২৬শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

নিরাপদ, স্বাস্থ্যসম্মত ও রপ্তানিযোগ্য শুটকি উৎপাদনে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

জান্নাতীন নাঈম জীবন, পবিপ্রবি প্রতিনিধি:

বছরব্যাপী সহজ পুষ্টি প্রাপ্তির লক্ষে বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত শুটকি উৎপাদন করে দিন দিন এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

শনিবার ( ২ মার্চ ) হোটেল প্রিন্স ইন্টারন্যাশনাল , কুয়াকাটায় সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্টের অর্থায়নে মৎস্য অধিদপ্তরের অধীনে ” বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলে টুনা ও টুনা জাতীয় সামুদ্রিক মাছের রপ্তানিমুখী মূল্য সংযোজন ও শুটকি তৈরি করণ “শীর্ষক সমাপনী কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন-মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মোঃ আব্দুল কাইয়ূম। বিশেষ অতিথি ছিলেন- মৎস্য অধিদপ্তরের সাসটেইনেবল কোস্টাল এন্ড মেরিন ফিশারিজ প্রজেক্টের প্রকল্প পরিচালক মোঃ জিয়া হায়দার চৌধুরী এবং বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের উপপরিচালক নৃপেন্দ্র নাথ বিশ্বাস,পবিপ্রবি রিসার্স এবং ট্রেনিং সেন্টারের পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ ফজলুল হক। মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডীন অধ্যাপক ড. মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন। উক্ত কর্মশালার সভাপতিত্ব করেন পটুয়াখালী জেলার মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম।

কর্মশালায় মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন উপপ্রকল্পের প্রধান গবেষক পবিপ্রবি’র ফিশারিজ টেকনোলজির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মোঃ সাজেদুল হক । তিনি গ্রীনহাউজ ফিশ ড্রায়ার এবং ইউ সি ডেভিস চিমনী ড্রায়ারের মাধ্যমে রপ্তানিযোগ্য নিরাপদ ও স্বাস্থ্যসম্মত শুটকি উৎপাদন প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেন । টুনা ও টুনা জাতীয় মাছ শুটকিকরণের জন্য প্রধানত সমস্যা গুলো এবং এর সমাধান উল্লেখ করে দীর্ঘ ও স্বল্প মেয়াদী সংরক্ষণ করে ক্রেতাদের কাছে স্বল্প মূল্যে গুনগত মান-সম্পন্ন শুটকি প্রাপ্তির কথা বলেন। উক্ত উপপ্রকল্প থেকে শুটকি উদ্যোক্তাদের কে চিমনী, ফিশ ড্রায়ার, কোল্ড স্টোরেজ এবং অন্যান্য উপকরণ সামগ্রি প্রদান করা হয়।

বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান বৈদেশিক অর্থ উপার্জন হয় মাছের মাধ্যমে এবং দেশের অর্থনীতিতে একটা বড় ভূমিকা পালন করে আসছে, মৎস্যজাত পণ্য হিসেবে শুটকি বাংলাদেশে এবং বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশিদের জনপ্রিয় একটি খাবার। বঙ্গোপসাগর থেকে ৭ লক্ষ মেট্রিক টনের বেশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ আহরিত হয় যার মধ্যে এক চতুর্থাংশ মাছ উপকূলীয় অঞ্চলে প্রায় ১০ -১২ প্রজাতির মাছ বাণিজ্যিক ভাবে শুটকী তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। শুটকি মাছে উচ্চ মাত্রায় আমিষ, খনিজ উপাদান, উপকারী কোলেস্টেরল ও শক্তি রয়েছে । শুটকিতে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট আছে যা রোগ প্রতিরোধ করে, শুটকিতে বিদ্যমান খনিজ উপাদান দেহে রক্ত বাড়ায়, রক্তচাপ নিয়ন্ত্রন, নার্ভ ও মাংসপেশির সঠিক কার্যক্রম, হরমোন জনিত সমস্যা দূর, যা বাড়ন্ত শিশু, ব্যায়ামবিদ, খেলোয়াড় ও সাঁতারুদের জন্য খুবই উপকারি ভূমিকা পালন করে ।

কর্মশালায় উপস্থিত অতিথিরা উক্ত প্রকল্পের কাজের প্রশংসা করেন এবং প্রধান অতিথি মোঃ আব্দুল কাইয়ূম তার বক্তব্যে বলেন, ” আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ২০২৪ সালের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষণা করেন আগামী ৫ বছরে মৎস্য খাত থেকে রপ্তানির মাধ্যমে ১৫ হাজার কোটি টাকা আয় করবেন। এই লক্ষ অর্জনে গবেষণার মাধ্যমে কাজের পরিধি বৃদ্ধি করতে হবে। ”
সেই সাথে তিনি আরো বলেন, ” শুটকী উৎপাদনে পেস্টিসাইডের ব্যবহার সম্পূর্ণ আইনত নিষিদ্ধ তাই এ ব্যাপারে সবাইকে সচেতন হতে হবে। ”

উক্ত কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন পবিপ্রবি’র অ্যাকোয়াকালচার ডিপার্টমেন্টের সাবেক ডীন অধ্যাপক ড. মোঃ লোকমান আলী সহ অন্যান্য শিক্ষক বৃন্দ, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থীরা, বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন জেলার মৎস্য কর্মকর্তাগণ, বিএফআরআই এর মৎস্য গবেষণা উপকেন্দ্র খেপুপারা, পটুয়াখালীর কর্মকর্তা, বিএফডিসি আলীপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা , কলাপারা উপজেলার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা , শুটকি উৎপাদনকারী এবং ব্যবসায়ীরা । উক্ত প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে পবিপ্রবি’র ফিশারিজ টেকনোলজি বিভাগ এবং ডীপ সী ফিশার্স লিমিটেড , ঢাকা ।

সর্বশেষ