নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার ঘটনায় নির্বাচন কমিশনে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন বরিশাল-৬ আসনের সংসদ সদস্য আবদুল হাফিজ মল্লিক।
বুধবার (১৫ মে) নির্বাচন কমিশনের তলবে হাজির হয়ে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন বলে জানান ইসির অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ। পরে তা আমলে নিয়ে তাকে দায়মুক্তি দেয় কমিশন।
এদিন পৃথক দুটি শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ সাংবাদিকদের এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।
বরিশাল-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল আবদুল হাফিজ মল্লিকের প্রকাশ্যে ভোট দেওয়া নিয়ে অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, উনার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল গত ৮ তারিখের ভোটে তিনি প্রকাশ্যে ভোট দিয়েছেন। অভিযোগগুলো কমিশন শুনেছে, তিনি ভুল স্বীকার করেছেন। লজ্জিত হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন এবং ভবিষ্যতে এ ধরণের কাজ করবে না বলে আশ্বস্ত করেছেন। তার ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি কমিশন আমলে নিয়ে অভিযোগ থেকে তাকে অব্যাহতি দিয়েছে।
শুনানি শেষে এমপি হাফিজ মল্লিক বলেন, বিষয়টা অত্যন্ত নগণ্য ও ছোট বিষয়। তিলকে তাল বানিয়েছে টিভি চ্যানেল-পত্রিকা। এটা এমন না যে, ব্যালট দেখিয়ে আমি কাউকে ভোট দিতে বাধ্য করেছি।
প্রকাশ্যে ভোট দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে নিয়ে তিনি বলেন, গোপন কক্ষে যাওয়ার কাজটা আমি দাঁড়িয়ে করেছিলাম। লাস্ট মোমেন্টে ঠিক চারটার কয়েক মিনিট আগে পৌঁছেছি। কেউ ছিল না সেখানে। খুব তাড়াতাড়ি করে ব্যালট নিয়ে ড্রপ করেছি। কাকে ভোট দিয়েছি কেউ দেখেনি।
তিনি বলেন, এটা এতো বড় অপরাধ না। আমি দুঃখ প্রকাশ করেছি। কমিশনের সিদ্ধান্ত তাদের হাতে।
যারা এই ছবি তুলেছেন তাদেরও সেখানে ছবি তোলার অনুমতি ছিল না। যারা ছবি তুলেছে তারাও নিয়ম লঙ্ঘন করেছে দাবি করে তিনি আরও বলেন, আমিও ভুল করেছি। বিধির কিছুটা লঙ্ঘন হয়েছে এটা সত্য।
এর আগে তাকে পাঠানো চিঠিতে ইসি উল্লেখ করে, গত ৮ মে বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গ্রহণের দিন আপনি ৪৭ নং মঙ্গলসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে প্রকাশ্যে ভোট প্রদান করেছেন। যার ভিডিও বিভিন্ন গণমাধ্যমে ছবিসহ প্রতিবেদন আকারে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রকাশ্যে ভোট প্রদান করে ভোটের গোপনীয়তা রক্ষা না করা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন বিধিমালা, ২০১৩ এর বিধি ৭৮ এর বিধান অনুসারে শাস্তিযোগ্য নির্বাচনী অপরাধ। এ অপরাধের কারণে আপনার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের ও পদ্ধতিগতভাবে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য স্পিকারের কাছে কেন পত্র প্রেরণ করা হবে না, সে বিষয়ে বুধবার (১৫ মে) বেলা ১২টায় নির্বাচন কমিশনে আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য কমিশন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।
এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত অনুসারে আপনাকে উল্লিখিত তারিখ ও সময়ে ব্যক্তিগতভাবে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’