বরগুনা প্রতিনিধি ::: বিয়ের দেনমোহরের টাকা না দিয়ে দুই সন্তানসহ স্ত্রীকে তালাক দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়ার মামলায় বাংলাদেশ বেতারের উপ-আঞ্চলিক পরিচালক মুহাম্মাদ মনিরুল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার বরগুনার সিনিয়র সহকারী জজ ও পারিবারিক আদালতের বিচারক এএসএম তারিক শামস এ আদেশ দিয়েছেন।
মুহাম্মাদ মনিরুল হাসান বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার ভরপাশা গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে। তিনি রাজশাহী বাংলাদেশ বেতারে কর্মরত আছেন।
জানা যায়, ২০১২ সালের ২৩ ডিসেম্বর পারিবারিকভাবে রেজিস্ট্রি কাবিনে বরগুনার ব্যবসায়ী মো. বাবুল মিয়ার মেয়ে সানজিদা আরেফিন লিনথার সঙ্গে মুহাম্মাদ মনিরুল হাসানের বিয়ে হয়। ওই দম্পতির তানিশা মেহেজাবিন সাফা ও তাহিরা হাসান সুজনা নামের দুটি কন্যাসন্তান রয়েছে। মনিরুল হাসান তার স্ত্রীর কাছে যৌতুক দাবি করলে দাম্পত্য জীবনের সম্পর্কে চির ধরে। স্ত্রী লিনথা বাদী হয়ে ২০১৮ সালের ১৯ মার্চ বাকেরগঞ্জ থানায় মনিরুল হাসানের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতনের মামলা করেন। মনিরুল হাসান লিনথাকে তালাক দিয়ে আবার ২০১৯ সালের ২২ জুন ৩০ লাখ টাকা দেনমোহরে বিয়ে করেন। মনিরুল হাসান তার স্ত্রী লিনথাকে আবারো তালাক দেন। লিনথা বাদী হয়ে বরগুনার পারিবারিক আদালতে ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি মনিরুল হাসানের বিরুদ্ধে দেনমোহরের মামলা করেন। সেই মামলায় সিনিয়র সহকারী জজ এ বছর ২৭ মার্চ ৩৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮৩৩ টাকার রায় প্রদান করেন।
বিবাদী মনিরুল হাসান ওই রায়ের বিরুদ্ধে বরগুনার জেলা জজ আদালতে আপিল করেন। এ বছর ১৮ অক্টোবর উভয়পক্ষের আপিল শুনানি শেষে জেলা জজ মো. রফিকুল ইসলাম সিনিয়র সহকারী জজ আদালতের রায় বহাল রেখে মনিরুল হাসানের আপিল খারিজ করে দেন।
বাদী সানজিদা আরেফিন লিনথা বলেন, আমি বরগুনার সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে সোমবার ডিক্রি জারির মামলা করেছি। সেই মামলায় মনিরুল হাসানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, আমার ১০ ও ৭ বছরের দুটি কন্যাসন্তান রেখে আমাকে মনিরুল হাসান দুইবার তালাক দেন। সন্তান দুটির কোনো খোঁজ নেন না। অথচ তিনি বিসিএস ক্যাডার সার্ভিসে চাকরি করেন। মনিরুল পরনারীতে আসক্ত হয়ে আমার সংসার শেষ করে দিয়েছেন। ২০২১ সাল হতে আমার সন্তানদের পড়াশোনা ও আমার ভরণপোষণ দিচ্ছেন আমার বাবা।
মনিরুল হাসানের আইনজীবী মো. মাসুদ খান বলেন, জেলা জজের রায়ের বিরুদ্ধে আমার মক্কেল মনিরুল হাসান হাইকোর্টে রিভিশন করবেন।
মুহাম্মদ মনিরুল হাসানের ফোন বন্ধ থাকায় তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।