নিজেস্ব প্রতিবেদক।। অনুমোদন ছাড়া নদীতীরের ফসলি জমি ও বসতবাড়ি সংলগ্ন স্থানে গড়ে ওঠা এস এম বি ব্রিক্স নামে অবৈধ ইটভাটায় অবাধে পুড়ছে কাঠ। ইটও পোড়ানো হচ্ছে পরিবেশ দূষণকারী টিনের ছোট ড্রাম চিমনিতে। কেটে নেওয়া হচ্ছে কৃষি জমির টপসয়েল, নদীতীরের মাটি। ইটভাটার পাশে কৃষি জমি, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও বনাঞ্চল থাকার পরও প্রতিনিয়ত নির্গমন করা হচ্ছে কার্বন ডাইঅক্সাইড ও কালো ধোঁয়া। ফলে পরিবেশ দূষণের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনও রয়েছেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার দুধল ইউপির কবিরাজ গ্রামের মন্ডলবাড়ি এলাকায় গড়ে ওঠা ইটভাটার কারণে সরকারও হারাচ্ছে রাজস্ব। উপজেলা বা জেলা প্রশাসন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে না। সরেজমিনে দেখা গেছে, রাঙ্গামাটি নদীর পূর্ব পাড়ে দুধল ইউনিয়নের কবিরাজ গ্রামের মন্ডলবাড়ি এলাকায় আঃ ছত্তার খানের পুত্র আঃ ছবুর খান এই ইটভাটার মালিক।কোনো ধরনের নিয়ম কানুন ও পরিবেশ দূষণের তোয়াক্কা না করেই ভাটাটি টিনের তৈরি ড্রাম চিমনিতে কাঠ জালিয়ে ইট পোড়ানো হচ্ছে। ইট তৈরির মাটি নেওয়া হচ্ছে রাঙ্গামাটি নদী থেকে। ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন- ২০১৩-এ বলা হয়েছে- লাইসেন্স ছাড়া ইটভাটা করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি ইট প্রস্তুতে কৃষিজমি কিংবা পাহাড় কেটে মাটি ব্যবহার করতে পারবেন না। অনুমতি ছাড়া খাল, পুকুর, নদীরপাড় কিংবা চরাঞ্চল কেটে মাটি সংগ্রহ করতে পারবেন না।আশ্রাব মোল্লাসহ ওই অঞ্চলের একাধিক বাসিন্দার অভিযোগ, ভাটাটিতে ট্রাককে ট্রাক ছোট-বড় গাছ পোড়ানো হচ্ছে।রাঙ্গামাটি নদীর পলি কেটে ইট তৈরি করছেন ভাটা মালিকরা। টিনের ছোট ড্রাম চিমনি ব্যবহারে প্রচুর পরিমাণে কালো ধোঁয়ারও সৃষ্টি হচ্ছে। মিয়ারহাট বাজোরের বাসিন্দা রাসেল বলেন, উপজেলা থেকে যাতায়াত ব্যবস্থা ভাল না হওয়ায় সুবিধা নিচ্ছেন অবৈধ ভাটার মালিকরা তাদের সরকারি কোনো ভ্যাট-ট্যাক্স দিতে হচ্ছে না। ।তাদের কোনো সরকারি অনুমোদন না থাকায় ইচ্ছামতো ছোট-বড় গাছ পোড়াতে পারছেন। পরিবেশের ক্ষতি ও কাঠ পোড়ানোর ব্যপারে ভাটা মালিক ছবুর খান বলেন, আমরা বিভিন্ন মহলকে ম্যানেজ করে আপাতত কাজ চালাচ্ছি। নিয়ম মেনে ইটভাটা করা খুব কঠিন। তাই আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই ভাটা চালাচ্ছি।এ মুহূর্তে আমাদের ভাটার কোনো পরিবেশ ছাড়পত্র বা জেলা প্রশাসনের লাইসেন্স নেই। ভবিষ্যতে সব কিছুই পাকাপোক্তভাবে করব।অবৈধ ভাটা স্থাপনে বৈধ ভাটা মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হোক, এটা কেউ চান না। অবৈধ ভাটা মালিকদের তো সরকারি রাজস্ব দিতে হয় না, লাইন্সেস নবায়ন করতে হয় না। এর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া দরকার। তা না হলে বৈধ ব্যবসায়ীরা আর্থিক ক্ষতিতে পড়তেই থাকবেন পরিবেশ অধিদপ্তর অফিস সুত্র জানান, ইটভাটার বিষয়ে জেলার ভাটা মালিকদের সরকারি নির্দেশ জানিয়ে দিয়েছি। অনেকেই সেগুলো মেনে চলছেন। পরিবেশের ক্ষতি হয়, এমন কোনো কাজে ছাড় নেই।
