২রা জুন, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

বাউফলে চড়া দামে এলপিজি গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে

বাউফল প্রতিনিধি :: পটুয়াখালীর বাউফলে সর্বত্র এলপিজি গ্যাসের বাজারে নৈরাজ্য চলছে। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস সিলিন্ডার। সরকার নির্ধারিত মূল্য থেকে দেড় গুণেরও বেশি মূল্যে বিক্রি হচ্ছে অত্যাবশ্যকীয় এই পণ্যটি। নির্ধারিত বেঁধে দেওয়া মূল্য থাকলোও মানা হচ্ছে না সেই নিয়ম। হঠাৎ করে অধিক মূল্যে গ্যাস বিক্রি হওয়ায় বেকায়দায় পড়েছেন সাধারণ মানুষ।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের ওয়েব সাইটে সর্বশেষ ২০২০ সালের ১৪ ডিসেম্বরের তথ্য অনুযায়ী সাড়ে ১২.৫০ কেজি গ্যাসের প্রতিটি সিলিন্ডারের স্থানীয় বিক্রয় মূল্য ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা আছে। এরপর থেকে অদ্যবধি এলপিজি গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির কোন নির্দেশনা ওয়েব সাইটে দেয়া হয়নি। অথচ বাউফলের কালিশুরী, কালাইয়া, বগা, কনকদিয়া, বিলবিলাস, নূরাইনপুর, ধুলিয়া ও কাশিপুরসহ প্রায় ১৫টি হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে ব্যাবসায়িরা প্রতিটি সিলিন্ডার (১২.৫ কেজি) কোম্পানী ভেদে ৯৩০ টাকা থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি করছেন। এক একটি বাজারে ভিন্ন ভিন্ন মূল্যে গ্যাস বিক্রি করতে দেখা গেছে। তবে কোথাও ৯৩০ টাকার কমে বিক্রি হচ্ছে না। কোন প্রকার ঘোষণা ছাড়াই হঠাৎ করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন সাধারণ মানুষ।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাউফলের বাণিজ্য কেন্দ্র কালাইয়া বন্দরের একাধিক গ্যাস বিক্রেতা জানান, ১ জানুয়ারি থেকে ডিপো কর্তৃপক্ষ প্রতি সিলিন্ডারে ৬০ টাকা হারে বৃদ্ধি করেছেন। যে সকল গ্যাস বিক্রেতাদের কাছে সিলিন্ডার সরবরাহ করা হয়েছে তাদেরকে ডিপো কর্তৃপক্ষ মোবাইল ম্যাসেজের মাধ্যমে মূল্য বৃদ্ধির কথা জানিয়েছেন। যে কারনে বেশী দামে গ্যাস বিক্রি করা হচ্ছে।

এদিকে বাউফলের মুদি-মনোহারি দোকান, ক্রোকারাইজের দোকান, ভূঁষা মালের দোকান এবং রড-সিমেন্টের দোকানসহ যত্রতত্র গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে। অনেক দোকানী তাদের দোকানের সামনে রাস্তার পাশে রেখেই গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করছেন। এতে রয়েছে ভয়াবহ দুর্ঘটনার আশংকা।

সর্বশেষ তথ্যানুযায়ী বাউফলে বিস্ফোরক অধিদপ্তরের অনুমতিপ্রাপ্ত মাত্র ৪ জন গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবসায়ী রয়েছেন। কিন্তু বাউফলের ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্স থেকে অনুমতিপত্র নিয়ে কিংবা না নিয়েই বাউফলের বিভিন্ন হাট বাজারে শত শত দোকানে গ্যাস সিলিন্ডার বিক্রি করা হচ্ছে। বাউফল ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের কর্মকর্তা মো.বাহাউদ্দিন সাংবাদিকদের জানান, বিভিন্ন হাট বাজারের ছোট ছোট দোকানীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে জেলা পর্যায়ে আমাদের ইন্সপেক্টর ও টিম প্রধান তদন্ত করে গ্যাস বিক্রির অনুমতি দেন। ডিস্ট্রিবিউটর পর্যায়ের অনুমতি পাওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট শর্তাবলী মেনে ফায়ার সার্ভিস এন্ড সিভিল ডিফেন্সের প্রধান কার্যালয়ে আবেদন করতে হয়।

এদিকে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ঘটনায় বাউফলের উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. আনিচুর রহমান বালির নেতৃত্বে গত ৩ জানুয়ারি কালাইয়া বন্দরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ১০ জন ব্যাবসায়ির আর্থিক দন্ড করা হয়েছে।

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি সম্পর্কে উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাকির হোসেন বলেন, অতিরিক্ত দামে শুধু গ্যাস নয়, অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী বিক্রি করলেও ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাদের জেল-জরিমানা করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সর্বশেষ