১৩ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নলছিটি পৌরসভা যেন দুর্নীতির আতুরঘর !

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক ॥ ঝালকাঠী জেলার নলছিটি পৌরসভার উপ- সহকারি প্রকৌশলী আবু সায়েম’র বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। একই স্থানে বসে দুটি পৌরসভার দায়িত্ব পালন করছেন এ কর্মকর্তা ।

সূত্রে জানাযায়, ২০১৪ সালে নলছিটি পৌরসভার সহকারি প্রকোশলী আব্দুল মান্নানের মৃত্যুর পর ঐ বছরের সেপ্টম্বর মাসে উপ- সহকারি প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করে আবু সায়েম । দায়িত্ব নেয়ার কয়েক মাস পর তিনি পৌরসভায় চালাতে থাকে একক আধিপত্য। অফিসের উপর থেকে ছোট কোন পদধারি কর্মকর্তাকে তোয়াক্কা করেন না । সরকারি প্রকল্পের কাজ ঠিকমতো শেষ না করে  টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে এ কর্মকর্তার বিরুদ্বে ।

২০১৫-১৬ অর্থবছরে নলছিটি পৌরসভার অনুকূলে পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয় থেকে জলবায়ু প্রকল্পে ড্রেন নির্মাণ কাজের জন্য ২ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। তখন প্রকল্প পরিচালকের দায়িত্ব নেন উপ- সহকারি প্রকৌশলী আবু সায়েম। শহরের ড্রেন নির্মাণ করার কথা থাকলেও তা শেষ না করেই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আকতার হোসেন, তালুকদার এন্ড সন্স’র প্রোপাইটর আমিনুল ইসলামের সাথে আতাঁত রেখে  টাকা আতœস্যাতের পায়তারা চালান আবু সায়েম। নলছিটির পূবালী ব্যাংক শাখার হিসাব নং-২৩৬ থেকে প্রকৌশলী আবু সায়েম চেকের মাধ্যমে নিজেই ১ কোটি টাকা উওোলন করে নেয়।

এছাড়া ২০১৬-১৭ অর্থবছরে বিঞ্জপ্তী নং-১ এ পৌরসভার উন্নয়নের জন্য স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে ৫০ লাখ টাকা বিশেষ বরাদ্দ আসে । কিন্তু উন্নয়নের নামে রাস্তার ফুটপাতের টাইচ্ পৌরসভার ছাদে ব্যবহার করা হয় । যা এখনো ছাদেই প্রমানিত। মাত্র আনুমানিক ৫ লাখ টাকা ব্যয় করে বাকি টাকা ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান খন্দকার ব্রাদার্স এবং তালুকদার এন্ড সন্স, আকতার হোসেনের সাথে যোগসাজেসে আবু সায়েম হাতিয়ে নেয়।

একই বছরে কাজের গ্রুপ নং-১৭ এর নলছিটি কলেজ রোডের রাস্তা নির্মাণে প্রাক্কালিত ব্যয় সাড়ে ৩ লাখ টাকা ধরা হয় । এ কাজ না করে অন্য প্রকল্প কাজের নামে সাড়ে ৩ লাখ টাকা পকেটে ভরে প্রকৌশলী আবু সায়েম।

জানা গেছে, নিয়ম নির্ধারিত ছিল এডিপি এর বিশেষ বরাদ্দের টাকা পৌরসভার পূর্বের মেয়ররা নলছিটি পৌরসভার সোনালী ব্যাংক শাখার পি-৭ এ মজুদ রাখতেন । কিন্তু এ নিয়ম না মেনে ঝালকাঠি জেলা যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য নলছিটি পৌরসভার কর আদায়কারি গোলাম মোস্তফার যোগসাজসে বরাদ্দের টাকা আতœস্যাতের লক্ষে বিভিন্ন ব্যাংকে জমা রাখেন আবু সায়েম।

জানা গেছে, চলতি বছরে নলছিটি পৌরসভায় হাট বাজার শাখায় গত ২১ মার্চ টেন্ডার বিঞ্জপ্তী নং-১ প্রকাশ করা হয়। সহকারি প্রকোশলী কর্মরত থাকা সত্বেও বে-আইনিভাবে উপ- সহকারি প্রকৌশলী আবু সায়েম টেন্ডার আহবান করেন, যা স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের পরিপত্র বহির্ভূত।

এ বিষয় সহকারি প্রকোশলী মোঃ মিজানুজ্জামান বলেন, আইনের ব্যতয় ঘটিয়ে কোন কাজ করা ঠিক নয়, যদি কোন সমস্যা হয় তার দায়ভার উপ- সহকারি প্রকৌশলী নিবেন ।

এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপ- সহকারি প্রকৌশলী আবু সায়েম নলছিটি পৌরসভার পাশাপাশি চাপাইনবাবগঞ্জের রহনপুর পৌরসভায় অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করে আসছেন । তার এ দায়িত্ব পালনের জন্য ভোগান্তিতে পরছে নলছিটিবাসী। অভিযোগ রয়েছে নলছিটি পৌরসভায় ঠিকমতো অফিস না করে উপ- সহকারি প্রকৌশলী আবু সায়েম ২ মাস পর এসে বেতন ঊওোলনসহ বিভিন্ন ঠিকাদারকে কাজ দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে চলে যায় । বেশিরভাগ নিজ জেলার চাপাইনবাব গঞ্জের রহনপুর পৌরসভায় সময় ব্যয় করেন । সরকারি কর্মকর্তা হয়ে দুটি প্রতিষ্ঠানে তার দায়িত্ব পালন করা নিয়ে সংশ্লিষ্টদের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে নানা প্রশ্নের ।

অপরদিকে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের এডিপির থোক বরাদ্দের টাকা এবং বাৎসরিক রাজাস্ব উন্নয় তহবিলের অর্থ কোন খাতে ব্যয় হয়েছে তা তদন্তের দাবী জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা । এদিকে উপ- সহকারি প্রকৌশলী আবু সায়েম’র নানা দুর্নীতি ও অনিয়মের ফিরিস্তি তুলে ধরে দুনীর্তি দমন কমিশন (দুদক) ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে এলাকাবাসী বলে জানিয়েছে সূত্রটি ।

এ অভিযোগের মুঠোফোনে জানতে চাওয়া হলে উপ- সহকারি প্রকৌশলী আবু সায়েম বলেন, । আমাদের এখানে ঝড় হচ্ছে, আপনার সাথে পরে কথা বলবো বলে ফোনটি কেটে দেন ।

সর্বশেষ