ভোলা প্রতিনিধি ::: নৌবাহিনী সদস্যদের মোতায়েন করায় ভোলা সদর জেনারেল হাসপাতালের পরিবেশ ধীরে ধীরে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরেছে। স্বস্তি ফিরেছে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীদের মধ্যে। নৌবাহিনীর উপস্থিতির কারণে হাসপাতাল থেকে দালালদের দৌরাত্ম্য কমেছে।
এ বিষয়ে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক (চলতি দায়িত্ব) শেখ সুফিয়ান রুস্তম আজ বৃহস্পতিবার বলেন, হাসপাতালে এখন স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে এসেছে। তিনি বলেন, ‘হাসপাতালে উদ্ভূত পরিস্থিতির পর আজকের পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হলে বিষয়টি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি মহোদয়কে জানানো হয়।’ তিনি জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এরপর চিকিৎসকদের ওপর হামলা, মারধর ও লাঞ্ছিতের ঘটনায় বুধবার (১৬ এপ্রিল) ভোলা সদর মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা নম্বর-৩৮। মামলায় অজ্ঞাত ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে নিরাপত্তাব্যবস্থা।
এ ছাড়া হাসপাতালে বেশ কয়েকজন স্টাফকে পদায়ন করা হয়েছে। তাঁদের অনেকে ইতিমধ্যেই যোগদান করেছেন। হাসপাতালে এখন স্বাভাবিক কার্যক্রম চলছে বলেও জানান তত্ত্বাবধায়ক।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালের সিভিল সার্জন কার্যালয় ভবনের সামনে নৌবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করছেন। নৌবাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে দালালেরাও হাসপাতাল থেকে উধাও হয়।
ভোলা সদর মডেল থানার ওসি মো. আবু সাহাদাৎ হাসনাইন পারভেজ বলেন, চিকিৎসকদের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেছে। পরবর্তীকালে ভিডিও ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের আইনের আওতায় আনার ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
গত শুক্রবার ও পরদিন শনিবার পরপর দুই দিনে দুই চিকিৎসকের ওপর হামলা ও মারধরের ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছিলেন চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীরা। দুই চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনায় মামলা, হামলাকীদের গ্রেপ্তার, হাসপাতালকে দালালমুক্ত, ডিউটিরত চিকিৎসকের সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও হাসপাতালে পুলিশ ক্যাম্প স্থাপনসহ ছয় দফা দাবিতে গত রোববার সকাল থেকে চিকিৎসক, নার্স ও কর্মীরা কর্মবিরতি পালন করেন। তবে, ছয় দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে ওই দিন বিকেলে কর্মবিরতি স্থগিত করা হয়।
কিন্তু ঘটনার গত পাঁচ দিনেও পুলিশ মামলা না নেওয়ায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ফের কর্মবিরতিসহ অনির্দিষ্টকালের জন্য কঠোর আন্দোলনের ঘোষণা দেন। তাঁরা ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটামও দিয়েছিলেন। এতে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।