বরগুনা প্রতিনিধি ::: বরগুনার বামনা থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনে পুলিশের দায়ের করা একটি মামলায় সোনিয়া আফরোজ (৩১) নামের ১০ মাসের অন্তঃসত্ত্বা এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী নারীকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহারে প্রতিবন্ধী নারী ১১ নং আসামি এবং স্বামী সাদ্দাম হোসেন ৮নং তালিকাভুক্ত আসামী।
এ ব্যাপারে বামনা থানার অফিসার ইনচার্জ তুষার কুমারের বক্তব্য মামলার ঘটনার সম্পৃক্ত আসামিদের তথ্যের ভিত্তিতে এজাহারে আসামিদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে বাদী।
আসামী সাদ্দাম হোসেন বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের শালিশ বৈঠকের সিদ্ধান্ত না মানা কারণে এ মামলায় তাদের স্বামী-স্ত্রী দুজনকে আসামী করা হয়েছে। গণমাধ্যমের কাছে এমনটাই দাবী করেন অন্তঃসত্ত্বা প্রতিবন্ধী নারীর স্বামী সাদ্দাম হোসেন। মামলার পর থেকেই গ্রেপ্তার আতংকে পালিয়ে বেড়াচ্ছে এই দম্পতি।
গত ২৩ জুলাই বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৯৭৪ এর ১৫ (১)(ক) ধারায় বামনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন বামনা থানার উপ-পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম মৃধ। মামলার এজাহারে স্বামী ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২০/২৫জন অজ্ঞাতনামা আসামী করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত করছেন উপ-পরিদর্শক দেবাশীষ হাওলাদার।
এ ব্যপারে সোনিয়া আফরোজের স্বামী সাদ্দাম হোসেন মোবাইল ফোনে বলেন, স্থানীয় ফরিদা বেগম এবং দুলিয়া বেগম নামে দুই নারীর সাথে দীর্ঘদিন যাবৎ জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের কারণে তাদেরকে এই মামলার আসামী করা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন- বামনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মোঃ আলতাফ হোসেন হাওলাদারের করা শালিসির রায় না মানায় এবং পরবর্তীতে তাকে ছাড়া স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানকে নিয়ে শালিসি করার ক্ষোভেই তিনি আমাদেরকে মিথ্যা মামলায় আসামি করতে সহযোগিতা করেছেন বলে অভিযোগ জানান।
এই বিষয়ে বামনা থানার ওসি তুষার কুমার মণ্ডল বলেন, ২৩ জুলাই বিকেল ৫টার দিকে উপজেলার সদর ইউনিয়নের আমতলী গ্রামে নাশকতা সৃষ্টির উদ্দেশে জামায়াতের কিছু নেতাকর্মী একত্রিত হচ্ছিল। এ সময় খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছালে উপস্থিত নেতাকর্মীরা পালিয়ে যাওয়ার সময় সাইমুন ও জাফর নামের দুজন কে আটক করতে সক্ষম হয়। পুলিশের উপস্থিতি টের বাকী আসামীরা পালিয়ে যায়। আটককৃতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে ও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর থাকায় আসামী সোনিয়া আফরোজ এবং তার স্বামী সাদ্দাম হোসেনকে মামলার আসামী করা হয়েছে। মামলার তদন্ত চলমান রয়েছে, তদন্তে তাদের সম্পৃক্ততা না থাকলে আসামী থেকে বাদ দেওয়া হবে।
বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, বামনা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ করা, মুক্তিযোদ্ধাদের মনে ভয়ের সৃষ্টি করাসহ থানা এলাকায় সরকারি, বেসরকারি ও স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সম্পত্তির ক্ষতিসাধনের উদ্দেশ্যে একদল দুষ্কৃতিকারী সদর ইউনিয়নের উত্তর আমতলী গ্রামের জনৈক সাইমুন হুসাইনের বাড়ীতে গোপন বৈঠকে মিলিত হওয়ার সংবাদ পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে সাইমুন হুসাইন ও জাফর নামের দুই আসামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, বাকি আসামীরা পালিয়ে যায়। এসময় সাইমুম হুসাইনের ঘর থেকে বেশ কিছু জিহাদী বই ও লিফলেট উদ্ধার করে পুলিশ।