নিজস্ব প্রতিবেদক ::: এলজিইডি বরিশাল সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তাকে জরুরী ভিত্তিতে অপসারণের জন্য মানববন্ধন করেছে ঠিকাদাররা এবং এলজিইডি’র বরিশাল অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী বরাবর স্বারকলিপি প্রদান করেছেন। অভিযোগের বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ঠিকাদাররা অবৈধ সুবিধা নিতে ব্যর্থ হয়ে এই অভিযোগ তুলেছে।
রবিবার (১ অক্টোবর) দুপুরে নগরীর বান্দ রোডে এলজিইডি ভবনের সামনে এই মানববন্ধন ও বিক্ষোভ হয়।
মানববন্ধন পরিচালনা করেন- মোহাম্মদ নাসির চৌধুরী, মোহাম্মদ তারিক আজিজ সজীব, হাসনাইন চৌধুরী, মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আকন, মজিবুর রহমান, সঞ্জয় গুহ, শাহীন হোসেন, বিপ্লব সেরনিয়াবাত, মোঃ কালু, হাসান, আল আমিন, মনিরুজ্জামান অপু, ফারুক খান।
ঠিকাদাররা বলেন, নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানের ঘুষ বাণিজ্য, নিপিড়ন ও হয়রানির কারণে আমরা দিশেহারা হয়ে পরেছি। প্রতিটি বিদ্যালয় নির্মাণ শেষে ফাইনাল বিলের প্রত্যয়ণের জন্য তাকে সোয়া লাখ টাকা থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয়। এ কারণে বিদ্যালয়গুলো নির্মাণ শেষে হস্তান্তর করতে সময় ক্ষেপণ হওয়ায় পাঠদান ব্যাহত হয়। এছাড়া আমাদের মত সাধারণ ঠিকাদাররা মারাত্মক লোকসানের সম্মুখিন হচ্ছি। তাই মিজানুর রহমানকে তাৎক্ষণিক অপসারণ দাবি করছি।
ঠিকাদারদের অভিযোগ- শেখ মিজানুর রহমান বরিশালে যোগদানের পর থেকে উন্নয়ন কাজের প্রাক্কলন প্রণয়নে, প্রকল্প বাস্তবায়নে, এডিপির প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়নে বিভিন্ন অজুহাতে সময়ক্ষেপণ, স্বেচ্ছাচারিতা, নথি স্বাক্ষরের দীর্ঘসূত্রতা, হয়রানী ও অসদাচরণ করে আসছেন। ঘুষের টাকা না দেওয়া পর্যন্ত কোন বিলপত্রে/কাগজে স্বাক্ষর করেন না। কোন কাজে বার বার ফোন দিলে তিনি ঠিকাদারদের ফোন রিসিভ করেন না। তার এমন অসদাচরণ, দুর্নীতি, ঘুষ ছাড়া নথি ছাড়, টাকার বিনিময়ে স্ক্রীম পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং স্বেচ্ছাচারিতার বিষয়ে একাধিকার মৌখিক অভিযোগ করেও মেলেনি সুরাহা, উল্টো বিপদে পড়তে হয়েছে একাধিক ঠিকাদারকে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যে কোন বিষয়ে টাকা ছাড়া প্রত্যয়ন দেন না প্রকৌশলী। তাকে টাকা দিলে রাতেও তিনি স্বাক্ষর করবেন টাকা না দিলে সপ্তাহ দশদিন ঘুরাবেন। আমার ৩৫ বছরের শিক্ষকতা জীবনে এ ধরণের খারাপ অফিসার কখনো দেখিনি। তিনি প্রাইমারী স্কুলের রিপেয়ারিং কাজে ইস্টিমিট ও প্রত্যয়নপত্র দিতে টাকা দাবি করেন।
এলজিইডি বরিশাল সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী শেখ মিজানুর রহমান বলেন, আমি ঠিকাদারদের কাছ থেকে শতভাগ কাজ বুঝে নেই, যা আমার ঊর্ধ্বতনরা জানেন। ঠিকাদাররা আমার কাছ থেকে অবৈধ সুবিধা নিতে পারেন না বলে এমন অভিযোগ তুলেছেন। ঠিকাদারদের অবৈধ সুবিধা দিলে আমার বিরুদ্ধে কখনোই মানববন্ধন হতো না।’