>>শিশুসহ তিন জনকে কুপিয়ে জখম
>> ভয়ে থানায় যাচ্ছেনা আহতরা
শামীম আহমেদ :: বরিশালের উজিরপুর উপজেলার র্শীষ সন্ত্রাসী হিসেবে পরিচিত আলোচিত শহিদুল ইসলাম মার্ডার মামলার প্রধান আসামী নান্না ওরফে নান্নান স্বাক্ষী ও তার কন্যা শিশুকে হত্যার মিশনে কুপিয়ে জখম করেছে। একই সাথে মামলার বাদী বকুল বেগমকেও বেধরক পেটানো হয়েছে।
এদিকে আহত ১০ বছরের শিশু কন্যা মিলি ও স্বাক্ষী মাহাবুবুর রহমানকে অব্যাহত হুমকি দেওয়ায় হাসপাতাল ছেড়ে পালিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৯ সেপ্টেম্বর) বিকাল ৪ টায় বাড়ির সামনে হামলা ঘটনা ঘটলেও দেশিও অস্ত্র নিয়ে নান্না ও তার বাহিনী মহড়া দেওয়ায় ভয়ে আতংঙ্কে থানা পর্যন্ত যেতে পারেনি ওই ভুক্তভোগীরা। এর আগেও কয়েক দফা হামলা করা হয় তাদের উপর। যাতে স্বাক্ষী না দেওয়া হয় তার বিরুদ্ধে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- জমি দখলের প্রতিবাদ করায় উজিরপুর উপজেলার ভবানীপুর গ্রামের শহিদুল ইসলামকে ২০১৫ সালে জনসম্মূখে কুপিয়ে পিটিয়ে হত্যা করে করে র্শীষ সন্ত্রাসী ও আঞ্চলিক প্রতারক চক্রের প্রধান নান্নান। সেই মামলায় নিহতের স্ত্রী বকুল বেগম বাদী হয়ে নান্নানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। স্বাক্ষী রাখা হয় নিহতর ভাই বড় ভাই মাহাবুবুর রহমানকে। বর্তমানে বিচারাধীন ওই মামলাটি বরিশাল ১ নং অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতে স্বাক্ষী পর্যায়ে রয়েছে। বাদী বকুল বেগম ও স্বাক্ষী মাহাবুব আদালতে যাতে স্বাক্ষী না দেয় সেজন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছিলো। সন্ত্রাসী নান্নার কথা না শুনায় গেলো ৯ সেপ্টেম্বর বিকালে বাদী ও স্বাক্ষীকে পিটিয়ে কুপিয়ে জখম করা হয়। সেই সঙ্গে মাহাবুবের একমাত্র শিশু কণ্যাকেও মাথার উপর কুপিয়ে জখম করা হয়। উজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি হলেও অব্যাহত হুমকির কারনে শিশু কন্যাকে নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন আহত মাহাবুব। পরে স্থানীয়দের সহযোগীতায় আবারও চিকিৎসা নিতে আবার দ্বিতীয় দফায় হাসপাতালে ভর্তি হন।
এব্যাপারে মামলার বাদী বকুল বেগম জানান, আমরা আদালতে মামলা চালাতে যাতে না যাই সেজন্য সন্ত্রাসী নান্নান আমাদের প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে আসছিলো। ঘটনার দিন আমাকে এবং মামলার স্বাক্ষীসহ সবাইকে হত্যার উদ্দেশে ধারালো রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে। স্থানীয়দের সহায়তায় প্রানে রক্ষা হয় আমাদের।
একই সাথে ভুক্তভোগী ওই নারী ও স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, নান্নান শুধু উজিরপুরই নয় সে বৃহত্তর বরিশাল আঞ্চলের প্রতারক চক্রের প্রধান হোতা। সে কন্ট্রাক মার্ডারে অংশ নেয় বিভিন্ন জায়গায়। এমন কি জাল দলিল, জাল টিকিট ও অবসরপ্রাপ্ত সরকারী ভুমি কর্মকর্তাদের নামে ভূয়া সিল বানিয়ে জমির জাল দলিল দিয়ে থাকে। একাধিক বার র্যাব পুলিশের সাথে গ্রেফতার হয়েছিলো নান্নান।
বিভিন্ন থানা ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, সন্ত্রাসী নান্নার বিরুদ্ধে হত্যা, প্রতারনা, জালিয়াতি হামলাসহ প্রায় ১৯ টি মামলার চলমান আছে। এলাকার নিরহ মানুষ তার ভয়ে দিনাতিপাত করছে।
এবিষয়ে অভিযুক্ত নান্নান জানান, বাদী স্বাক্ষীকে উদ্দেশ্য করে মারামারি হয়নি। মূলত গাঁজা কেনা বেচা নিয়ে তর্কের এক পর্যায়ে দুপক্ষের মধ্যে মারমারি হয়। এতে আমার স্ত্রীও কম বেশি আহত হয়েছে। আমি থানায় অভিযোগও দিয়েছি। অপর দিকে জালিয়াতি চক্রের সাথে জড়িত থাকার বিষয়ে বলেন প্রশাসন আমাকে বেশ কয়েকটি জালিয়াতির মিথ্যা মামলায় আসামী করেছে। সে গুলো আমি আইনের মাধ্যমে মোকাবেলা করছি।
এবিষয়ে উজিরপুর থানার অফির্সার ইনর্চাজ আলী আরশাদ বলেন, হত্যা মামলার বাদী স্বাক্ষীর উপর হামলার ঘটনার সত্যতা আছে। আহতরা হাসপাতালে চিকিৎস্বাধীন। লিখিত অভিযোগ পেলেই আমরা আসামীদের গ্রেফতার অভিযানে নামবো।