রিপন রানা :: বরিশাল নগরীর চরকাউয়া খেয়াঘাট এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে দোকানের ভিতর ইঞ্জিন চালিত ট্যাংক ও পেট্রোল পাম্প বসিয়ে অবৈধ পন্থায় বোতল, ড্রাম ও কন্টিনারে তেল বিক্রি করা হচ্ছিল। সেই সংবাদ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশের পর কোতয়ালী মডেল থানার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ফজলুল করিমের তৎপরতায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
আজ বুধবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে দোকানটি বন্ধ করে হয়।
জানা গেছে- নগরীর ১০ নং ওয়ার্ডস্থ চরকাউয়া খেয়াঘাট এলাকার বিআইডব্লিউটিএ’র স্টল ভাড়া নিয়ে মিশু এন্টারপ্রাইজ নামে একটি দোকানের ভিতর ইঞ্জিন চালিত পেট্রোল পাম্প তৈরী করে পেট্রোল, অকটেন, এলপিজি গ্যাস, কেরোসিন, ডিজেল, মবিল বিক্রি করে আসছিলেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোঃ আলাউদ্দীন।
স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে মিশু এন্টারপ্রাইজ প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মোঃ আলাউদ্দীন (আলো) প্রভাবশালী হওয়ায় তার বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায়নি। তবে বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দোকান বন্ধ করে দিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন কোতয়ালী মডেল থানার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুল করিম।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার মো. ফজলুল করিম বলেন, এ ধরনের ট্যাংক বসিয়ে পেট্রোল পাম্প তৈরী করে তেল বিক্রি সম্পূর্ণ বেআইনি। তবে আগেই ট্যাংক ইঞ্জিন চালিত পেট্রোল পাম্প সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে এ ধরণের কাজের সাথে সংযুক্ত থাকলে এদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার ফজলুল করিমের তৎপরতায় স্বস্তি ফিরিয়ে এসেছে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের। ব্যবসায়ীরা বলেন, চলমান বিএনপির অবরোধে দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যবহৃত হচ্ছে এই খোলা বোতলের পেট্রোল বোমা। গত কয়েক দিনে রাজধানী ঢাকাসহ বেশকিছু বিভাগ ও জেলায় গণপরিবহনে পেট্রোল বোমা ও পেট্রোলের মাধ্যমে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ফাঁকা জায়গাকে টার্গেট করে এ সব বোমারুরা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে। পাশাপাশি এ সব অপরাধী খুব সহজেই প্রকাশ্যে পেট্রোল বোমার সরঞ্জামাদি পাচ্ছে হাতের নাগালেই। তবে এই দোকান বন্ধ করায় আর অপরাধীরা পেট্রোল বোমা তৈরী করার জন্য সরঞ্জামাদি পাবে না। এদিকে ওই পুলিশ কর্মকর্তা সঠিক সময় অভিযান পরিচালনা করায় ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপণ করেন।
এ ব্যাপারে বিস্ফোরক পরিদপ্তর বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী বিস্ফোরক পরিদর্শক বিনয় কুমার মন্ডল বলেন, আমরা বিষয়টি শুনে ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করছি। তবে মিশু এন্টারপ্রাইজের মালিক আলাউদ্দীন আলোর কাছে কাগজ পত্র চাইলে তিনি কোনো কাগজ পত্র দেখাতে পারেনি। তবে বিস্ফোরক অধিদপ্তরে একটি পাম্পের জন্য আবেদন করছে সেই কাগজ দেখিয়েছে। কিন্তু আমাদের বিস্ফোরক অধিদপ্তর থেকে কোনো অনুমোদন দেওয়া হয়নি। সে যেটা করছে সম্পূর্ণ বেআইনি তার বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’’
দোকান মালিক আলাউদ্দীন আলো বলেন, ভাই আপনাদের চায়ের দাওয়াত দিলাম, কিন্তু আপনারা না এসে আমার এতো বড় ক্ষতি করা লাগে? আমি বরিশালে ত্রিশ বছর ধরে বসবাস ও ব্যবসা করে আসছি। কিন্তু এ ধরণের ক্ষতি আজ পর্যন্ত কেউ করতে পারে নি।