১১ই নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
বেপরোয়া বালু উত্তোলনে ভেঙ্গে গেছে ২৮ কোটি টাকার বেড়িবাঁধ কুয়াকাটায় ৬ কেজি গাঁ*জাসহ গ্রেফতার-১ বরিশালে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দুই জনের মৃ*ত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১৩১ রোগী বাবুগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের সাংগঠনিক ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত চরফ্যাশনে জামাতাকে জিম্মি করে চাঁ*দা আদায়, শাশুড়িকে ধ*র্ষ*ণ নাজিরপুরে আ.লীগ ও ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার পটুয়াখালীতে পুলিশ কর্মকর্তার বাড়িতে ডা*কা*তি, মা-ভাইকে কুপিয়ে টাকা ও স্বর্ণ লু*ট পটুয়াখালীতে গাজাঁ-ফেনসিডিলসহ মাদক কারবারী গ্রেপ্তার সাবেক পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রীসহ ৩৯ জনের বিরুদ্ধে যুবদল নেতার মামলা উপদেষ্টা হিসেবে বশির-মাহফুজ-ফারুকীর শপথ গ্রহণ

যুগে যুগে অবহেলিত মেডিকেল টেকেনোলজিস্টরা

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

রোগ নির্ণয়ের মূল হাতিয়ার মেডিকেল টেকনোলজিস্ট কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে মানুষ জানে রোগ নির্ণয় ডাক্তার এবং নার্স রা করে থাকেন, একজন রোগীর চিকিৎসা ব্যবস্থা নির্ভর করে তার কি রোগ হয়েছে এবং সেইরোগের উপর ভিত্তি করেই তার চিকিৎসাপত্র চিকিৎসক গণ দিয়ে থাকেন, ধরুন একজন লোকের ডায়াবেটিক হয়েছে, তাকে সারা জীবন তার ইউরিন সুগার, ব্লাড সুগার পরীক্ষা করে মনিটরিং ব্যবস্থায় থাকতে হয়, কারো হার্টের প্রবলেম হয়েছে তাকে সারা জীবন লিপিড প্রোফাইল যেমন টোটাল কোলেস্টেরল, এলডিএল, এইচডিএল, ট্রাই গ্লিসারাইড আরো অন্যান্য টেস্ট করে চলতে হয়, কারো কিডনি ডিজিজ হয়েছে তাকেও সারা জীবন ইউরিক অ্যাসিড, সিরাম ক্রিয়েটিনিন, ইউরিন রুটিন পরীক্ষা সহ অন্যান্য টেস্ট করে যেতে হয়, কারো লিভার ডিজিজ হয়েছে তাকেও সারা জীবন বিলিরুবিন, এসজিপিটি, এসজিওটি, অ্যালকালাইন ফসফেট সহ অন্যান্য টেস্ট করে যেতে হয়, আরো কত জটিল ও কঠিন বা মরণব্যাধি যেমন এইচআইভি, এইসিবি করোনাভাইরাস, ডেঙ্গু, ক্যান্সার, সকল প্রকার ইনফেকশন বের করার জন্য , মাইক্রো বায়োলজিক্যাল টেস্ট : কালচার এন্ড সেনসিটিভিটি টেস্ট (যেমন ব্লাডার ইনফেকশন এর জন্য ব্লাড কালচার ইউরিন ইনফেকশন এজন্য ইউরিন কালচার অন্যান্য বডি ফ্লুইড কালচার করে কি এন্টিবায়োটিক এ সেটা সারবে সেই এন্টিবায়োটিক ডিটেক্ট করে) সহ আরো কত মরন ব্যাধি যে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নামক লোকজন জীবন বাজি রেখে করে যায় তা বলে ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না, এ তো গেল মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ল্যাবরেটরী দের কথা, সিটি স্ক্যান, এম এম আর আই, আল্ট্রাসনোগ্রাম ইসিজি সহ সকল প্রকার এক্সরে রোগ নির্ণয়ের পূর্ব শর্ত, যে কাজ গুলো করে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রেডিওলজিগন, সকল প্রকার বাত ব্যথা প্যারালাইজড মেরুদণ্ডের ব্যথা হাটু শরীরের সকল প্রকার জয়েন্ট এ ব্যথার নিরাময়ের চিকিৎসা করে থাকেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ফিজিওথেরাপিস্টগন, মুখ গহ্বরের ভিতরের যেমন দাঁতের সকল প্রকার চিকিৎসা এবং দাঁতের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ডেন্টিস্টগন, ক্যান্সার চিকিৎসায় অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রেডিও থেরাপিস্টগন, যেমন কতটুকু রেডিয়েশন দিতে হবে সেটা সে সঠিক পদ্ধতিতে এবং সঠিকভাবে দিয়ে থাকেন। প্রত্যেকটা প্রফেশন তার প্রফেশনাল অধিকার অনুযায়ী কাজ করবে এটাই