বরিশাল বাণী:
বরিশাল শহরে ফ্লাট নির্মান করার কথা বলে এভারেস্ট ডেভলপার’র সদস্য মজিবর রহমান’র সাথে জমির বায়না রেজিস্ট্রি (চুক্তি পত্র) সম্পূন্ন করার পর তার সাথে টাকা নিয়ে নয় ছয় করছে বলে বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, বানারীপাড়ার রায়ের হাট এলাকার মৃত: হাফেজ মাও: আঃরব এর ছেলে মো: আবুল কাশেম ও মাসুদুর রহমাহন নামে এক ব্যক্তির এভারেস্ট ডেভলপার’র সদস্য হওয়ার জন্য ৩ লক্ষ ৫ হাজার টাকা দিয়েছে অভিযুক্তদের কাছে। অভিযোগ সূত্রে আরো জানা গেছে, বরিশাল শহরে ফ্লাট নির্মান করার উদ্দেশ্যে বিসিসি কর্তৃক ‘‘এভারেস্ট ডেভলপার’’ নামে একটি লাইসেন্স সংগ্রহ করেন বেশ কয়েকজন ব্যক্তি মিলে। যার নম্বর-৭৪১ ইস্যুর তারিখ ০৫/১০/২০১৭ সালে। এরই প্রেক্ষিতে বিগত ০৮/০৩/২০১৮ সালে ‘‘এভারেস্ট ডেভলপার’’ নামে বিশ লক্ষ টাকার একটি বায়না চুক্তি পত্র দলিল রেজিস্ট্রি সম্পূর্ন করা হয়। যার তফসিল মৌজা বগুড়া আলেকান্দা। বিএস হাল খতিয়ান নম্বর ৫২০৪/১ দাগ নম্বর ১৩০০৮, জমির পরিমান সাড়ে ৭ শতাংশ। স্থান কালুশাহ সড়ক সাবেক মেয়র কামাল হোসেন এর বাসার পিছনে। উক্ত এভারেস্ট ডেভলপারকৃত জমির বায়না বাবদ লক্ষীপুর স্থানীয় সরকার পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়’র অবসর প্রাপ্ত সহকারী পরিচালক (পিডিবিএফ) ও নগরীর খাদেম হোসেন সড়ক সংলগ্ন এলাকার আমজেদ আলী হাওলাদার এর ছেলে মজিবর রহমান হাওলাদার অভিযুক্ত বানারীপাড়ার রায়ের হাট এলাকার বাসিন্দা আবুল কাশেমকে টাকা দেন। বর্তমানে কাশেম বরিশাল নগরীর ১৯ নং ওয়ার্ড নতুন বাজার টেম্পু স্টান্ড সংলগ্ন ত্রিকন্না ভবনের ৪র্থ তলায় ভাড়াটিয়া হিবেসে প্রায় ৩ মাস বসবাস করছে বলে ভুক্তভোগী মজিবর জানিয়েছে। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতারনা ও ছল চাতুরীর আশ্রয় নিয়ে উল্লেখিত আবুল কাশেম আমাকে ছাড়াও আরও কয়েকজন সদস্যকে বাদ দিয়ে বাহিরের কয়েকজন ব্যক্তিকে নিয়ে তড়িগড়ি করে এভারেস্ট ডেভলপার নামের বায়নাকৃত তফসিলের জমি আমি সহ কয়েক জন সদস্যদেরকে না জানিয়ে বাহিরের লোকের কাছে জমি সাব-কবলা মূলে রেজিস্ট্রি করে দেন। পরে আমি মজিবর রহমানসহ এভারেস্ট ডেভলপার অন্য সদসদ্যরা বিষয়টি জানতে পারি যে বেশ কিছু সদস্যদের বাদ দিয়ে সাব-কবলা দলিল করে রেজিস্ট্রি করে নেয় আবুল কাশেম গং। পরে ভুক্তভোগীরা স্থানীয় ১৪ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করে তার কাছে একটি অভিযোগ দেন। পরে বিষয়টি নিয়ে কাশেমের সাথে উক্ত কাউন্সিল কথা বলার পরে এভারেস্ট ডেভলপার’র কিছু সদস্যদের টাকা পরিশোধ করেন আবুল কাশেম। বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগীরা