১১ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

বরিশালে রহস্যজনক ভাবে একদিনে তিন স্কুলছাত্রী নিখোঁজ

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণী ডেক্স—

বরিশালের গৌরনদী থেকে রহস্যজনকভাবে একদিনে তিন স্কুলছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। তবে নিখোঁজ না নিজ ইচ্ছায় তারা কোথাও গেছে সে বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

গৌরনদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফজাল হোসেন জানান, পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দুটি দিকে আমাদের সন্দেহ রয়েছে। আশা করছি দ্রুত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের খুঁজে বের করা সম্ভব হবে। আর তাদের খুঁজে বের করা গেলেই নিখোঁজ হওয়ার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

এদিকে একাধিক স্কুলছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা সন্দেহে এক অভিভাবক দম্পতির ওপর বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাতে চড়াও হয় অপর নিখোঁজ স্কুলছাত্রীদের অভিভাবকরা।

খবর পেয়ে রাত ১২টার দিকে গৌরনদী মডেল থানা পুলিশের সদস্যরা উত্তেজিত জনতার হাত থেকে আটকদের উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে। ঘটনাটি জেলার গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর এলাকার। আটকরা হলেন- বাবুগঞ্জ উপজেলার ঠাকুর মল্লিক গ্রামের বাসিন্দা জাকির সরদার ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী হেলেনুর বেগম। আটক হেলেনুর বেগম তার পালিত মেয়েকে নিয়ে বাটাজোর এলাকার ভাড়াটিয়া বাসায় বসবাস করে আসছিলেন।

নিখোঁজ এক কিশোরীর মা সাহিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, সকালে স্কুলে যাওয়ার কথা বলে তার অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে সুমাইয়া আক্তার নিশি (১৩) বাসা থেকে বের হয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়। পরে অনেক খোঁজাখুজির পর জানতে পারি বাটাজোর এলাকা থেকে আরও কয়েকটি মেয়ে একইদিনে নিখোঁজ রয়েছে। বিকেলে নিখোঁজ কিশোরী ফাতেমা আক্তার (১৬) তার পালিত মা হেলেনুর বেগমের মোবাইলে ফোন করে জানায় আমার মেয়েসহ তারা কয়েকজন একত্রে রয়েছে।

তিনি আরও বলেন, বিষয়টি হেলেনুর বেগম আমাদের না জানিয়ে একইদিন রাত ১০টার দিকে বড় একটি প্লাস্টিকের বাটি ভর্তি ভাত-তরকারিসহ তার দ্বিতীয় স্বামী জাকিরকে নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এতে আমাদের সন্দেহ হলে হেলেনুর ও জাকিরকে আটক করে থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। আমাদের ধারণা আমার মেয়েসহ নিখোঁজ অন্য মেয়েদের হেলেনুর ও তার দ্বিতীয় স্বামী জাকির পাচারের জন্য অজ্ঞাতস্থানে আটক করে রেখেছে। তাদের জন্য রাতের খাবার নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।

দেওপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বাদশা হাওলাদার বলেন, সকালে স্কুলে যাওয়ার কথা বলে আমার নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেয়ে ইসরাত জাহান বাসা থেকে বের হয়ে রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়।

তিনি আরও বলেন, আমার ধারণা হেলেনুর ও তার স্বামী জাকির তাদের পালিত মেয়ে ফাতেমার মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়েদের সঙ্গে গভীর সখ্যতা করে পাচারের উদ্দেশে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে আটক করে রেখেছে।

যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করে আটক হেলেনুর বেগম জানিয়েছেন, বিকেলে তার পালিত মেয়ে ফাতেমা আক্তার ফোন করে জানায় কয়েকজন মেয়ে মিলে একসঙ্গে ঢাকা যাচ্ছে। আর এ কথা জানানোর পর থেকেই মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ রয়েছে।

আর হেলেনুরের স্বামী জাকির সরদার বলেন, ফাতেমার নিখোঁজের বিষয়ে রাত ৮টার দিকে হেলেনুর মোবাইল ফোনে আমাকে জানায়। এরপর তার কাছে এলে স্থানীয়রা পাচারকারী সন্দেহে হেলেনুরের সঙ্গে আমাকেও আটক করে অসৌজন্যমূলক আচরণ শুরু করে। পরে থানা পুলিশ এসে আমাদের উদ্ধার করে তাদের হেফাজতে নেয়।

গৌরনদী মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, খবর পেয়ে উত্তেজিত জনতার হাত থেকে আটক স্বামী-স্ত্রীকে উদ্ধার করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।

যদিও পুরো বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করা হচ্ছে জানিয়ে ওসি আফজাল হোসেন বলেন, যে দম্পতিকে আমরা হেফাজতে এনেছি, তাদের মেয়ে (পালিত)সহ তিন স্কুলছাত্রী নিখোঁজ হওয়ার খবর এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে রয়েছে।

হেফাজতে থাকা দম্পতি এখানকার স্থানীয় বাসিন্দা না হওয়ার পাশাপাশি তাদের মেয়েটি পালিত হওয়ায় অন্য অভিভাবকরা তাদের ওপর সন্দেহ করছে। ওই দম্পতিকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে তাদের মেয়ে নিখোঁজ থাকায় তারাও উদ্বিগ্ন।

সূত্র ০ বরিশাল ক্রাইম টাইমস

সর্বশেষ