বরগুনা প্রতিনিধি :: বরগুনার বেতাগীতে করোনার প্রাদুর্ভাবের মধ্যেই ডায়রিয়ার চরম প্রকোপে রোগীর সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাওয়ায় চিকিৎসাসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে বেতাগী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। একদিনের ব্যবধানে হাসপাতালে ভর্তি ৫২ জন রোগীর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের।
রোগের প্রকোপ নিয়ন্ত্রণে না আসায় ওয়ার্ডে জায়গা সংকুলান হচ্ছে না। তাই চাপ সামলাতে হাসপাতালের বারান্দায় বাধ্য হয়ে আক্রান্ত রোগীরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। ওয়ার্ডের বাইরে বৈদ্যুতিক পাখা না থাকায় গরমে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে চিকিৎসাধীন রোগীরা।
হাসপাতালে পর্যাপ্ত আইভি স্যালাইন নেই। ফলে তা বাইরের দোকান থেকে অতিরিক্ত দামে কিনতে হচ্ছে রোগীর স্বজনদের। শনিবার দুপুরে হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ড ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন ৬৮ জন (শনিবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত)। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫২ জন রোগী। এছাড়াও শনিবার ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কাইয়ালঘাটা গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম (৭০) নামের এক বৃদ্ধ ও পৌরসভার চন্দ্র ভানু নামের এক বৃদ্ধা মারা যান। ছাড়পত্র পেয়েছেন ১৬ জন রোগী।
চলতি মাসে ৪৩০ রোগী ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় হাসপাতালে জায়গা সংকুলান হচ্ছে না। তাই রোগীদের ওয়ার্ডের বারান্দাসহ সামনের খালি জায়গায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে প্রচণ্ড গরমে কোনো ধরনের বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা না করায় রোগীরা পড়েছেন বিপাকে।
বেতাগী হাসপাতালের রোগী ও তাদের স্বজনরা জানান, রোগী ভর্তির সময় মাত্র একটি স্যালাইন সরকারিভাবে দেওয়া হয়েছে। বাকিগুলো বাজার থেকে কিনতে হয়েছে। এছাড়া ওষুধও ঠিকমতো দেওয়া হয় না এবং ডাক্তারও ঠিকভাবে দেখেন না বলে অভিযোগ তাদের।
বারান্দায় চিকিৎসা নেওয়া এক রোগীর স্বজন সাইফুল জানান, শুক্রবার ভর্তি হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে একটি স্যালাইন দেওয়া হয়েছে। পরে রোগীর আরেকটি স্যালাইনের দরকার হলে তা দোকান থেকে কিনেছেন। এছাড়া বারান্দায় বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা না থাকায় প্রচণ্ড গরমে খুব কষ্টে আছেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. রবীন্দ্রনাথ সরকার জানান, হাসপাতালে আইভি স্যালাইনের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় আনুপাতিক হারে রোগীদের স্যালাইন সরবরাহ করা হচ্ছে। রোগীর সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় বারান্দায় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। লকডাউন চলমান থাকায় বারান্দায় বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। রোগীদের সেবাপ্রদানে আমরা সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।