হোসাইন আমির, কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি—
ডিজিটাল ও অত্যাধুনিক যুগে এসেও একটি আদা কাঁচা ও ভাংগাচুরা রাস্তায় হাজার হাজার মানুষ চলাফেরা করছেন যুগের পর যুগ। বর্ষাকাল এলে আরও চরম দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কুয়াকাটার অনতিদুরে দীর্ঘ দিন এ অবস্থা চলছে। এটা দেখে বলতে হয়, ‘প্রদীপের নিচে অন্ধকার।’ কুয়াকাটার মহিপুর ইউনিয়নের মহিপুর বাজার হতে ভায়া কাটাভারানী বেবিবাঁধ সড়ক দিয়ে ও ডাবলুগঞ্জ ইউনিয়নের মনসাতলী এবং পার্শ্ববর্তী ধুলাসার ইউনিয়নে তারিকাটাÑঅনন্তপাড়া ব্রীজ পর্যন্ত প্রায় ২৫কি.মি. সড়ক চলাচলের সম্পূর্ন অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে বেহাল দশায় থাকায় প্রায় ২০টি গ্রামের মানুষের দৈনন্দিন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। কাঁচা রাস্তা গুলো এখন ওই সব গ্রামবাসীর জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চলাচলে পোহাতে হচ্ছে চরম দূর্ভোগ পথ চারীদের থমকে পড়েছে হাজারো মানুষের জীবন যাত্রা। বর্ষা মৌসুমে রাস্তা গুলো পানি-কাঁদায় একাকার হয়ে যায়। এমন দুরবস্থার কথা এখন পযর্ন্ত জানেনা বলে জানান উপজেলার এলজিইউডির কর্মকর্তারা
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মহিপুর বাজার হতে কাটাভারানি বেবিবাঁধ সড়ক দিয়ে মহিপুর, বিপিনপুর, সেরাজপুর, লতিফপুর, নিজশিববাড়িয়া,ডাবলুগঞ্জ ইউনিয়নের রসুলপুর, মেহেরপুর, কাটাভারানি,কাজিকান্দা, সুরডগি, বরকুতিয়া, খাপড়াভাঙ্গা, মনসাতলী ,পার্শ্ববর্তী ধুলাসার ইউনিয়নে তারিকাটা ,নয়াকাটা, নয়াকাটা দিওর, বেীলতলী, বেীলতলীপাড়া, মুসলিমপাড়া, বেতকাটা,বেতকাটাপাড়া, খোচাউপাড়া. সোনাপাড়া, পক্ষিয়াপাড়া,অনন্তপাড়াসহ গ্রামের মানুষ মহিপুর থানা সদরে যাতায়াত করে থাকে। সড়কটির বিভিন্ন অংশে মাটি ক্ষয়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য খানাখন্দেও ভরা আছে। যার কারণে এলাকায় কোনো মাইক্রো বাস, ট্রাক, নছিমন Ñকরিমন, আটো রিকশা, আটো ভ্যান,পায়ে চালিত ভ্যান চলাচল করতে পারেনা। কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত ধান রাস্তা পাকা না হওয়ার ধান ব্যবসায়ীরা ধান ত্রæয় করতে আসেন না। ফলে তাদের ধান কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ফলে তারা ফসলের ন্যায্যমুল্য থেকে বঞ্চিত হন। এ এলাকার সন্তান সম্ভাবা মা, মুমূর্ষু রোগীদের হাসপাতালে নিতে পার হতে হয় চড়াই উৎরাই। কখনো রাস্তার মধ্যেই বেগ হয়ে সন্তান হয় ও মারা যায় রোগী।
এ গ্রামগুলোর মানুষের স্বপ্ন দেখে যে মৃত্যুর আগে হয়ত গ্রামে ঢোকার একটা ভাল রাস্তা দেখে যেতে পারবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন কি স্বপ্নই থেকে যাবে, নাকি বাস্তবে পরিণত হবে, এমন শঙ্কা নিয়েই দিনাতিপাত করছে এখানকার র্দুভোগে থাকা মানুষ গুলো। এ গ্রামের কেউ মৃত্যুবরণ করলে তার লাশ খাটিয়ায় করে কবরস্থানে নিয়ে যাওয়াই দুষ্কর হয়ে পড়ে। আর বর্ষার দিনে তো গ্রাম থেকে বের হওয়ায় দায় হয়ে পড়ে। গ্রামের কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রæত হাসপাতালে নেয়া সম্ভব হয় না। স্থানীয়রা দ্রæত রাস্তাটি পাঁকা করনে এলজিইড এবং স্থানীয় সংসদ সদস্যে ও উপজেলা পরিষদেও চেয়ারম্যান দৃষ্টি আকর্ষন করেছেন।
বন্যা নিয়ন্ত্রন বেবিবাধ এ সড়কের অধিকাংশ জায়গায় মাটি ক্ষয়ের ফলে বাধঁ হয়ে পড়েছে অপ্রশস্থ। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানান, বেরিবাধে বসবাসকারী মানুষ তাদের প্রয়োজনে বেরিবাঁধ থেকে মাটি কেটে নেয়ার ফলে এ দশায় পরিনত হয়েছে। এছাড়াও বেরিবাঁধ র্নির্মানের পর থেকে কোন সংস্কার কাজ না হওয়ায় চলাচলের উপযোগীতা হারানোসহ ঝুকিপূর্ন হয়ে পড়েছে এ বেরিবাঁধ সড়ক। বর্ষা হলে রাস্তাটি কাদা-পানিতে একাকার হয়ে যায়। সপ্তাহের একদিন বৃহসপতিবার একটি প্রাচীন বড়হাট এ হাট বসে মহীপুরে। দূরদূরন্ত থেকে কৃষিপন্য ও মালামাল মাথায় করে এলাকাবাসীকে মহিপুর হাটে যেতে হয়ও বিক্রি করতে হয়।
স্থানীয়রা জানান, এই রাস্তার কারনে ঝিমিয়ে পড়েছে এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক চাকা। কারন একটি অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থা যদি ভাল না হয় সেই অঞ্চলের মানুষদের জীবনমানে কোন গুরুত্ব নেই। এই এলাকার মানুষ স্বপ¦ দেখে যে কখনেই মৃত্যু আগে হয়তো গ্রামে রাস্তাটি পাঁকা দেখে যে পারবেন। কিন্তু সেই স্বপ¦ কি স্বপ¦ই থাকবেই নাকি বাস্তবে পরিনত হবে এমন শংকা নিয়েই দিনাপাত করছেন এখানকার বাসিন্দারা।
নয়াকাটা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মো. নোয়াব আলী হাওলাদার জানান,এলাকার রাস্তাঘাট পাকা ও খাপড়াভাঙ্গা নদীতে ব্রিজ নির্মান না হওয়ায় আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি এ এলাকায়। সড়ক এবং সেতু নির্মিত না হওয়ায় এ এলাকা গুলো অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
ধুলাসার ও ডাবলুগজ্ঞ, মহিপুর ইউনিয় পরিষদের চেয়ারম্যান মো.আ: জলিল আকনও অধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন, আলহাজ্ব মো.ফজলু গাজী জানান, ওই রাস্তাটি খুবই জনগুরুত্বপুর্ন ও মানুষের জনস্বার্থে রাস্তাটি পাকা করা উচিত
কলাপাড়া উপজেলা স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) মো. মোহন আলী সাংবাদিকদেও জানান, রাস্তাটি যখন কয়েক কিলোমিটার তাহলে রাস্তাটি জনগনের জন্য খুবই প্রয়োজন তাহলে পরবর্তীতে রাস্তা পাকার জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
