বরগুনা প্রতিনিধি :: বরগুনায় জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ৭৫ বছরের বৃদ্ধ প্রাক্তন স্কুল শিক্ষক ইউসুফ আলী মাস্টার ও তার পরিবারের ওপর হামলা চালিয়েছে সংঘবদ্ধ একটি সন্ত্রাসীচক্র। মঙ্গলবার সকালে সদর উপজেলার ৯নম্বর এমবালিয়াতলী ইউনিয়নের ৪নস্বর ওযার্ডের আমতলা-মাইঠা গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় একাধিক এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, বুধবার সকালে একই ইউনিয়নের ছোনবুনিয়া গ্রামের মনির মোল্লা (৪৫) ও তার ভাই ছগির মোল্লার নেতৃত্বে ১১টি মোটরসাইকেল যোগে ইউসুফ আলী মাস্টারের বাড়িতে এসে ২০ থেকে ২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল এ ঘটনা ঘটায়। এ সময় ইউসুফ আলী মাস্টারকে ঘর থেকে নামিয়ে লোহার রড ও লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে সন্ত্রাসীরা। পিতাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে ইউসুফ আলী মাস্টারের ছেলে হায়াত মাহমুদ মিল্টনকে (৩৮) কুপিয়ে জখম করে সন্ত্রাসীরা। একই সময় ইউসুফ আলী মাস্টারের স্ত্রী রেনু বেগমকেও (৬০) পিটিয়ে আহত করে তারা।
আহত ইউসুফ আলী মাস্টার ও তার ছেলে হায়াত মাহমুদ মিল্টন বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ইউসুফ আলী মাস্টার নলী মাইঠা মাধ্যমিক বিদ্যলয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে দীর্ঘদিন শিক্ষকতা করেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী অ্যাড. নাজমুল ইসলাম নাসির জানান, স্থানীয়ভাবে সর্বজন শ্রদ্ধেয় প্রবীণ শিক্ষক ইউসুফ আলী মাস্টারের ওপর অতর্কিত এ হামলায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সন্ত্রাসীদের ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়। এ সময় সন্ত্রাসী দলের আলম মোল্লা এবং ইসমাইল নামের দুজনকে আটক করে গণধোলাই দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে বাবুগঞ্জ পলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রনজিৎ কুমার সরকার আটককৃতদের হাসপাতালে ভর্তির জন্য নিয়ে যান। এরপর সেখান থেকে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসী আলম মোল্লা ও ইসমাইল।
সন্ত্রাসী আলম মোল্লা এবং ইসমাইলকে কেন গ্রেপ্তার করা হয়নি এবং কিভাবে পালিয়ে গেল সে প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাবুগঞ্জ পলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ রনজিৎ কুমার সরকার বলেন, যেহেতু তখনও পর্যন্ত কোন মামলা হয়নি। আর উভয়পক্ষের কিছু লোকজন আহত ছিলো তাই প্রাথমিকভাবে তাদের চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিলো। সেখান থেকে কখন কিভাবে আলম মোল্লা এবং ইসমাইল পালিয়ে গেছে তা তিনি জানেন না বলে জানান।
এ বিষয়ে বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. তরিকুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় আহত ইউসুফ আলী মাস্টারের মেয়ে সেলিনা আক্তার বাদী হয়ে বরগুনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তার করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থাগ্রহনের জন্য তৎপর রয়েছে বরগুনা থানার পুলিশ।