১১ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

উপমহাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ শ্মশান দীপাবলি উৎসব বরিশালে

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল মহাশ্মশানে ১৯২৭ সাল থেকে পালিত হয়ে আসছে শ্মশান দীপাবলি উৎসব। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দাবি, উপমহাদেশে এমন আয়োজন এটাই সবচেয়ে বৃহৎ। প্রতিবারের মতো শুরু হয়েছে উপমহাদেশের সবচেয়ে বৃহৎ শ্মশান দীপাবলি উৎসব। তবে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সংক্ষিপ্ত পরিসর রাখায় এবার তোরণ ও আলোকসজ্জার তেমন ঘটা নেই।

শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) সকাল থেকে নগরীর কাউনিয়ায় বরিশাল মহাশ্মশানে শুরু হওয়া এই আয়োজনের সমাপ্তি ঘটবে আগামীকাল সকালে।

বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সাধারণ সম্পাদক তমাল মালাকার জানান, গত কয়েকদিন ধরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও ধোয়ামোছা করা হয়েছে। মাস্ক ছাড়া মহাশ্মশানে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। প্রবেশপথে জীবাণুনাশক দুটি টানেল বসানো হয়েছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য সার্বক্ষণিক মাইকিং চলছে।

পুণ্যার্থীরা যেন নির্বিঘ্নে চলাফেরা করতে পারেন সেজন্য তাদের নিরাপত্তায় বিভিন্ন স্থানে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসিয়েছে পুলিশ ও প্রশাসন।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) খাইরুল আলম বলেন, ‘সংক্ষিপ্ত পরিসরে হলেও দীপাবলি উৎসব শান্তিপূর্ণ করতে সব বাহিনীর সমন্বয়ে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও র‌্যাব সার্বক্ষণিক মহাশ্মশানের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকছে।’

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, কালীপূজার আগের দিন ভূত চতুর্দশী তিথিতে পূজা অর্চনা করলে প্রয়াত ব্যক্তির আত্মা শান্তি লাভ করে। তাই আত্মার শান্তি কামনার পাশাপাশি প্রয়াত প্রিয়জনের উদ্দেশে তার সমাধিস্থলে নিবেদন করা হয় প্রয়াতের পছন্দের নানান খাবার। তিথি থাকা অবস্থায় সবকিছু করা হয়। এছাড়া সমাধির পাশে মোমবাতি জ্বালিয়ে প্রয়াতের আত্মার শান্তি কামনা করেন স্বজনরা। আর স্বজন না থাকা মঠগুলোতে কমিটির পক্ষ থেকে মোমবাতি জ্বালানো হবে।

বরিশাল মহাশ্মশান রক্ষা কমিটির সভাপতি মানিক মুখার্জি কুডু জানান, ৫ একর ৯৬ শতাংশ জায়গা জুড়ে বরিশাল মহাশ্মশানের মধ্যে পুরনো শ্মশানের অধিকাংশ সমাধি ক্ষয়ে গেছে। তবে এখনও ব্রাক্ষ্মণদের দুই-তিনটি সমাধি দেখা যায়।

রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের বাবা সত্যানন্দ দাশ ও পিতামহ সর্বানন্দ দাশ, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের অগ্নিপুরুষ বিপ্লবী দেবেন ঘোষ, ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেত্রী মনোরমা মাসি মা, শিক্ষাবিদ কালীচন্দ্র ঘোষসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সমাধি আছে বরিশাল মহাশ্মশানে।

নতুন ও পুরনো মিলিয়ে বরিশাল মহাশ্মশানে ৬১ হাজারেরও বেশি সমাধি রয়েছে। এর মধ্যে ৫০ হাজারের অধিক পাকা, ১০ হাজার কাঁচা মঠ এবং ৮০০ মঠ রয়েছে যাদের স্বজন দেশে নেই।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সর্বশেষ