৩০শে মে, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

মূল্যায়ন ছাড়া পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণের সুযোগ নেই

কোনো প্রকার মূল্যায়ন ছাড়া পরবর্তী শ্রেণিতে উত্তীর্ণ করার সুযোগ নেই। আবার শিক্ষার্থী মূল্যায়নে বড় আকারে বার্ষিক পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে এমন বাধ্যবাধকতাও নেই। কোন প্রক্রিয়ায় শিক্ষার্থীর মূল্যায়ন করা হবে এই সিদ্ধান্ত নেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জিয়াউল হক বলেন, এক শ্রেণি থেকে ওপরের শ্রেণিতে উত্তীর্ণের জন্য অবশ্যই মূল্যায়ন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে অটোপাশের সুযোগ নেই।

পাবলিক পরীক্ষাগুলো আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। আইনের বাধ্যবাধকতার জন্য পরীক্ষার আয়োজন করতে হবে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় ও শিক্ষা বোর্ড সিদ্ধান্ত নেবে। কিন্তু স্কুলের অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা যেহেতু আইন দ্বারা পরিচালিত নয়, তাই স্কুল কর্তৃপক্ষ মূল্যায়নের প্রক্রিয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। করোনা দুর্যোগের কারণে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া কার্যত বন্ধ। হাতে গোনা কিছু প্রতিষ্ঠান অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে। শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ না থাকায় অনলাইনের ক্লাসও কার্যত ফলপ্রসূ হচ্ছে না। গ্রামের স্কুলগুলো অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারছে না। এ কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনাও হচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে অনেকে পরবর্তী শ্রেণিতে উর্ত্তীণের জন্য অটোপাশের দাবিও তুলেছিল। দুই-একটি গণমাধ্যমে অটোপাশের সুযোগ আছে বলে রিপোর্টও প্রকাশ করেছিল। এ প্রসঙ্গে ঢাকা বোর্ডের বক্তব্য অটোপাশের সুযোগ নেই।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বড় আকারের পরীক্ষা ছাড়াও মূল্যায়নের নানা পদ্ধতি রয়েছে। কোন শ্রেণিতে প্রথম সাময়িক পরীক্ষায় শিক্ষার্থী কত নম্বর পেয়েছে তার ওপর ভিত্তি করেই শিক্ষক বার্ষিক পরীক্ষায় নম্বর দিতে পারেন। শুধু লিখিত পরীক্ষা নয়, মৌখিক পরীক্ষাও হতে পারে।

বিদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উদাহরণ দিয়ে আমিরুল ইসলাম নামে এক শিক্ষক বলেন, কোনো শিক্ষার্থীর প্রথম সাময়িক পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় গ্রেড নম্বর দেওয়া যায়। যদি কোনো শিক্ষার্থী মনে করে তার প্রাপ্ত গ্রেডের চেয়ে সে বেশি নম্বর/গ্রেড পেত। তাহলে পরবর্তী সময়ে কোনো একসময় সে পরীক্ষা দিতে পারবে।

আজিজুল ইসলাম নামে এক শিক্ষক বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণি শেষে সপ্তম আর সপ্তম শ্রেণির পর অষ্টম শ্রেণি। কোনো শিক্ষার্থী সপ্তম শ্রেণির পাঠ্যবই থেকে জ্ঞান না নিয়ে অষ্টম শ্রেণিতে উঠলে তার নানা ধরনের সমস্যা তৈরি হবে। অনেক বিষয় বুঝতে পারবে না। তাই শিক্ষার্থীর উচিত বন্ধের সময়ও পাঠ্যবই থেকে জ্ঞান আহরণ করা। বার্ষিক পরীক্ষা হবে না এমন ধারণায় বই থেকে দূরে থাকলে শিক্ষার্থীরই ক্ষতি হবে।

ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মোহাম্মদ ফজর আলী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় কোনো পরীক্ষা হয়নি। সবাইকে অটোপাশ দেওয়া হয়েছিল। এই শিক্ষক বলেন, শিক্ষার্থী মূল্যায়নের জন্য বাড়ির কাজ, শ্রেণি কাজ, উপস্থিতি, অ্যাসাইনমেন্ট, গ্রুপ স্টাডিসহ একাধিক বিকল্প আছে। নিজ প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মূল্যায়নের বিষয়ে তিনি বলেন, যদি কোনোভাবেই শিক্ষার্থীদের বসিয়ে আর পরীক্ষা না নেওয়া যায় তাহলে বিকল্পগুলো করা হবে। এছাড়া প্রথম সাময়িক পরীক্ষা পর্যন্ত উপস্থিতি এবং ঐ পরীক্ষার প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করেও শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করা যেতে পারে। এর ভিত্তিতে প্রমোশন দেওয়া হবে। আর যদি সেপ্টেম্বরে প্রতিষ্ঠান খোলা যায় তাহলে সংক্ষিপ্ত সিলেবাস করা হবে। যার মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হবে। এছাড়া প্রতিষ্ঠান চাইলে পরীক্ষার পাশ নম্বরও কমিয়ে আনতে পারে বলে তিনি জানান।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সর্বশেষ