নিজস্ব প্রতিবেদক ::: বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে (ববি) গত ৫ আগস্ট ঘটে যাওয়া হামলা ও সংঘর্ষের ঘটনার পর মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেছে সাধারণ শিক্ষার্থীরা। একইসঙ্গে মিথ্যা মামলার দায়েরকারী মুইদুর রহমান বাকিকে গ্রেপ্তারের দাবিও জানিয়েছেন তারা।
রোববার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে সাধারণ শিক্ষার্থীরা মানবন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করেন। এ সময় বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবিদ হাসান, এ কে আরাফাত, ছাব্বির হোসেন, রক্তিম হাসান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ২০১৭ সালে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় বহিষ্কৃত মুইদুর রহমান বাকি সম্প্রতি ৪২ জন সাধারণ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা করেন। আমরা শোধান শিক্ষার্থীরা এ মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলার তীব্র নিন্দা জানাই এবং অবিলম্বে মামলা প্রত্যাহারের দাবী জানাই।
শিক্ষার্থীরা বলেন, গত ৫ আগস্ট রাতে মুইদুর রহমান বাকি ও বহিরাগত তার সঙ্গীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু ও শেরে বাংলা হলে সশস্ত্র হামলা চালায়। এ হামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ থেকে ১০ জন শিক্ষার্থী গুরুতর জখম হয়। এ ঘটনায় বন্দর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলায় মুইদুর রহমান বাকি আসামি হলেও তাকে পুলিশ গ্রেপ্তার না করে, তার দায়ের করা মিথ্যা মামলায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের হয়রানি করা হচ্ছে।
মুইদুর রহমান বাকিকে ‘কুখ্যাত ইয়াবা ব্যবসায়ী’ দাবি করে শিক্ষার্থীরা বলেন, আমরা আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মুইদুর রহমান বাকিকে গ্রেপ্তারের দাবি জানাই। সেইসাথে তার দায়ের করা মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা অনতিবিলম্বে প্রত্যাহার করারও দাবি জানাই।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৫ নভেম্বর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের চেষ্টার অভিযোগে নগরের আরশেদ আলী কনস্ট্রাক্টর গলির ভাড়া বাসায় অভিযান চালিয়ে মুইদুর রহমান বাকিসহ ৬ জনকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। এ সময় তাদের কাছ থেকে ৫টি এন্টি জ্যামার ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, ৫টি ইলেক্ট্রো ম্যাগনেটিক ব্লুটুথ ইনডাকশন (ইয়ারফোন), প্রশ্নপত্র ফাঁসের কাজে ব্যবহৃত ১১টি মোবাইল সেট (সিমসহ), অতিরিক্ত দুটি সিমকার্ড, একটি হেডফোন এবং তিনটি পেন ড্রাইভ উদ্ধার করা হয়।
সেসময় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর চালিতাবুনিয়া গ্রামের গাজী হাফিজুর রহমানের ছেলে মুইদুর রহমান বাকি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র ছিলেন। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়। যদিও পরবর্তীতে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনার সুযোগ দেওয়া হয়। সুযোগ পেয়েও পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়াসহ নিয়ম না মানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তার আবার ভর্তির সুযোগ নেই জানিয়ে দিলে বাকির ছাত্রত্ব বাতিল হয়ে যায়। তারপর থেকে দীর্ঘবছর কথিত নেতা সেজে বাকি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিজের অবস্থান জাহির করে আসছিলেন তিনি।
গত ৫ আগস্ট রাতের পর থেকে তাকে ক্যাম্পাসে দেখা যাচ্ছিল না। হুট করেই তিনি আদালতে ৪২ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত তাহমিদ মঞ্জু, শরিফুল ইসলাম, আল সামাদ শান্ত, আবিদ হাসান, রক্তিম হোসেনসহ অনেককেই আসামি করা হয়েছে।