গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি
পটুয়াখালীতে সাজেদা বেগম খুনের ঘটনায় মোসা. ফজিলাতুন্নেছা বেগম (৫৭) নামে এক নারীকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। একই অভিযোগে ফজিলাতুন্নেছার ছোট ভাই বশির উদ্দিন খলিফাকেও একই দণ্ড দিয়েছেন আদালত। গত ৩০ মে পটুয়াখালী অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. এনামুল হক এ আদেশ দেন। বাদীপক্ষের আইনজীবী ইউসুফ হোসেন এমন তথ্য নিশ্চিত করেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের আর্থিক দণ্ডও দেয়া হয়েছে। দণ্ডিত দুই ব্যক্তি গলাচিপা উপজেলার রতনদি গ্রামের মৃত মোতালেব খলিফার সন্তান। দীর্ঘ ১৬ বছর পরে এই রায় কার্যকর হয়েছে। নিহত সাজেদা বেগমের ছেলে মো. সাইদুর রহমান জানান, তার বাবা নয়া মিয়া ফজিলাতুন্নেছাকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। বিয়ের পর থেকে একই বাড়িতে থাকতেন তার মা সাজেদা বেগম ও দ্বিতীয় মা ফজিলাতুন্নেছা। একপর্যায় পরিবারে কলহের সৃষ্টি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০০৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর রাতে তার সৎ মা দণ্ডিত ফজিলাতুন্নেছা ও তার ছোট ভাই বশির উদ্দিন মিলে তার মাকে শ্বাসরোধে করে খুন নিশ্চিত হয়ে মৃতদেহ পুকুরে ফেলে দেন। পরদিন সকালে পুকুরের পানিতে তার মায়ের মৃতদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। এ সময় পানিতে ডুবে মৃত্যু হয়েছে বলে অপপ্রচার চালায় অভিযুক্তরা। এ ঘটনায় প্রথমদিকে তার বাবা নয়া মিয়া গলাচিপা থানায় অপমৃত্যুর অভিযোগ করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি সাইদুর রহমানের মামা অর্থাৎ মৃত সাজেদার ভাই কামরুল ইসলামের সন্দেহ হয়। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনের আলামত প্রমাণিত হলে সাজেদার ভাই কামরুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর গলচিপা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা করেন। ওই মামলায় ৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এরপর মামলাটির তদন্তে ন্যস্ত হন সিআইডি পুলিশ। ২০১৯ সালে ৪ জনকে অভিযুক্ত করেন আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন সিআইডি পুলিশ। আদালত দীর্ঘ শুনানি শেষে ফজিলাতুন্নেছা ও তার ছোট ভাই বশিরকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন দণ্ডে দণ্ডিত করেন। অপর দুই আসামি নিহত সাজেদার জা মনোয়ারা বেগম ও তার ছেলে বশির উদ্দিন হাওলাদারকে খালাস দেন আদালত। এর আগে মামলায় অভিযুক্ত মাসুদ খন্দকারকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন সিআইডি পুলিশ।
