১৩ই সেপ্টেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
বিসিসি থেকে বেতন নেন সাবেক মেয়রের বাসার কাজের লোক উজিরপুরে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সম্পাদকের নামে হ*ত্যাচেষ্টা মামলা ঝালকাঠি সদর হাসপাতাল : ফিল্ম না থাকায় দেড় মাস ধরে এক্স-রে সেবা বন্ধ মঠবাড়িয়া বিএনপি নেতা দুলালকে দল থেকে বহিষ্কার বরগুনায় ছাত্র আন্দোলন সমন্বয়কদের মধ্যে সং*ঘ*র্ষ, আ*হ*ত ৪ হার্ট অ্যাটাক থেকে বাঁচতে চাইলে প্রতিদিন বাদাম খান পটুয়াখালীতে জমির বি*রোধে ছোট ভাইয়ের হাতের কব্জি কে*টে নিলো বড় ভাই বরিশালে মিলল মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির ম*রদেহ, পরিবারের দাবি হ*ত্যা বরিশালে ৮ কেজি গাঁজাসহ মাদকবিক্রেতা আটক বরিশালে এসএসসির সিলেবাস কমানোর দাবিতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

বরিশাল নগরীতে প্রকাশ্যে শিশু গৃহকর্মীকে মারধর করলেন পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নিজস্ব প্রতিবেদক :: বরিশাল নগরীতে রাস্তায় প্রকাশ্যে শিশু গৃহকর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে জেলা ডিবির পরিদর্শক মিজানুর রহমানের স্ত্রীর বিরুদ্ধে। এ সময় বাঁধা দিতে গেলে পরিদর্শকের ছেলেও স্থানীয়দের সঙ্গে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নগরীর চৌমাথা বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই গৃহকর্মীকে উদ্ধার করে কোতোয়ালি মডেল থানার ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। তবে নির্যাতনকারীর কারও নাম জানাতে পারেনি পুলিশ।

নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মীর নাম মনি (১১)। সে বাবুগঞ্জ উপজেলার পিতা মন্টু হাওলাদারের মেয়ে।

শিশু গৃহকর্মী অভিযোগ করে- দীর্ঘদিন ধরে রূপাতলী এলাকায় ডিবির পরিদর্শক মিজানুর রহমানের বাসায় কাজ করত। এ সময় তাকে অনেকবারই বকাঝকা করা হতো। বৃহস্পতিবার সে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। এরপর তাকে নগরীর চৌমাথা এলাকায় মিজানুর রহমানের স্ত্রী রাস্তায় প্রকাশ্যে মারধর করে। এ সময় তার ছেলেও চড়-থাপ্পড় দেয়।

প্রত্যক্ষদর্শী রফিকুল ইসলাম হাওলাদার বলেন, মাইয়াডা চৌমাথা বাজারের সামনের রাস্তা পার হচ্ছিল। এর মধ্যে এক মহিলা ও একজন ছেলে মাইয়াডার হাত ধইরা টান দেয় এবং ওরে মারা শুরু করে। এ সময় মাইয়াডা চিল্লাইয়া কইতে থাহে- ‘মুই আমনেগো লগে যামু না, ওই বাসায় মইরা গেলেও যামু না’। হেই সময় লোকজন জমা হইয়া যায় এবং শিশুটিকে মারার কারণ জানতে চান। পাশাপাশি মারধরকারী ওই মহিলা ও ছেলেকে পুলিশে দেয়ার কথা কইলে পুলিশের মায়রে বাপরে তুইলা গালাগালি করে।

মমতাজ নামে আরেক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, মানুষ মানুষরে এমনে পিডাইতে পারে না। ওরা জানোয়ার। গরিব মারলে তো আর বিচার হইবে না। হেরা বড় মানুষ। ওই পোলায় জানাইছে হের বাপেও ডিবির বড় অফিসার।

প্রত্যক্ষদর্শী আবুল কালাম বলেন, ওই বাচ্চাডারে যে সময় মারতে আছিলো ওই মহিলা আর পোলাডায় তহন মাইনষের ভিড় হইয়া গেলে ট্রাফিক পুলিশ আইয়া পুলিশ বক্সে নেয়। পরে হেই মহিলারে মন্দ কইয়া থানা পুলিশরে ডাইকা শিশু মাইডারে থানা পুলিশের কাছে দিয়া দেয়।

অভিযুক্ত মহিলার স্বামী জেলা ডিবির পরিদর্শক মিজানুর রহমান জানিয়েছেন, তিন দিন আগে শিশুটির মা-বাবা আমাদের বাসায় রেখে যান। আমার স্ত্রী অসুস্থ। আজ সকালে সে রিপোর্ট দেখানোর জন্য বাইরে বের হয়েছে। আমি বাসায় একটু ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। এই সুযোগে শিশুটি ঘরের বাইরে বের হয়ে যায়।

১২ বছরের শিশু আপনার বাসায় কী কারণে রেখেছেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিশুটি অসহায় হওয়ায় তার মা আমার বাসায় দিয়ে গিয়েছিলেন। আমার সন্তানদের সঙ্গী হিসেবে থাকতো শিশুটি। তাকে গৃহকর্মী হিসেবে রাখা হয়নি।

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম বলেন, শিশুটির সঙ্গে কথা বলেছি। ৬ দিন আগে সে ওই বাসায় কাজ শুরু করেছে। সেখানে বকাঝকা করায় মেয়েটি ক্ষুদ্ধ হয়ে বাসা থেকে আজ সকালে বের হয়ে যায়। পরিদর্শকের পরিবারের লোকজন খুঁজতে বের হয়, ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে পেলে তারা বাসায় নিয়ে যেতে চায়। কিন্তু মেয়েটি না যেতে চাইলে টানাহেঁচড়া হয়। যে বিষয়টি দৃষ্টিকটু। এরপর পুলিশ খবর পেয়ে মেয়েটিকে উদ্ধার করে হেফাজতে নেয়। শিশুটি বর্তমানে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রয়েছে, তার পরিবার এসে অভিযোগ দিলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান বলেন, যেহেতু শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে, সেহেতু শিশুটিকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে। ভিকটিমের জবানবন্দি ও বাবা-মায়ের অভিযোগ সব কিছু শুনেই ঘটনার তদন্ত করে যা সামনে আসবে সেভাবেই আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইন সবার জন্য সমান। এক্ষেত্রে কাউকে ছাড় দেওয়ার সুযোগ নেই।

সর্বশেষ