তার অধিকার, যেমন সকল প্রফেশন তার অধিকার অনুযায়ী প্রফেশনাল কাজগুলো করে থাকে, যেমন চিকিৎসক রোগীকে চিকিৎসা দিবে এটা তার প্রফেশনাল অধিকার এবং দায়িত্ব, নার্স রোগীর সেবা করবে এটা তার প্রফেশনাল অধিকার এবং দায়িত্ব অন্যান্য প্রফেশন ঠিক এমনটাই, সেইসাথে প্রফেশন হিসেবে প্রত্যেকেই স্বাধীন, এবং প্রত্যেকে তার প্রফেশন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করে এবং সেই প্রফেশনের উন্নতি সাধনে সর্বাত্মক চেষ্টা করে, আর সেই প্রফেশন যদি পরাধীন হয়ে, অন্য প্রফেশন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়ে থাকে , নিয়ন্ত্রিত প্রফেশনের কখনো উন্নতি হয় না এবং নিয়ন্ত্রিত প্রফেশনটা বিলুপ্তি হয় এটাই স্বাভাবিক, একজন মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল একজন ডাক্তার হয়, নার্সিং ইনস্টিটিউটের এর প্রিন্সিপাল নার্স হয়, কৃষি ডিপ্লোমার প্রিন্সিপাল কৃষি ডিপ্লোমা করা লোকজন হয়, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল পলিটেকনিক পাস করা লোকজন হয়, অর্থাৎ যার যার প্রফেশন তাদের দ্বারাই নিয়ন্ত্রিত হয়, এজন্যই সকল প্রফেশন উন্নতি এবং সেই প্রফেশনে এর কার্যক্রম উন্নতি হয়েছে। এতে মানবজাতির স্বাস্থ্যসেবার চরম উন্নতি বা সেবা পেয়ে থাকে,একমাত্র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রফেশন অন্য প্রফেশন দারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, ফলশ্রুতিতে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রফেশন কখনো উন্নতি বা আলোর মুখ দেখতে পায় নাই, আর এ অবস্থায় থাকলে কখনো উন্নতির কথা ভাবাই যায় না, যে কারণেই বাংলাদেশের মেডিকেল টেকনোলজি এডুকেশন যুগের সাথে বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পারেনি, এতে বাংলাদেশের মানুষ সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। মানুষ উন্নত চিকিৎসার জন্য দেশের বাহিরে চলে যায়, এতে করে যেমন আমাদের রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হয় তেমনি মানুষের অর্থ অপচয় করতে বাধ্য হয়। অথচ বাংলাদেশের স্বাস্থ্যের কর্তা ব্যক্তিরা বলে থাকেন বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নাকি বিশ্বমানের হয়েছে, তাহলে প্রশ্ন ন্যূনতম সামর্থ্য থাকলেই কেন উন্নত চিকিৎসার জন্য কোন উন্নত দেশে না যেতে পারলেও ইন্ডিয়ার মত দেশে যেতে বাধ্য হয় (যারা অধিকাংশ লোক ঐএখনো টয়লেট করাই শেখে নাই)। দেশের ধনি শ্রেনী বা গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিদের কথা নাইবা বললাম(উনারাতো পার্সোনাল এয়ারক্রাফট করে চলে যান)। পৃথিবীর কেউ, কাউকে, কোন গোত্র, কোন পেশা কে, কেউ দমিয়ে রাখতে পারে নাই, একমাত্র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট পেশাকে দমিয়ে রাখা হয়েছে, বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন নিয়ে সোনার বাংলা গড়েছিলেন যে এই দেশে সবাই স্বাধীনভাবে মাথা উঁচু কই বেঁচে থাকবে, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলায় আজও মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রা স্বাধীনতার শুফল ভোগ করতে পারে নাই, যে কারণেই স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ মেডিকেল টেকনোলজিস্ট দের যে কয়টা পদ তৈরি হয়েছিল সে কয়টি পদ ই রয়ে গেছে অর্থাৎ স্বাধীনতার সময় সাত কোটি মানুষের রোগ নির্ণয়ের জন্য যে কয়জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ছিল আজ 2020 সালে ১৮ কোটি মানুষের রোগ নির্ণয়ের জন্য সেই কয়জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রয়ে গেছে, যে কারণেই ১২ বছর যাবত মেডিকেল টেকনোলজিস্ট দের নিয়োগ দেওয়া