১৫ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

পিরোজপুরে অপারেশনের পর কিশোরের মৃত্যু, দুই ভুয়া চিকিৎসক সহোদর আটক

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

পিরোজপুর: পিরোজপুরে ভুয়া চিকিৎসকের অপারেশনের পর তুষার শেখ (১৫) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ভুয়া চিকিৎসক সহোদর আলী হাসান লিয়ন (৩০) ও আলী ইমাম অন্তুকে (২২) আটক করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৪ জুন) রাতে এ ঘটনা ঘটে। মৃত কিশোর তুষার শেখ পৌর সভার ঝাটকাঠি এলাকার সোহাগ শেখের ছেলে।

এ ঘটনায় আটক ভুয়া দুই সহোদর চিকিৎসক আলী হাসান লিয়ন ও তার ছোট ভাই আলী ইমাম অন্তু পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কমিশনার মৃত ছালাম মধুর ছেলে। পৌর কমিশনার মধুর মৃত্যুর পর ওই ওয়ার্ডের কমিশনার হন মধুর স্ত্রী লায়লা পারভীন।

মৃত কিশোরের চাচা আমিনুল ইসলাম মিঠু জানান, বুধবার (২৪ জুন) সন্ধ্যায় তার ভাইপো তুষার শেখ (১৫) পৌরসভার খুমুরিয়া এলাকায় ঘুরতে যায়। এ সময় ইজিবাইক উল্টে তার ডান পা ভেঙে যায়। রাতে তাকে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসকরা তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। কিন্তু তাকে বহন করা অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার কবির হোসেন ওই রোগীর স্বজনদের শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের টাউন মেডিক্যালে নিয়ে যান। সেখান থেকে ওই রাতে শহরের উত্তর নামাজপুর এলাকার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসার কথা বলে পৌরসভার সাবেক কমিশনার আ. ছালাম মধুর বাড়িতে নিয়ে যান। ওই বাড়ির কাছারি ঘরে (বৈঠক খানা) পিরোজপুর জেলা হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট সচীন্দ্র নাথ, নাইট গার্ড মাজেদ হোসেন ও পৌর কমিশনার লায়লা পারভীনের (মৃত মধু কমিশনারের স্ত্রী) দুই ছেলে আলী হাসান লিয়ন ও তার ছোট ভাই আলী ইমাম অন্তু মিলে সেখানে বসে তাকে অপারেশন করেন। এতে তার অবস্থা গুরুতর হয়ে পড়লে রাত সোয়া ১২টার দিকে তাকে একটি অটোরিকশায় করে জেলা হাসপাতালে ভর্তির জন্য তারা নিয়ে যান। এ সময় ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জেলা হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) ডাক্তার নিজাম উদ্দিন বলেন, তাকে সন্ধ্যায় হাসপাতালে নিয়ে গেলে তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে রাত সোয়া ১২টার দিকে আবারও তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আমরা পরীক্ষা করে তাকে মৃত দেখে বিষয়টি পুলিশকে জানাই।

এ ঘটনার পর ওই কিশোরকে বহন করা অ্যাম্বুলেন্স ড্রাইভার কবির হোসেন, হাসপাতালের ফার্মাসিস্ট সচীন্দ্রনাথ, নাইট গার্ড মাজেদ হোসেনের মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

পুলিশের অফিসার ইনচার্জ নুরুল ইসলাম বাদল জানান, ভুয়া চিকিৎসায় ওই তরুণের মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি (ওসি) ওই রাতে হাসপাতালে যাই। রাতের পৌনে ১টার দিকে ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ভুয়া ডাক্তার দুই সহোদরকে আটক করি। মৃত কিশোরকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ জেলা হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

জানা যায়, জেলা হাসপাতালের কিছু কর্মচারীদের সহায়তায় একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া বিভিন্ন জটিল রোগের চিকিৎসাসহ অস্ত্রপাচার করে আসছে। আর এমনই একটি হাসপাতাল শহরের ভাইজোড়া এলাকার মধু কমিশনারের বাড়িতে স্থাপিত ওই ক্লিনিকটি।

সর্বশেষ