৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
মৃত্যুর প্রথম রাত কেমন হবে ! নৌকা প্রতিকের মনোনয়নপত্র দাখিল করলেন এস এম শাহজাদা পিরোজপুর-৩ আসনে লাঙ্গল পেলেন না ৪ বারের এমপি, হবেন স্বতন্ত্র প্রার্থী বরিশালে বন্ধ করে দেয়া হলো দোকানে পাম্প বসিয়ে তেল বিক্রি অবরোধ সফল ও হরতাল পালন করতে বরিশাল মহানগর বিএনপি মশাল মিছিল বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন প্যানেল চেয়ারম্যান ১ আলহাজ... পটুয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামীলীগ মনোনীত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল বরিশালের ছয় আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন ৪৭ প্রার্থী বরিশালে অটোপাসের আশ্বাসে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মিছিলে প্রধান শিক্ষক! বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন প্যানেল

ইসলামে যেসব ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের বিধানগত ভিন্নতা রয়েছে

নারী ও পুরুষের সৃষ্টিগত বৈশিষ্ট্য, সামাজিক রীতি-নীতি এবং সর্বোপরি মানুষের প্রতি আল্লাহর কল্যাণকামিতা ইত্যাদি বিবেচনায় শরিয়ত কিছু বিষয়ে নারী ও পুরুষকে ভিন্ন বিধান দান করেছে। এই ভিন্নতা নারী ও পুরুষের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহস্বরূপ। এখানে এমন কিছু বিষয় তুলে ধরা হলো-

১. চুল কাটা : পুরুষের জন্য চুল ছাঁটা বা কাটার অনুমতি থাকলেও বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া নারীর জন্য তা নিষিদ্ধ।

২. কণ্ঠস্বর : নারীর কণ্ঠস্বর সতরের অংশ।

তাই তা নিচু রাখা এবং আড়াল করা আবশ্যক। পুরুষের কণ্ঠ সতর নয়।
৩. দাড়ি : নারীর দাড়ি গজালে তা কেটে ফেলা উত্তম। আর পুরুষের জন্য একমুষ্টি দাড়ি রাখা ওয়াজিব।

৪. মেহেদি ব্যবহার : নারীর জন্য হাতে ও পায়ে মেহেদি ব্যবহার করা জায়েজ। চিকিৎসার প্রয়োজন ছাড়া পুরুষের জন্য তা নাজায়েজ।

৫. অলংকার ব্যবহার : নারীর জন্য স্বর্ণ ও অন্যান্য অলংকার পরিধান করা জায়েজ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে সাজসজ্জা মুস্তাহাব।

বিপরীতে পুরুষের জন্য সামান্য রুপা ছাড়া আর কোনো অলংকার পরিধান করা নাজায়েজ।
৬. সফর : মাহরাম (বিয়ে বৈধ নয় এমন নিকটাত্মীয় পুরুষ) ছাড়া নারীর জন্য দূরের সফর নিষিদ্ধ; এমনকি মাহরাম ছাড়া নারীর ওপর হজও ফরজ হয় না। কিন্তু পুরুষ একা দূরের সফরে যেতে পারে।

৭. সুগন্ধি ব্যবহার : পুরুষের জন্য সুগন্ধি ব্যবহার করা মুস্তাহাব, অথচ নারীর জন্য তা ব্যবহার করা মাকরুহ।

৮. পর্দা : নারীর জন্য পরপুরুষ থেকে নিজেকে আড়াল করা তথা পর্দা করা ফরজ।

পুরুষ ব্যতিক্রম। তবে পুরুষের জন্য দৃষ্টি অবনত রাখা আবশ্যক।

৯. আজান : আজান পুরুষ দেবে, নারীদের আজান দেওয়া মাকরুহ। কেননা নারীর কণ্ঠ সতরের অংশ এবং পুরুষ উচ্চকণ্ঠের অধিকারী।

১০. সতর : নামাজে নারীর জন্য চেহারা ও দুই হাতের তালু ছাড়া সমস্ত শরীর ঢেকে রাখা আবশ্যক। আর পুরুষের জন্য নাভি থেকে হাঁটু পর্যন্ত ঢেকে রাখা আবশ্যক। তবে অপূর্ণাঙ্গ পোশাক পরে নামাজ আদায় করা পুরুষের জন্য মাকরুহ।

১১. নামাজে হাত তোলা : পুরুষ নামাজে কানের লতি পর্যন্ত হাত তোলে, নারী তোলে সিনা পর্যন্ত। এ ছাড়া নারী-পুরুষের রুকু-সিজদার পদ্ধতিতে পার্থক্য আছে।

