নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বহিরাগত ও বখাটেদের হাতে লাঞ্ছিত হওয়ার ঘটনায় রাগে ও ক্ষোভে বরিশাল বিএম কলেজের কবি জীবনানন্দ দাশ সহকারী হোস্টেল সুপারের পদ থেকে নিজেই পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন শিক্ষক শিশির চন্দ্র পাইক।
তবে বরিশাল বিএম কলেজের অধ্যক্ষ ড. তাজুল ইসলাম জানান, শিক্ষক শিশির চন্দ্র পাইক পদত্যাগপত্র জমা দিলেও আমরা তা গ্রহণ করিনি। আমি যতদূর জানি তিনি বিদেশে উচ্চ শিক্ষা অর্জন করতে যাবেন। যেকারণে ওই শিক্ষক নিজেই সহকারী হোস্টেল সুপারের পদ থেকে অব্যহতি চেয়ে আবেদন করেছেন। তবে পদত্যাগপত্রে পারিবারিক সমস্যার কারণ দেখানো হয়েছে কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে অধ্যক্ষ ড. তাজুল ইসলাম বলেন, পদত্যাগপত্রে তিনি পারিবারিক সমস্যার কারণ লিখতে পারেন। এতে কোনো সমস্যা নেই।
এদিকে অভিযোগ রয়েছে, গত ৬ নভেম্বর রাত আটটার দিকে বিএম কলেজের কবি জীবনানন্দ দাশ হোস্টেলে যান সুপার শিশির চন্দ্র পাইক। এসময় হোস্টেলের ২০৬ নম্বর রুমে বসে বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে মাদক সেবন করছিলো বখাটে যুবকরা। মাদক সেবনের দৃশ্য দেখতে পেয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে সুপার শিশির চন্দ্র পাইক বখাটেদের হোস্টেল থেকে চলে যেতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা সাঙ্গপাঙ্গরা হোস্টেল সুপারকে লাঞ্ছিত করে। এ সময় সুপার শিশির চন্দ্র পাইককে বাচাতে এগিয়ে আসে হোস্টেল শিক্ষার্থীরা। কিন্তু শিক্ষার্থীদের ওপর একপর্যায়ে হামলা চালায় তারা। তাদের হামলায় কলেজের মাস্টার্সের ছাত্র বিপ্লব (২৭), সঞ্জয় (২৫), সজল (২৬) নামের তিনজন শিক্ষার্থী আহত হয়। এদের মধ্যে বিপ্লব নামের এক শিক্ষার্থীকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি করা হয়।
হামলায় আহত শিক্ষার্থী বিপ্লব বলেন, আমাদের হোস্টেলে কতিপয় বহিরাগত ও বখাটে ছেলেপান এসে মাদক সেবন করে। গত ৬ নভেম্বর রাত আটটার দিকে কলেজের হোস্টেলে সুপার স্যার আসেন। এ সময় হোস্টেলের একটি ২০৬ নম্বর রুমে বসে বহিরাগতদের সঙ্গে নিয়ে মাদক সেবন করছিলো বখাটেরা। মাদক সেবনের দৃশ্য দেখতে পেয়ে তাত্ক্ষণিকভাবে সুপার স্যার এসবের প্রতিবাদ করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তারা স্যারকে লাঞ্ছিত করে। এসময় স্যারকে বাঁচাতে গিয়ে আমরাও হামলার শিকার হয়েছি।
বহিরাগতদের এমন কর্মকাণ্ডের কারণে স্যার ক্ষোভে ও ঘৃণায় নিজেই গত ৭ নভেম্বর কলেজ কতৃপক্ষের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। স্যারের পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার বিষয়টি জানাজানির কারণে কলেজ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
এদিকে ঘটনার পর থেকেই সমাজকল্যাণ বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ও সহকারী হোস্টেল সুপার শিশির চন্দ্র পাইকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বন্ধ রয়েছে। যেকারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।