ইমন আল আহসান,কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।।
মাছের রাজা রুপালী ইলিশ আহরনে কুয়াকাটা সহ পটুয়াখালী উপকূলের জেলেদের মাঝে প্রাণসঞ্চার ফিরে এসেছে। দীর্ঘ ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে ঝাকে ঝাকে ট্রলার, বোর্ড গভীর সমুদ্রে মাছ শিকারে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন। সরকার ঘোষিত ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে ৪ নভেম্বর রাত ১২টায়। ট্রলার মেরামত, নতুন জাল তৈরী ও পুরানো জাল সেলাইসহ সমুদ্রে মাছ ধরার সকল প্রস্তুতি শেষ করে আজ থেকে ঝাকে ঝাকে ট্রলার গভীর সমুদ্রের উদ্দেশ্য যাত্রা করবে।
মা ইলিশের বাধাঁহীন প্রজনন এবং সকল প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত ২২দিনের সকল প্রকার মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মৎস্য অধিদপ্তর। আগামী ৪ নভেম্বর রাত ১২ টার পর পরই মৎস্য শিকারীরা নেমে পড়বেন রূপালী ইলিশের সন্ধানে। পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের হাজার হাজার জেলে তাদের সকল প্রকার প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছেন। আলীপুর, মহিপুর ও কুয়াকাটা অঞ্চলের জেলেরা তাদের ট্রলার ও জাল মেরামতের পাশাপাশি ইঞ্জিণের কাজ শেষে দলে দলে গভীর সমুদ্রে উদ্দেশ্য যাত্রা করছেন।
কুয়াকাটা আশার আলো পূর্ণবাসন মৎস্যজীবী জেলে সমবায় সমিতি লিঃ’র সভাপতি মোঃ নিজাম শেখ বলেন,
প্রতি বছর আশ্বিন মাসের পূর্ণিমার শেষের দিকে গভীর সমুদ্র থেকে পটুয়াখালী ও বরগুনা জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের নদীর মোহনায় এসে ডিম ছাড়ে মা ইলিশ। তাই ২০০৬ সাল থেকে মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিন অবরোধ দিয়ে আসছে সরকার। এসময় সকল ধরনের মাছ শিকার, পরিবহন, মজুদ, ক্রয়-বিক্রয় ও বিনিময় নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। এবার প্রশাসনের তৎপরতা বেশি থাকায় উপকূল জুড়ে মাছ ধরা পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। তবে এ অবরোধের সময় বাংলাদেশের জলসীমানায় ঢুকে মাছ শিকার করে নিয়ে যায় পার্শ্ববর্তী দেশের জেলেরা,এমনটাই দাবী উপকূলের জেলেদের।
উপজেলা ফিসিং ট্রলার মাঝি সমবায় সমিতি’র সাধারণ সম্পাদক মোঃ জাহাঙ্গীর মাঝি বলেন, দেশের জেলেরা অবরোধ পালন করলেও মাছ ধরছে ভারতের জেলেরা। তাই ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা সফল করতে দেশের জলসীমানা শতভাগ সুরক্ষায় কার্যকরী পদক্ষেপ নিবে সরকার এমনটাই আশা করছি।
মহিপুর মৎস্য আড়ৎ মালিক সমিতি’র সভাপতি মোঃ ফজলু গাজী বলেন, যেহেতু অবরোধের আগে মাছ ধরা পরেনি, তাই আমরা আশা করছি অবরোধ শেষে বড় সাইজের পর্যাপ্ত ইলিশের দেখা মিলবে।
কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ জহিরুন্নবী বলেন, উপকূলের জেলেরা নিজেরাই অনেকটা সচেতন হয়েছেন। আমরা এ পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ৭ জেলেকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় এবং ৫৮ হাজার মিটার জাল জব্দ করেছি। তিনি আরও বলেন, আমরা দিনরাত মা ইলিশ রক্ষায় কাজ করেছি। বৃষ্টির সাথে বর্জপাত হওয়ায় ঝাকে ঝাকে মা ইলিশ ডিম ছেড়েছে। আশা করছি আমরা এ বছর শতভাগ সফল হয়েছি।