বরিশাল বাণী: “বিশ্ব এখন মহা দূর্যোগের মুখোমুখি। পৃথিবীর এমন কোন জায়গা কিংবা ব্যক্তি নেই যেখানে করোনার প্রভাব পড়েনি। একদিকে করোনার প্রকোপে আমরা অসুস্থ ও মৃত্যুর মুখোমুখি অপরদিকে এর প্রভাবে অর্থনৈতিক মন্দায় জীবন হয়ে উঠেছে দুর্বিসহ। এ অবস্থায় আমরা প্রত্যেকেই যার যার অবস্থান থেকে সমাজের কাছে দায়বদ্ধ। সামর্থ ও সাধ্যানুযায়ী সকলেরই কিছু দায়িত্ব নেওয়া উচিৎ”। বরিশাল বাণী’র সাথে একান্ত সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন বরিশাল জেলা যুবদলের সভাপতি পারভেজ আকন বিপ্লব।
তিনি আরো বলেন, “দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থেকেই আমি লকডাউনের মধ্যে কর্মহীন অসহায় দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের পাশে দাড়ানো উদ্যোগ নেই। এতে সাহস জুগিয়েছে আমার সহধর্মীনি, পরিবার ও আমার বন্ধু-বান্ধব সহ শুভাকাঙ্খিরা। সেই থেকে এখনো মাঠে আছি। বরিশালবাসীর কল্যাণে সাধ্যানুযায়ী আমার প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।”
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলা যুবদলের সভাপতি এই যুবরাজনীতিবিদ স্ব-উদ্যোগে রাতে চমকে দেন এলাকাবাসীকে। নিজ এলাকা কাউনিয়ার একটি সুউচ্চ ভবনে দাড়িয়ে হ্যান্ডমাইক দিয়ে জোরালো কন্ঠে আওয়াজ তুলে। সেখানে তার আহবান ছিলো করোনা প্রতিরোধে সবাইকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার তাগিদ দিয়ে।
এরপর শুরু করেন নিজের দলের বেকারগ্রস্ত নেতা-কর্মীদের তালিকা তৈরী করে তাদের বাড়িতে খাদ্য সহায়তা পৌঁছে দেয়ার কর্মসূচি। দ্বিতীয় ধাপে মধ্যবিত্ত মানুষের দুয়ারে কড়া নাড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
তার ভাষ্য হচ্ছে, তিনি মাঠে নেমে অনুধাবন করেন শুধু দল নয়, সাধারণ এমন কিছু পরিবার রয়েছে যারা লজ্জায় অর্থসঙ্কটেও খাদ্য সহায়তা চাইতে পারছেন না। এমতাবস্থায় তার নিজস্ব ফেসবুক একাউন্টে একটি আবেগী স্ট্যাটাস দেন। সেখানে উল্লেখ করেন, এধরনের কোনো ব্যাক্তি বা পরিবার খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন মনে করলে তার সাথে গোপনে যোগাযোগ করতে পারেন।
ঘনিষ্ট একটি সূত্র জানায়, ফেসবুকে এই ঘোষণা দেয়ার পর অগণিত সংখ্যক মানুষ তাদের কষ্টের বিবরন তুলে ধরতে সেলফোনে যোগাযোগ করেন। কৌশলী এই নেতা যোগাযোগকারীদের নাম-পরিচয় গোপন রেখে একটি তালিকা তৈরী করেন তাদের সহায়তা দেয়ার জন্য।
মাত্র কয়েকজন কর্মী-অনুসারী নিয়ে এই ত্রাণ সামগ্রী নিজ অর্থায়নে সংগ্রহ করে পৌছে দেয়ার উদ্যোগ নেন। সেখানেই ব্যাতিক্রমতায় অলোচনায় আসেন পারভেজ আকন বিপ্লব।
গভীর রাতে অনেকটা নিজেকে আড়াল করার ন্যায় নিজেই সিএনজি চালিয়ে (চাল-ডাল-তেল-আল ও মুরগী) এই ত্রাণ পৌছে দেন অন্তত ১৫শ সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায়।