বলেন, যারা কাশেমকে চাপ সৃষ্টি করেছে তাদের টাকা ফেরত দিয়েছে। তার পর থেকেই ওই এলাকা থেকে উধাত্ত হয়ে গাঢাকা দিয়েছে। এদিকে ভুক্তভোগী মজিবর জানান, এভারেস্ট ডেভলপার’র আমি মজিবর রহমান এবং আমার স্ত্রী রেজবী সুলতান ওই এভারেস্টের সদস্য। অভিযুক্ত আবুল কাসেমকে প্রায় ৩ বছর আগে এভারেস্টের সদস্য বাবদ আমি সাড়ে ৩ লক্ষ ৫ হাজার টাকা দিয়েছি। তার পর থেকেই আবুল কাসেম এভারেস্ট ডেভলপারের জমি আমাকে না জানিয়ে নিজেরাই রেজিস্ট্রি করে নেন। পরে আমার অংশের টাকা ফেরত চাইলের কাশেম আজ নয় কাল দিবো বলে র্দীঘ দিন যাৎবত ঘুরাচ্ছে। পরে বিষয়টি নিয়ে আমি বরিশাল কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করি। বিষয়টি বর্তমানে তদন্ত করছে কোতয়ালী থানার এ এস আই আজমল। একাধিক সূত্রে জানা গেছে, আবুল কাশেমের কাছে আরো অনেক ব্যক্তি টাকা পাবে। কাশেম বর্তমানে নগরীর কালিবাড়ী রোর্ড এলাকার ধর্মরক্ষীন মন্দির এর বিপরীতে কাটুনের ব্যবসা করছেন। অভিযোগের বিষয়ে ২নং অভিযুক্ত মাসুদুর রহমান বলেন, আমি শুনেছি মজিবর রহমান ভাই আবুল কাশেমকে টাকা দিয়েছে। তবে কত টাকা দিয়েছে তা আমি জানিনা। আমি এভারেস্ট ডেভলপার এক জন অশিংদার। তিনি আরো বলেন, মজিবর রহমান যখন টাকা দিয়েছে তখন আমি ছিলাম না। এবং ‘‘এভারেস্ট ডেভলপার’’ পক্ষে যখন রেজিস্টি করে দেওয়ার সময়ও আমি উপস্থিত ছিলাম না। তার পরেও মজিবর সাহেব কি ভাবে আমার বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। আমাকে হয়রানীকরার জন্য এই অভিযোগ করা হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে ১ নং অভিযুক্ত আবুল কাশেমের ব্যবহারিত মুঠো ফোন ০১৯৭৮১০১৯৭২ ফোন দিয়ে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে, তিনি বলেন মজিবর রহমান টাকা দিয়েছে সত্য। তবে জমির বায়না রেজিস্ট্রি’র নির্ধারিত সময় মত তিনি টাকা না দিতে পারায় মজিবরের অংশ বাতিল হয়েছে বলে এড়িয়ে যাচ্ছে। থানায় অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল কাশেম বলেন, হ্যা থানায় আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে সত্য। আমি আইনগত ভাবে অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে মোকাবেলা করবো। আমি এখন ব্যস্ত পরে বিষয়টি নিয়ে আপনার সাথে কথা হবে। অভিযোগের এবিষয়টি নিয়ে কোতয়ালী মডেল থানার এএস আই (অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা) আজমল এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এভারেস্ট ডেভলপার নামে থানায় একটি অভিযোগ হয়েছে তা সত্য। তবে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।
