ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে রাতের আঁধারে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে বিভিন্ন ইটখলায় নেওয়া হচ্ছে। স্কেভেটর দিয়ে ফসলি জমির উপরের অংশ ট্রাকে করে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে ইটভাটায় ও বিভিন্ন স্থাপনা ভরাট কাজে। এতে নষ্ট হচ্ছে শত শত বিঘা ফসলি জমি। অতিরিক্ত ওভারলোডিং-এর ফলে নষ্ট হচ্ছে গ্রামীণ রাস্তা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নড়াইল, ধারা, ধুরাইল ও স্বদেশী, জুগলী ইউনিয়নের বিভিন্নস্থানে চলছে ফসলি জমি থেকে মাটি কাটার উৎসব। একমাস ধরে রাত ৮টা থেকে ভাররাত পর্যন্ত অন্তত ১০ থেকে ১৫ টি স্থান থেকে মাটি কেটে নেওয়া হচ্ছে। উপজেলায় বৈধ অবৈধ মিলিয়ে প্রায় ১৫টি ইটভাটা আছে। এসব ইটভাটায় মাটির চাহিদা পূরণ করতে কৃষিজমি থেকে মাটি নেওয়া হচ্ছে দীর্ঘদিন ধরে। মাটি ব্যবসায়ীরা কৃষকের কাছ থেকে কাঠাপ্রতি জমির মাটি কিনে নেন ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক কৃষক বলেন, ব্যবসায়ীরা তাদের মাটি বেচার ব্যাপারে উৎসাহিত করছে। জমির কোনো ক্ষতি হবে না। বর্ষা এলে জমির সেই মাটি পূরণ হয়ে ফসল ফলানো যাবে।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, কৃষকদের যে সকল জমিতে চাষাবাদ হয় না সেসব জমির মাটিগুলো আমাদের কাছে বিক্রি করেন। আমরা এগুলো ইট-ভাটা ও ভিটা বাড়ির ভরাটের কাজে বিক্রি করে থাকি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান বলেন, মাটির উপরিভাগের ১০-১৫ ইঞ্চির মধ্যে উর্বরতা শক্তি থাকে। মাটি খুঁড়ে বিক্রি করার ফলে তা পুনরায় ফিরে আসতে সময় লাগে। এ ছাড়া মাটির এই অংশে যে কোনো ফসল বেড়ে উঠার গুণাগুণ সুরক্ষিত থাকে। বীজ রোপণের পর এই অংশ থেকেই ফসল প্রয়োজনীয় খাদ্য উপাদান গ্রহণ করে বড় হয়। এটাকে টপ সয়েল বলে। এই টপ সয়েল একবার কেটে নিলে সে জমিতে আর প্রাণ থাকে না।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেজাউল করিম বলেন, গত কৃষি সভায় ইটভাটার লোকজনদের নিয়ে বিষয়টি আলোচনা করা হয়েছে। টপ সয়েল বিক্রির বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে কৃষকদের সচেতন করতে। সচেনতনতার পরে যদিও কেউ অমান্য করলে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
