বরিশাল বানী: বাকেরগঞ্জের পাদ্রিশিবপুর ইউনিয়নের পারশিবপুর গ্রামের শ্রীকান্তের পুত্র তপন মন্ডল ও তার হতদরিদ্র পরিবারের সদস্য এবং স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে দুর্ধর্ষ প্রতারক চক্রের পরিচয় এবং নজিরবিহীন অপকর্মের ফিরিস্তি।
সর্বস্ব হারানো তপন মন্ডল জানান, ওই প্রতারক চক্রের প্রধান হচ্ছে পরিমল ঠাকুরের কুপুত্র পবিত্র চক্রবর্তী নামের এক যুবক তার বর্তমান ঠিকানা বাকেরগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতি ইউনিয়নের বড়পুইয়াউটা গ্রামে। পিতা পরিমল ঠাকুর এবং তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও এই প্রতারক চক্রের সদস্য। ভুক্তভোগী এবং স্থানীয় লোকজন জানান প্রতারক চক্রের হোতা পবিত্র ঠাকুর নিজেকে জাতীয় মন্দির ঢাকেশ্বরীর পুরোহিত পরিচয় দেন এ কারণে তারা তাকে বিশ্বাস করেছিলেন এছাড়াও রাষ্ট্রপতি, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমসহ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে তোলা ছবি মোবাইলে দেখানোর পর পবিত্রকে আরো বেশি বিশ্বাস করেন বাকেরগঞ্জ বাঁশি।
এর পরিপ্রেক্ষিতে তপন মন্ডল এর শ্যালক সজল নামক এক যুবককে চাকরি দেওয়ার কথা বলে ১০ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন প্রতারক পবিত্র ঠাকুর। দাবি অনুযায়ী টাকা নেওয়ার জন্য বারবার তাগাদা দিলে টাকা নিতে তপন মন্ডল এর বাড়ি যেতে পবিত্র ঠাকুর তার পর সমাজসেবা দপ্তরে চাকরি দেয়ার শর্তে তপন মন্ডল ও তার স্ত্রী প্রতারক পবিত্রের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে তার মা ও বাবা পরিমল ঠাকুরের সামনে পবিত্র ঠাকুর এর হাতে ৫ লাখ ৩ হাজার টাকা ঐ দিনই নগদ দেন এরই ধারাবাহিকতায় পরবর্তীতে ঢাকা যাওয়ার কথা বলে আরো ৫ লাখ টাকা দেয়া হয়। সর্বস্ব হারানো ভুক্তভোগীরা জানান গোয়ালের সাতটি গরু বিক্রি করে এবং উত্তম মিস্ত্রি ও শ্রীকান্ত মন্ডল এর নিকট হতে ২ লাখ টাকা চরা সুধে নিয়ে ওই টাকা দেয়া হয়েছে। টাকা নিরাপত্তার জন্য তাদেরকে পবিত্র জনতা ব্যাংকের একটি চেক দেয় যাতে ১০ লাখ টাকা লেখা রয়েছে। প্রতারণার কৌশল অনুযায়ী নির্ধারিত স্থানে তার স্বাক্ষর না দিয়ে ওই চেকটির পিছনে স্বাক্ষর করেন প্রতারক পবিত্র। ভুক্তভোগীরা জানান টাকা নেওয়ার পর পবিত্র চক্রবর্তী এবং তার পিতা-মাতা নয় ছয় কথাবার্তা বলে তাদের সাথে অসদাচরণ করা শুরু করে। একপর্যায়ে নিজেকে রেহাই করতে ঘুষ দেয়া এবং নেয়া সমান অপরাধ উল্লেখ করে বিভিন্ন ধরনের ভয়-ভীতি দেখিয়ে তাদের দমিয়ে রাখার চেষ্টা চালায় প্রতারক পবিত্র। ভুক্তভোগীরা পরে বিভিন্নভাবে অনুনয়-বিনয় করে টাকা ফেরত চাইলে পবিত্র জানায়, পুলিশ বিভাগে চাকরি দেওয়া হবে বলে তাদেরকে আশ্বাস দেন ও কাউকে জানালে চাকরি হবে না বলে ভয় দেখিয়ে পবিত্র তাদের বলেন ঝালকাঠি ও বরিশালের ডিঅাইজি’র সাথে কথা হয়েছে চাকরি অবশ্যই হবে।
তপন মন্ডল ও তার স্ত্রীকে প্রতারক পবিত্র আরো জানান শুধু আপনাদের টাকায় নয় আরো ৫ জনের কাছ থেকে মোট ৪০ লাখ টাকা চাকুরী দেয়ার জন্য নিয়েছি। তাদের টাকা নেয়া হলেও তারা ভয়ে মুখ খুলছেন না ঘুষ দেয়া এবং নেয়া সমান অপরাধ এই ভয় দেখিয়ে ভুক্তভোগীদের মুখ বন্ধ করে রাখেন এই প্রতারক চক্রের প্রধান পবিত্র।