আমি নগন্য একজন সংবাদকর্মির পাশাপাশি শিক্ষাকতা পেশায় কর্মরত আছি।রয়েছে নিজস্ব ঔষধের ব্যবসায়।
শিক্ষাকতা শেষে ফার্মেসিতে সময় দেওয়ার কারণে দেশের প্রায় সব ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধির সাথে ভালো সম্পর্ক রয়েছে।
টপটেনের একটা কোম্পানির প্রতিনিধি চায়ের আড্ডায় আক্ষেপ করে আমাকে বললেন, ভাই মন ভালো নেই, যেকোনো সময় চাকরি চলে যেতে পারে।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, চাকরি চলে যাওয়ার কারণ কি?
নাম প্রকাশ না করা শর্তে ওই প্রতিনিধি বলেন, আমি একজন মুসলমান হিসেবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করি, মুখে দাঁড়ি রেখেছি।আমাদের কোম্পানির জোনাল ম্যানেজার প্রতিনিধিদের মধ্যে যারা মুখে দাঁড়ি রেখেছেন, তাদেরকে আগামী জোনাল মিটিংয়ে দাঁড়ি কর্তন না করে আসলে মিটিংয়ে প্রবেশ করতে না দেয়ার পাশাপাশি চাকরি থেকে ছাটাই করার মৌখিক আদেশ দিয়েছেন।’
আমি একজন সংবাদকর্মি হিসেবে বিষয়টি আমাকে ভাবিয়ে তোলে। সিদ্ধান্ত নিলাম বিষয়টি নিয়ে নিউজ করবো। আমি কয়েকজন কোম্পানির প্রতিনিধি এবং সংশ্লিষ্ট জোনাল ম্যানেজারের বক্তব্য নিলাম।
গুগুল সার্চ করে কোম্পানির কারখানার ছবি ও লেগো সংগ্রহ করে বরিশালের জনপ্রিয় অনলাইন ‘ বরিশাল বানী’ তে ‘ দাঁড়ি রাখলে চাকরি থেকে ছাটাই ‘ শিরোনামে একটা সংবাদ প্রকাশ করি।
প্রকাশিত সংবাদটি ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিগণ (ফারিয়া) নামক গ্রুপে শেয়ার করি। অল্প সময়ের মধ্যে প্রায় লাখ শেয়ার ও হাজার হাজার মানুষ এতে বিভিন্ন মন্তব্য করেন। সংবাদটি ওই কোম্পানির বড় কর্তাদের নজরে আসলে প্রথমে অনলাইন কর্তৃপক্ষকে লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণের সিদ্ধান্ত নিয়ে ও পরে তারা নিজেদের দুর্বললতার কথা বুঝতে পেরে লিগ্যাল নোটিশ করেনি।
সংবাদ প্রকাশের পর টনক নড়ে ওই কোম্পানির, বরিশালের জোনাল ম্যানেজার ও সরকারি বিএম কলেজের একজন অধ্যাপকসহ ‘ বরিশাল বানী’র সম্পাদকের সঙ্গে দেখা করে জানান,তারা এধরণের কাজ আর করবেন না।
পরবর্তীতে জনরোষের আতংক ও ব্যবাসিয়ক ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্য তাঁরা
মার্কেটং ঠিক রাখতে তাদের কোম্পানিরতে কর্মরত দাঁড়িওয়ালা প্রতিনিধিদের ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে ক্যাপশনে লিখেন,’দাঁড়ি রেখেও তাদের কোম্পানিতে চাকরি করা যায়’।
পরবর্তীতে দাঁড়ি রাখা প্রতিনিধিদের চাকরি থেকে ছাটাই করার পরিবর্তে, চাকরি নিশ্চিত হয়েছে সংবাদের কারণে।
লেখক:
এম লোকমান হোসেন
ধর্মবিষয়ক সম্পাদক (সাবেক)
চরফ্যাশন প্রেসক্লাব,ভোলা।