আগৈলঝাড়া প্রতিনিধিঃ
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় মহামারি করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারনে মিষ্টি ব্যবসায় বড় ধরনের ধস নেমেছে। স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ বিক্রি কমেছে মিষ্টি ও মিষ্টিজাত পণ্যের। এমনই তথ্য জানিয়েছেন মিষ্টিজাত পণ্য বিক্রির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা। মিষ্টি ব্যবসায়ীরা জানান, মিষ্টি ব্যবসায় অস্বাভাবিক ধসের কারনে দোকান বা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা থেকে শুরু করে দোকান ভাড়া, পণ্য কেনা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পরিশোধ করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে ছোটখাটো অনেক দোকান বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। মিষ্টিজাত দ্রব্য পণ্যের বিক্রি ও চাহিদা থাকে মূলত বিয়ে, জন্মদিন, মৃত্যুবার্ষিকীর মিলাদ, পারিবারিক ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে। এছাড়া আত্মীয়-স্বজনদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার সময় মানুষ মিষ্টিজাত দ্রব্য পণ্য নিয়ে যান। কিন্তু বর্তমান করোনা ভাইরাসের কারনে সরকারি নিষেধাজ্ঞায় সব ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এ কারনে মিষ্টিজাত দ্রব্যের বিক্রি ও চাহিদা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ হ্রাস পয়েছে। এছাড়া বর্তমানে সাধারন মানুষের মধ্যে অর্থনৈতিক সংকটও বিরাজ করছে। অনেক পরিবারেই নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের জোগান দিতেই হিমশিম খাচ্ছেন। এই অবস্থায় অনেকটা বিলাসী সামগ্রী মিষ্টি ও মিষ্টিজাত পণ্য ক্রয় অনেকের জন্য দুরূহ হয়ে পড়েছে। এমনটা মনে করছেন মিষ্টি বিক্রয়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা। উপজেলার অন্যতম মিষ্টি প্রস্তুত ও বিপণন প্রতিষ্ঠান গৈলা বাজারের শ্রী দুর্গা মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক গোসাই দাস জানান, করোনা ভাইরাসের কারনে সামাজিক অনুষ্ঠানে লোক সমাগমের সরকারি কোন অনুমতি না থাকায় তাদের মিষ্টি বিক্রি ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ কমে গেছে। গৈলা বাজারের আরেক ব্যবসায়ী ঘোষ মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক পরিমল ঘোষ জানান, মিষ্টি বা মিষ্টিজাত পণ্য হচ্ছে সামাজিক অনুষ্ঠানে আপ্যায়নের প্রধান উপাদান। সামাজিক অনুষ্ঠান না হওয়ার কারনে মিষ্টি বিক্রিতে এই সমস্যা দেখা দিয়েছে। মিষ্টিজাত পণ্য বিক্রি কমে যাওয়ায় গরুর খামারিরা পড়েছে মহাবিপাকে। কারন এই এলাকায় যে পরিমান গরুর দুধ পাওয়া যায় তার বেশির ভাগ দুধ সরবরাহ করা হতো মিষ্টির দোকানগুলোতে। কিন্তু মিষ্টি বিক্রি কমে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা এখন আর তেমন দুধ কিনছেন না। যে কারনে অনেক গরুর খামারিরা তাদের গরু বিক্রি করে দিচ্ছে। এছাড়া উপজেলা সদরের শান্তি রঞ্জন মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক পরিমল কর ও মন্ডল মিষ্টান্ন ভান্ডারের মালিক খোকন মন্ডল জানান, সাম্প্রতিক সময়ে মিষ্টি বা মিষ্টিজাত দ্রব্য বিক্রয়ে যে ধস নেমেছে তাতে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার পাশাপাশি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
