শামীম আহমেদ :: স্বামীর পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় দুই সন্তানের জননী ও তিন মাসের অন্তঃসত্তা গৃহবধূ ইসরাত জাহান ইমাকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় শ্বশুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার দুপুরে জেলার হিজলা থানার ওসি অসীম কুমার সিকদার জানান, উপজেলার খুন্না গবিন্দপুর ট্যাকের বাজার এলাকা থেকে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে নিহত গৃহবধূর শ্বশুর দেলোয়ার বেপারীকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতকে শুক্রবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।
ওসি আরও জানান, আত্মগোপনে থাকা মামলার প্রধান আসামি নিহতের ঘাতক স্বামী মহসিন রেজা, ভাসুর মোস্তফা বেপারী ও পরকীয়া প্রেমিকা শাহনাজ বেগমকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান চলছে।
সূত্রমতে, হিজলা উপজেলার বড়জালিয়া ইউনিয়নের খুন্না গবিন্দপুর ট্যাকের বাজারের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী স্বামী মহসিন রেজার পরকীয়ায় বাঁধা দেয়ায় গত ১১ জুন বিকেলে স্ত্রী ইসরাত জাহান ইমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। স্থানীয় মুমূর্ষ অবস্থায় গৃহবধূকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা হাসপাতালে ও পরে বরিশাল শেবাচিম হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে গৃহবধূকে রাজধানীর শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ জুন ইসরাত জাহান ইমা মারা যায়।
মৃত্যুর পর অগ্নিসংযোগের বিষয়টি গ্যাসের চুলায় দুর্ঘটনা বলে প্রচার করে ময়নাতদন্ত ছাড়াই হাসপাতাল থেকে লাশ হিজলায় এনে তড়িঘড়ি করে দাফন করা হয়। এরইমধ্যে মৃত্যুর পূর্বে ইমার স্বীকারক্তিমূলক একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে যায়। ওই ভিডিওতে ইমা বলে গেছেন, তাকে হাত ও পা বেঁধে মারধর করে গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে তার স্বামী। এরপর গত ২১ জুন হিজলা থানায় নিহত ইমার বাবা সফিকুল ইসলাম মামুন বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
হিজলা থানার ওসি বলেন, নিহতের মৃতদেহ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়নাতদন্তে জন্য একজন নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট চেয়ে জেলা প্রশাসক বরাবর আবেদন করা হয়েছে। ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ পেলেই মৃতদেহ উদ্ধার করা হবে।