১২. নামাজে উচ্চৈঃস্বরে কিরাত পড়া : পুরুষ ফজর, মাগরিব ও ইশার নামাজে উচ্চৈঃস্বরে কিরাত পড়ে। কিন্তু নারী সব ওয়াক্তে অনুচ্চ স্বরে কিরাত পড়ে।

১৩. ইমামতি : নামাজে ইমামতি করার অনুমতি শরিয়ত শুধু পুরুষকেই দিয়েছে, নারীকে নয়।

১৪. মসজিদে নামাজ আদায় : পুরুষের জন্য মসজিদে নামাজ আদায় করা উত্তম আর নারীর জন্য ঘরে নামাজ আদায় করা উত্তম।

১৫. জুমার নামাজ : নারীর ওপর জুমার নামাজে অংশগ্রহণ আবশ্যক নয়, পুরুষের জন্য তা আবশ্যক।

১৬. নামাজ-রোজায় অবকাশ : বিশেষ দিনগুলোতে নারী নামাজ-রোজা থেকে বিরত থাকবে, কিন্তু পুরুষের এমন কোনো অবকাশ নেই।

১৭. ইহরামের কাপড় : ইহরামের নিয়ত করার পর পুরুষের জন্য সেলাইযুক্ত কাপড় পরা নিষিদ্ধ, কিন্তু নারীর জন্য তা বৈধ।

১৮. হজের পর চুল ফেলা : হজের পর পুরুষের জন্য চুল ফেলে দেওয়া আবশ্যক। কিন্তু নারী চুল ফেলবে না, শুধু সামান্য ছাঁটবে।

১৯. আকিকা : পুত্রসন্তানের আকিকা দুটি ছাগল এবং কন্যাসন্তানের আকিকা একটি ছাগল দিয়ে করা উত্তম।

২০. কাফনের : নারীকে পাঁচ কাপড় দিয়ে কাফন পরানো হয়, আর পুরুষকে তিন কাপড় দিয়ে।

২১. দাফন : মৃত ব্যক্তিকে দাফন করবে পুরুষ। নারীরা কবরস্থানে যাবে না।

২২. উত্তরাধিকার : উত্তরাধিকারের সম্পদ বোনের দ্বিগুণ সম্পদ লাভ করে ভাই। তবে সন্তানের সম্পদে মা ও বাবার অংশ সমান থাকে।

২৩. সাক্ষ্য : বিচারকাজে সাক্ষ্য প্রদানে দুই নারীকে এক পুরুষের সমান গণ্য করা হয়।

২৪. ভরণ-পোষণ : স্ত্রী, সন্তান ও মা-বাবার ভরণ-পোষণের দায়িত্ব পুরুষের। নারীর জন্য সন্তান ও মা-বাবার ভরণ-পোষণ আবশ্যক নয়। নারীর আর্থিক সামর্থ্য থাকলে দেওয়া উত্তম।

২৫. যুদ্ধে অংশগ্রহণ : নারীর জন্য যুদ্ধে অংশগ্রহণ আবশ্যক নয়। অন্যদিকে ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধান যুদ্ধ ঘোষণা করলে পুরুষের জন্য তাতে অংশ নেওয়া আবশ্যক।

২৬. রক্তপণ : নারীর রক্তপণ পুরুষের অর্ধেক।

২৭. ইদ্দত : স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে ইদ্দত পালন করতে হয়, কিন্তু স্ত্রী মারা গেলে স্বামীকে তা করতে হয় না।

২৮. তালাক : স্বামী তালাকের ক্ষমতা না দিলে স্ত্রী তালাকের অধিকার পায় না।

২৯. রক্তের দায় গ্রহণ : নারীরা স্বগোত্রীয়দের রক্তের দায় বহন করে না, কিন্তু পুরুষকে তা বহন করতে হয়।

৩০. জিজিয়া : নারী অমুসলিম হলেও তার ওপর জিজিয়া (নিরাপত্তা কর) আরোপ করা হয় না। ‍কিন্তু অমুসলিম পুরুষ তা দিতে বাধ্য থাকে। আল্লাহ নারী ও পুরুষ প্রত্যেককে তাঁর বিধান যথাযথভাবে মেনে চলার তাওফিক দিন। আমিন।

সূত্র : আল আউসাফুল হামিদা, পৃষ্ঠা ২২, আল আহকামুল খাসসাহ লিল-মারয়াতি : ৩/৩৭

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সর্বশেষ