ঝালকাঠির মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে দুই বছর ধরে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব বন্ধ রয়েছে। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে তাদের পছন্দমতো স্থানীয় বিভিন্ন বেসরকারি ক্লিনিকে গর্ভবতী মায়েদের অস্ত্রোপচার করাতে হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। এ অবস্থায় অনেকেই জটিল অবস্থায় প্রসূতিদের নিয়ে ঝালকাঠি ও বরিশাল বিভাগীয় সদরের বিভিন্ন ক্লিনিকে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে অস্ত্রোপচার ও পরবর্তী চিকিৎসা সেবা নিতে অর্থের উৎস নিয়ে হিমশিম খেতে হয় তাদের। আবার বরিশালে নেওয়ার পথে অনেক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগও রয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন অত্যাধুনিক চিকিৎসা সামগ্রী ও উন্নত পরিবেশ থাকার পরও প্রায় দুই বছর ধরে অ্যানেস্থাসিয়া চিকিৎসক না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ক্লিনিক ব্যবসায়ীদের সুবিধা করে দিতেই চিকিৎসক নিয়োগ না দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা যায়, হাসপাতালের অ্যানেস্থাসিয়া চিকিৎসক ডা. মো. আমির হোসাইন প্রায় দুই বছর আগে উচ্চতর প্রশিক্ষণে যাওয়ার পর থেকেই পদটি শূন্য রয়েছে। পরবর্তীতে ডা. আমির হোসেন বিসিএস (স্বাস্থ্য) ক্যাডার হয়ে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে কর্মরত রয়েছেন। তার পরিবর্তে কোনও ডাক্তারকে সেখানে পদায়ন করা হয়নি। আর এতে মারাত্মক ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ রোগী ও তাদের স্বজনরা। বেকায়দা অবস্থা স্বল্প আয়ের মানুষের।
এই কেন্দ্রে চিকিৎসা নিতে আসা একাধিক নারী ও রোগীর স্বজনরা জানান, গত আট মাস ধরে চিকিৎসক মো. জোয়াহের আলীর কাছে প্রসব পূর্ববর্তী সব চিকিৎসা নিচ্ছেন তারা। তবে স্বল্প খরচে এই কেন্দ্রে ডেলিভালির কাজ করানোর ইচ্ছা থাকলেও অ্যানেস্থাসিয়া চিকিৎসক না থাকায় প্রচুর টাকা খরচ করে বেসরকারি ক্লিনিকে সেবা নিতে হচ্ছে।
ঝালকাঠি মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. মো. জোয়াহের আলী জানান, আধুনিক সুযোগ সুবিধা থাকার পরেও শুধুমাত্র অ্যানেস্থাসিয়া চিকিৎসকের অভাবে এখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের কাজ বন্ধ রয়েছে। তবে এখানে রোগী দেখা ও নরমাল ডেলিভারির কাজ নিয়মিতই হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ঝালকাঠি পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপ-পরিচালক মো. কামাল হোসেন সাংবাদিকদের জানান, চিকিৎসক না থাকায় অনেক দিন ধরে সিজারিয়ান অপারেশন বন্ধ রয়েছে। সদর হাসপালের অ্যানেস্থাসিয়া চিকিৎসকের সহায়তায় সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে। এ বিষয়ে সিভিল সার্জনের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে তিনি আশা প্রকাশ করেন দ্রুতই একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হতে পারে।