২রা অক্টোবর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

পাথরঘাটায় জ্যান্ত মুরগি ও ছাগল কেটে রক্ত রোগীর গায়ে মেখে চিকিৎসা!

বরগুনা প্রতিনিধি ::: বরগুনা পাথরঘাটার কাঠালতলীতে জ্যান্ত মুরগির পা কেটে রক্ত বের করে সেই রক্ত রোগীর মুখ মন্ডল ও হাতে পায়ে মেখে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসা দেয়ার অভিযোগ উঠেছে মিনারা বেগমের বিরুদ্ধে। একই সাথে ছাগলের গলার নিচে ছুড়ি দিয়ে অল্প অংশ কেটে রক্ত বের করে সেই রক্ত দিয়ে চিকিৎসার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) জীবিত মুরগি ও ছাগলের রক্ত দিয়ে চিকিৎসা দেয়ার কথা সাংবাদিকের সাথে স্বীকার করেছেন অভিযুক্ত মিনারা বেগম। তিনি নিজেকে একই সাথে দুটি ধর্ম পালনের কথাও স্বীকার করেছেন। এ সকল কাজে তাকে সহযোগিতা করেন তার স্বামী খাদেম শামীম।

মিনার বেগম পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডে তার শ্বশুরের ইউসুফ কবিরাজের বাড়িতে বসেই এ চিকিৎসা দিয়ে আসছেন।

সরেজমিন গিয়ে মিনারার সাথে কথা বলে জানা যায়, শশুর শাশুড়ির সাথে বিরোধ হলে ১৬ বছর আগে চট্টগ্রামে গৃহকর্মীর কাজে যান মিনারা। সেখানে গিয়ে তান্ত্রিক কবিরাজ বাবা তাহেরীর আস্তানার সন্ধান পেয়ে তার ভক্ত হন তিনি। সেখান থেকে ৩ বছর সাধনা করে স্বপ্ন যোগে আধ্যাতিকতা লাভ করার দাবি তার। এরপর দেশের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটায় এসে ক্যান্সার, প্রালাইস্ট, জরায়ু ক্যান্সার, আলসার, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের মিলন, জাদু-টোনা থেকে মুক্তি সহ নানা গোপন রোগের চিকিৎসা শুরু করে তিনি। এ চিকিৎসায় পাথরঘাটার অনেক রাজনৈতিক ও প্রভাবশালীর ব্যাক্তিরা সুস্থ হয়েছে বলেও দাবি করেন।

তিনি আরো জানান, তার উপর দুটো জিন (আত্মা) ভর করে আছে। একটি ভালো অপরটি খারাপ। ভালো টিকে ফুল ফল গোলাপ জল দিয়ে পবিত্র রাখতে হয়। তার জন্য ঘরের কোণে একটি আস্তানা তৈরি করে রেখেছেন। অপরটির জন্য তাজা রক্ত খাবারের জন্য দিতে হয়। তাই বিভিন্ন রোগের উপর নির্ভর করে জীবিত মুরগি ও ছাগলের তাজা রক্ত প্রয়োজন হয়। তাই জীবিত মুরগির পা কেটে ও ছাগলের গলার নিচ থেকে কেটে ঝুলিয়ে রেখে রক্ত বের করে রোগীর গায়ে মেখে রক্ত গোসল করিয়ে চিকিৎসা দেয়। এর বিনিময়ে ১৬শত ৫১ টাকা থেকে ২৬শত ৫১ টাকা নিয়ে থাকেন।

স্থানীয়দের মধ্যে এই ব্যাপারটা জানাজানি হলে তারা অতিশীঘ্রই এই প্রতারনা ও কুসংস্কার পদ্ধতিতে চিকিৎসা বন্ধের দাবি জানান।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা সিদ্দিকিয়া ফাজিল মাদ্রাসার প্রভাষক ও কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা গোলাম কিবরিয়া জানান, এই কুসংস্কার ইসলাম সমর্থন করে না। এছাড়াও কোন প্রানীকে জবেহ না করে অঙ্গহানির মাধ্যমে রক্ত বের করে কষ্ট দেয়া একটি বর্বরতা। এদের আইনের আওতায় আনা উচিত।

পাথরঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শাহ আলম হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিষয়টি জানার পর খোঁজ খবর নিচ্ছি। তবে এ বিষয়ে এখনো কেউ কোন অভিযোগ করেননি।’’

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সর্বশেষ