বরগুনা প্রতিনিধি ::: উদীচীর একটি গণসঙ্গীত নিয়ে বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমির আপত্তির গণজাগরণের সাংস্কৃতিক উৎসব বর্জন করেছে সংগঠনটি। সোমবার বরগুনা শিল্পকলা একাডেমির আয়োজিত উৎসবে অংশ নেয়নি উদীচী।
‘এমন দ্যাশে জনম মোদের, বলিব কি আর ভাই/ এক বেলাতে ভাত জোটেতো, অন্য বেলায় নাই/ দ্রব্যমূল্য আকাশ ছোঁয়া আন্ধার ঘরে ঘরে/ করলে নালিশ জুটবে গুলি প্রাণটা যাবে যে বেঘোরে’ এমন কথায় গান বেঁধেছেন বরগুনার উদীচী শিল্পী গোষ্ঠীর শিল্পীরা।
উদীচী কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার ও তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সম্পাদক কংকন নাগ বলেন, “রোববার বিকালে বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমির মঞ্চে গানটির চূড়ান্ত মহড়া চলার সময় একাডেমির কালচারাল অফিসার সেটি গাওয়া যাবে না বলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেন।”
উদীচী বরগুনা জেলা সংসদের সভাপতি আব্দুল মোতালেব বলেন, “সোমবার জেলা শিল্পকলা একাডেমির গণজাগরণের সাংস্কৃতিক উৎসবে আমাদেরকে জাগরণী সঙ্গীত পরিবেশনের আমন্ত্রণ জানানো হয়। গতকাল চূড়ান্ত মহড়ায় আমাদের গান নিয়ে আপত্তি তোলা হয়। আমরা বলেছি, এই গানটি করতে না দেয়া হলে আমরা উৎসবে অংশ নেব না। কিন্তু তারা রাজি হয়নি, এজন্য উদীচীর বরগুনা জেলা সংসদ উৎসব বয়কট করেছে।”
তবে বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসার তানজিলা আক্তার বলছেন, গানটি নিষিদ্ধ করা হয়নি। সরকারি অনুষ্ঠান হওয়ায় এই উৎসবে গানটি পরিবেশন করতে মানা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, “আমরা বলেছি, এটি যেহেতু সরকারি অনুষ্ঠান- আপনারা অন্য কোনো গান করেন, মুক্তিযুদ্ধের গান করেন। তারা আমাদের অনুষ্ঠান বয়কট করেছে। আমি স্থানীয় অগ্রজ সংস্কৃতিকর্মীদের দিয়েও অনুরোধ করেছি, কিন্তু তারা এই গানটিই করতে চায়। আমি তাতে রাজি হইনি, এজন্য তারা অনুষ্ঠান বয়কট করেছে। আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তারাও বলেছেন এই গানটি যেন এই অনুষ্ঠানে গাইতে দেওয়া না হয়।”
এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এক বিজ্ঞপ্তিতে উদীচী কেন্দ্রীয় সংসদের সভাপতি অধ্যাপক বদিউর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেছেন, “এই গানের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বরগুনার জেলা কালচারাল অফিসার গর্হিত অপরাধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন বাংলাদেশে, এমন ঘটনা মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ।
এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে অবিলম্বে বরগুনা জেলা শিল্পকলা একাডেমির কালচারাল অফিসারের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা।
এর পেছনে কোনো উসকানি আছে কিনা সেটিও খতিয়ে দেখার দাবি জানান উদীচী নেতৃত্ব।