বাউফল প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর বাউফলে ভিক্ষা করে জমানো চাল ভাজি করতে গিয়ে রাব্বানি (৮) নামের এক শিশু অগ্নিদগ্ধ হয়ে এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না তার ভিক্ষুক মা কুলসুম বেগম।
রাব্বানির বাড়ি পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কেশবপুর ইউনিয়নের মমিনপুর গ্রামে। বাবার নাম মোক্তার আলী মৃধা। ৪ বছর আগে বাবা মারা যাওয়ার পর তিন কন্যাসন্তান মৌসুমি, রাব্বানি ও জামিলাকে নিয়ে সংসার চালাতে মা কুলসুম বেগম নিরুপায় হয়ে ভিক্ষার পথ বেছে নেন। ভিক্ষার টাকায় বিয়ে দেয়া হয়েছে বড় মেয়ে মৌসুমিকে। বড় মেয়ের স্বামীও প্রতিবন্ধী।
গত ২৬ ডিসেম্বর সকালে প্রতিদিনের মতো ৫ বছরের কন্যাশিশু জামিলাকে নিয়ে ভিক্ষা করতে বেরিয়ে যান রাব্বানির মা কুলসুম বেগম। বড় বোন মৌসুমিও ঘরে ছিলেন না। ঘরে কোনো খাবার ছিল না। ক্ষুধার তাড়নায় ভিক্ষা করে জমানো চাল ভাজি করে খাওয়ার চেষ্টা করে রাব্বানী। সে ঘর থেকে চাল এনে ভাজতে গিয়ে চুলার আগুনে পুড়ে দগ্ধ হয়। পরে তার চিৎকার শুনে বাড়ির লোকজন উদ্ধার করে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করেন।
রাব্বানির মা কুলসুম বেগম জানান, রাব্বানির বাবা মোক্তার আলী খেয়ার নৌকা চালাতেন। অল্প আয়ে তাদের সংসার কোনোরকম চলে যাচ্ছিল। ৪ বছর আগে সংসারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিটি মারা যান। এরপর ভিক্ষা করে সংসার চালানো ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। হঠাৎ করে মেয়েটি অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় এখন কূলকিনারা পাচ্ছেন না তিনি।
বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক এ এস এম সায়েম বলেন, শরীরের ৭০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে শিশুটির। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে পাঠানো হয়েছে। তার চিকিৎসার জন্য প্রায় ৪-৫ লাখ টাকার প্রয়োজন। দরিদ্র পরিবারের পক্ষে যা বহন করা অসম্ভব। তাই সমাজের বিত্তবানদের সহায়তা চেয়েছেন রাব্বানির ভিক্ষুক মা।
সাহায্য পাঠাতে ইচ্ছুক যারা তাদের বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বেচ্ছাসেবক আতিকুর রহমান আরিফ তার মোবাইলে (০১৭৫৬৩১২০৫০) যোগাযোগের অনুরোধ করেছেন।