হয় না, অথচ হাজার হাজার ডাক্তার নার্স নিয়োগ হয়েছে, এখন হাসপাতলে ঢুকলে দেখা যায় নার্সের সাথে নার্স, ডাক্তার এর সাথে ডাক্তারের গায়ে গায়ে ধাক্কা লাগে, এটা এদেশের মানুষকে সঠিক রোগ নির্ণয় ও স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত করা, যে কারণে মানুষ স্বাস্থ্য সেবা নিতে প্রাইভেট হসপিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ছে, যা সাধারণ মানুষের নাগালের বাহিরে, ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের মানুষ শুধু স্বাস্থ্যসেবা থেকেই বঞ্চিত হচ্ছে না বরং সরকারের বিশাল রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এর বিজনেস প্রাইভেট সেক্টরে রমরমা ব্যবসায় পরিণত হয়েছে, অথচ রোগ নির্ণয়ের জন্য মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ হলে এদেশের মানুষ যেমন ধনী গরিব কৃষক শ্রমিক মেহনতী মানুষের সঠিক স্বাস্থ্য সেবা পেত সেই সাথে সরকারের রাজস্ব বড় রকমের একটা ক্ষেত্র তৈরি হতো। সকল প্রফেশনের প্রমোশনাল সিস্টেম থাকলেও একমাত্র মেডিকেল টেকনোলজিস্ট প্রফেশনের প্রফেশনাল সিস্টেম পৃথিবীর নিকৃষ্টতম করা হয়েছে, নিকৃষ্টতম বলার কারণ এইযে ১৮ তম গ্রেডের অ্যাটেনডেন্ট, কম্পাউন্ডার টেকনিশিয়ান ডার্করুম অ্যাসিস্ট্যান্ট এদেরকে কোন সার্টিফিকেশন কোন প্রফেশনাল কোর্স ছাড়াই ১১ তম গ্রেডে পদোন্নতি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার দায়িত্বপ্রাপ্তরা। অর্থাৎ রোগ নির্ণয়ঃ এত গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় কে সবচাইতে নিকৃষ্টতম অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার নিকৃষ্টতম কৌশল, যে কারণে সকল প্রফেশনের রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থা বিদ্যমান থাকলেও রোগ নির্ণয়ের মূল হাতিয়ার দের রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থার আওতায় আনা হয়নি, তাদের স্বাধীনতা তো দূরে থাক। একজন রিকশাচালক, একজন গাড়ির ড্রাইভার সেগুলো চালাতেও তাকে তার লাইসেন্সিং থাকা বাধ্যতামূলক, অথচ মানুষকে নিয়ে যাদের কাজ অর্থাৎ মানুষের সঠিক রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা ব্যবস্থা করবে তাদের কোন লাইসেন্স লাগেনা, মানুষকে ধোকা দেওয়ার অপকৌশল। যার ফলশ্রুতিতে মানুষ মারার ভয়ানক ব্যক্তি যেমন রিজেন্ট গ্রুপের মালিক শাহেদ সাহেব, জেকেজির প্রধান ডাক্তার সাবরিনা দের মত নাম না জানা হাজার হাঙ্গর দের পদচারণায় মানুষের মৌলিক অধিকার রোগ নির্ণয়ের শঙ্কায় দেশের মানুষ যেমন শঙ্কিত, বহিঃ বিশ্বে ও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং হচ্ছে, যা করোনাকালীন সময়ে এদেশের মানুষ এবং পৃথিবীর মানুষ প্রত্যক্ষভাবে দেখতে পেরেছে। তাই বঙ্গবন্ধ স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন, যে দেশের সকল মানুষ মাথা উঁচু করে বাচবে, সমান সুযোগ সমান অধিকার পাবে, সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করার জন্য জনো বঙ্গবন্ধু কন্যা, বিশ্বনেত্রী, প্রধানমন্ত্রী বরাবর আকুল আবেদন যেন রোগ নির্ণয়ের প্রধান হাতিয়ার মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের পেশাগত রেজিস্ট্রেশন অন্যান্য প্রফেশন যেমন নার্সদের মত স্বতন্ত্র স্বাধীন পেশা হিসেবে মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের রেজিস্ট্রেশন ব্যবস্থাপনা এবং স্বতন্ত্র অধিদপ্তর করে এদেশের মানুষের মৌলিক অধিকারের গুরুত্বপূর্ণ একটা অধিকার স্বাস্থ্য অধিকার বাস্তবায়ন করে বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়ন করুন, মেডিকেল টেকনোলজিস্টদের পক্ষ থেকে আপনার কাছে আকুল আবেদন জানাই।

দীন মোহাম্মদ তাহের, প্রভাষক

সর্বশেষ