বছর ঘুরে আবার এলো শীত। এ সময় দক্ষিণাঞ্চলের আকর্ষনীয় স্থানগুলোর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারেন আপনিও। আর নৌপথে আরামদায়ক ভ্রমণের এখনই উপযুক্ত সময়। কেননা রোদের তীব্রতা, নদীতে ঝড়-বাতাস, উত্তাল ঢেউ কোনটিই এখন নেই। তাছাড়া যাত্রাপথে ধুলা থেকে রেহাই, সহজ ও আরামদায়ক ভ্রমণের সাথে পাবেন খোলা প্রকৃতি আর নদীর চমৎকার হাওয়া। ঢাকা-বরিশাল নৌ-রুটে বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর এবং ডিজিটাল সুযোগ সুবিধাসহ বিলাসবহুল প্রাসাদসম একাধিক লঞ্চ রয়েছে। যার প্রতিটিতে অন্তত ৪-৫টি ভিআইপি কেবিন, ২৫-৩০টি এসি ক্যাবিন এবং বিলাসবহুল ভোজনালয় রয়েছে। ফলে এসব লঞ্চের ভ্রমন করলে মনে হবে যেন কোন রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করেছেন।
বরিশাল বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা যায়, বরিশাল-ঢাকা নৌ-রুটে সরাসরি চলাচলরত সুন্দরবন, সুরভী, কীর্তনখোলা, পারাবাত, অ্যাডভেঞ্জার ও গ্রিনলাইন সহ মোট ১০টি লঞ্চের আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হচ্ছে। নতুন ও আধুনিকায়ন করা এসব লঞ্চ গুলোতে জিপিএস, ইকো সাউন্ডার, ফগ লাইট, হাইড্রোলিক ও ইলেক্ট্রনিক হুইল, আধুনিক অগ্নিনির্বাপক যন্ত্র ব্যবহার করে থাকে। এছাড়াও রয়েছে সিসিইউ এবং লিফটসহ, বিনোদন স্পেস, বড় পর্দার টিভি, দেশ-বিদেশের চ্যানেল দেখতে ডিশ, অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেম, ইন্টারকম যোগাযোগের ব্যবস্থা, রেস্টুরেন্ট, উন্মুক্ত ওয়াইফাই সুবিধাসহ আধুনিক সব ব্যবস্থা ব্যবস্থাও রয়েছে। মনে হয় যেন রাজপ্রাসাদ।
বিলাসবহুল এসব লঞ্চের সৌন্দর্য দেখে যে কেউ বিস্মিত হবেন। কারণ দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্যের সঙ্গে আধুনিক সুযোগ-সুবিধার সব কিছুই রয়েছে লঞ্চগুলোতে। চোখ ধাঁধানো কাঠের কারুকাজ, নান্দনিক ডিজাইন ও আধুনিক সাজসজ্জা দেখলে মাথা ঘুরে যাবে। মনে হয় ভেতরে জলে ভেসে চলা রাজকীয় এক প্রাসাদ। যে সকল ভ্রমণপিপাসু নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দে দর্শনীয় স্থান ও সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাদের জন্য এখনই উপযুক্ত সময়। সেক্ষেত্রে আপনারা চাইলেই নৌপথের রাজপ্রাসাদে ভ্রমণ করতে পারেন। আধুনিকতার যুগে বিলাসবহুল ও প্রাসাদসম লঞ্চে ভ্রমণের জন্য আগে-ভাগেই যোগাযোগ করতে পারেন আপনিও। বরিশাল জেলা প্রশাসন ও বিআইডব্লিউটিএ’র ওয়েব সাইটে ঢুকলেই জানতে পারবেন লঞ্চে যোগাযোগের মাধ্যম।
বাংলার ভেনিস খ্যাত বরিশাল জেলার দর্শনীয় স্থানগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ লাকুটিয়া জমিদার বাড়ি, দুর্গাসাগর দিঘী, গুঠিয়া মসজিদ, বিবিচিনি শাহী মসজিদ, সাতলা শাপলা গ্রাম, বিবির পুকুর, ব্রজমোহন কলেজ, জীবনানন্দ দাশ এর বাড়ি, অক্সফোর্ড মিশন গীর্জা, বঙ্গবন্ধু উদ্যান (বেলস পার্ক), বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, শ্বেতপদ্ম পুকুর, মুকুন্দ দাসের কালিবাড়ি ও শের-ই-বাংলা জাদুঘর, মিয়াবাড়ি জামে মসজিদ, চরমোনাই কামিল মাদ্রাসা ইত্যাদি। এছাড়াও রয়েছে দৃষ্টিনন্দন ভোলার জ্যাকব টাওয়ার, পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ ইয়ার উদ্দিন খলিফার মাজার, ছারছীনা দরবার শরীফ, নেছারাবাদ এন.এস কামিল মাদ্রাসা, মাহিলাড়া মঠ, ঝালকাঠির শিব বাড়ি মন্দির ও ঠাকুর বাড়ি, গৈলা বিজয়গুপ্ত মনসা মন্দির, পাদ্রিশিবপুর গীর্জা, পটুয়াখালীর চর কুকরি মুকরি, লালমোহনে সজীব ওয়াজেদ জয় আইটি পার্ক, শেখ হাসিনা সেনা নিবাস, তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রা বন্দর, কুয়াকাটায় দেশের সর্ববৃহৎ সীমা বৌদ্ধ মন্দির, বৌদ্ধ বিহার, সাগরকন্যা কুয়াকাটা যেখানে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত সরাসরি উপভোগ করা যায়।