নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশাল নগরের বগুড়াপাড়া ব্যাপ্টিষ্ট চার্চের জমি অবৈধভাবে দখল করতে না পেড়ে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানাবিদ ষড়যন্ত্রে নেমেছে অজিত মজুমদার নামে এক ব্যক্তি।
এর প্রতিবাদ জানিয়ে নগরের কলেজ এভিনিউস্থ চার্চের ধর্মজাজক,ও স্থানীয় পাড়াপ্রতিবেশিরা অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে।শনিবার ১৬সেপ্টেম্বর বিকেল চারটায় এ ঘটনা ঘটে।স্থানীয় সুত্র ও ধর্মজাজক লিওনার্ড বিধান রায় জানান,
খ্রীষ্টান ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান বরিশাল বগুড়াপাড়া ব্যাপ্টিষ্ট চার্চ এর উত্তর পাশেই মেঃ অজিত মজুমদারের এর বাড়ী অবস্থিত। করোনাকালীন সময়ে তিনি বাড়ী নির্মান করার জন্য প্রস্তুতি নিলে চার্চের জায়গা সাময়িকভাবে ব্যবহারের মৌখিকভাবে অনুরোধ করেন। তার অনুরোধের প্রেক্ষিতে চার্চ কর্তৃপক্ষ একজন প্রতিবেশী হিসেবে তাকে চার্চের আওতাধীন জায়গায় সাময়িকভাবে নিমার্ন সামগ্রী সংরক্ষণ এবং লেবারদের কাজ করার অনুমতি প্রদান করেন।
ঘটনাক্রমে তিনি যখন বিল্ডিং নির্মান করার জন্য লে-আউট দেন তখন তিনি চার্চের সীমানা অতিক্রম করে ইচ্ছাকৃতভাবে নিজের জায়গা রেখে চার্চের জায়গায় নকশা বহিঃর্ভূতভাবে বারান্দা নির্মানের জন্য বেইজমেন্টসহ ২টি আরসিসি পিলার নির্মান করেন এবং চার্চের প্রায় ৫ফুট জায়গা অবৈধভাবে দখল করেন। করোনাকালীন সময়ে সরকারী বিধি-নিষেধ এবং আতংকের কারণে জনমানব শূন্য পরিবেশে চুপিসারে তড়িঘরি করে নির্মান কার্য সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে বিষয়টি চার্চের নজরে এলে চার্চ কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে সত্যতা যাচাইপূর্বক এর প্রমান পান যে, তিনি বিল্ডিং নির্মানসহ চার্চ কর্তৃক রোপিত প্রায় লক্ষাধিক টাকার মূল্যামান মেহগনি গাছ রাতের আঁধারে কেটে নিয়ে যান। বিষয়টি চার্চের সদস্যরা কোনভাবেই মেনে নিতে পারেনি এবং তাৎক্ষনিকভাবে এর তীব্র প্রতিবাদ জানানোসহ চার্চের ধর্ম যাজক মিঃ লিওনার্ড বিধান রায় বিগত ১১/০৪/২০২১ তারিখে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এর বরাবরে একটি অভিযোগ প্রদান করেন এবং স্থানীয় কাউন্সিলরসহ গন্যমান্য ব্যক্তিদের বিষয়টি অবহিতপূর্বক এর প্রতিকারের দাবী জানান। এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিগন বিষয়টি আমলে এনে মিঃ অজিত মজুমদারের কাজ বন্ধ রাখতে বলেন এবং উভয় পক্ষের আমিন দ্বারা জায়গা পরিমাপের পরামর্শ প্রদান করেন। পরবর্তীকালে মিঃ অজিত মজুমদারের পক্ষে ৩ জন সার্ভেয়ার এবং চার্চের পক্ষে ১ জন সার্ভেয়ার নিয়োগ প্রদান করে উভয়ের জায়গা পরিমাপ করা হয়।
পরিমাপের পর দেখা যায় যে, উল্টো মিঃ অজিত মজুমদার অন্যায়ভাবে চার্চের জমি বেশি দখল করে বহুতল ভবন করছেন। তখন মিঃ অজিত মজুমদার উপস্থিত সকলের নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করে তার অবৈধ নির্মান ভেঙ্গে নিয়ে যান। পরবর্তীকালে চার্চ কর্তৃপক্ষ দাপ্তরিক কাজ পরিচালনা ও নিরাপত্তার স্বার্থে এবং ষ্টোর কাজে ব্যবহারের জন্য নিজস্ব জায়গায় ২০ ফুট-১৫ ফুট একটি টিন-শেড ঘর নির্মান করে। কিন্তু মিঃ অজিত মজুমদার চার্চের জায়গা দখল করতে না পেরে তিনি চার্চের সম্পাদক মিঃ রবীন বল্লভের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন এবং বিভিন্ন সময়ে তাকে হুমকী প্রদানসহ হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে গনমাধ্যমে আপত্তিকর বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও তিনি এবছর চার্চের নামে একটি উকিল নোটিশ প্রদান করাসহ মিথ্যা মামলা দায়ের করেন।
এখানে উল্লেখ্য যে, মিঃ রবীন বল্লভ চার্চের সাধারণ সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত সম্পাদক। এখানে তিনি চার্চের স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি রক্ষা করার জন্য নৈতিক দায়িত্ব হিসেবে কর্তব্য পালন করেছেন। এটা তার ব্যক্তিগত কোন বিষয় নয়। দায়িত্ব পালনকালে মিঃ রবীন বল্লভ ঐ ব্যাক্তির রোষানলে পতিত হন এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ফেইস-বুকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে তার বিরুদ্ধে তথ্য প্রকাশ করে হয়রানী করে আসছেন।
চার্চ একটি ধর্মীয় এবং মানবিক প্রতিষ্ঠান।তাই মানবিক দিক বিবেচনাপূর্বক চার্চ অদ্যাবধি তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। মিঃ অজিত মজুমদার ব্যক্তিগত আক্রোশ এবং ক্ষোভের কারণে এসকল নোংরা কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছেন যা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তাই এলাকার খ্রীষ্ট স্প্রদায় এর তীব্র নিন্দা এবং প্রতিবাদসহ যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।