানুষগুলো বিলের পানিতে জীবন সংগ্রামের আয়ের পথ হিসাবে বেছে নিয়েছেন শাপলা তোলাকে। সকালে সূর্য উঠার সাথে সাথে ছোট ছোট নৌকা নিয়ে বিলে নেমে পড়েন শাপলা তোলার জন্য এ এলাকার খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষ। পানির মধ্য থেকে শাপলাগুলো তুলে বাজারে বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করছে শত শত পরিবার। প্রায় ২’শ বছর ধরে সাতলার বিলগুলোতে শাপলা জন্ম হচ্ছে। ওই এলাকার প্রায় ৫০ ভাগ অদিবাসী শাপলার চাষ ও বিপণন কাজের সাথে জড়িত।

এক সময় শাপলার তেমন কোনো চাহিদা না থাকায় পানিতে জন্মে পানিতেই মরে পঁচে যেত। দিনে দিনে শাপলার চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় তা বাজারে বিক্রি করতে শুরু করে দিন মজুররা। এখন প্রায় সারা বছর ধরেই শাপলা পাওয়া যায়। বিশেষ করে এ অঞ্চলের মানুষ খাদ্যের তালিকায় শাপলাকে প্রাধান্য দিচ্ছে।

শাপলা তুলে বিক্রি করা দিন মজুর সাখাওয়াত হোসেন জানান, শাপলা তুলে বাজারে বিক্রি করে চলছে তার সংসার। প্রতিদিন ৪’শ থেকে ৫’শ টাকা আয় হয় তার। এছাড়াও দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিনোদন ও প্রকৃতিপ্রেমী পর্যটকদের কাছে নানা সামগ্রী বিক্রি করে তিনি আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন।

শাহজাহান পেশায় একজন কৃষক, তিনি বর্তমানে দর্শনার্থীদের নিয়ে বিলে নৌকা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করছেন।

সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসা দর্শনার্থী আলম ও পাপিয়া জানান, প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে তারা এতদূর ছুটে এসেছেন। শাপলা বিলের সৌন্দর্য অবগাহনে তারা পুলকিত ও মুগ্ধ।

এ বিষয়ে বরিশাল জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন হায়দার বলেন, সাতলার শাপলা বিল নিয়ে আমাদের পরিকল্পনা রয়েছে। এরমধ্যে সাতলাকে পর্যটনকেন্দ্র করার বিষয়ে পর্যটন কর্পোরেশনকে লিখিত ভাবে অবহিত করা হয়েছে। অতিসত্বর সেখানে পানি, বাথরুমের ব্যবস্থা করা হবে।

জেলা প্রশাসক বলেন, স্থানীয়ভাবে রেস্ট হাউস করার চেষ্টা চলছে। পর্যটকরা যেন ঘুরে ফ্রেশ হতে পারেন এ বিষয়ে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তবে সেখানে সরকারি জমি না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। অচিরেই এ সমস্যা কাটিয়ে ওঠা যাবে ও সকলের প্রচেষ্টায় পযর্টনকেন্দ্র গড়ে উঠবে।

এ প্রসঙ্গে বরিশাল-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. শাহে আলম বলেন, প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি ‘সাতলা বিল’ দিনে দিনে পর্যটন এলাকায় পরিণত হচ্ছে। এ সাতলা বিলকে পরিপূর্ণতায় রূপ দিতে আমাদের নানামুখী পরিকল্পনা রয়েছে। অচিরেই ‘সাতলা বিল’-এর এ সমস্যগুলো সমাধান করা হবে।

সর্বশেষ