৯ই ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করলো দুই বন্ধু

হারুন অর রশিদ, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি।
বরগুনার আমতলীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে দুই বখাটে মেহেদী (২০) ও রাসেল (২২) কর্তৃক পঞ্চম শ্রেণীর এক স্কুল ছাত্রীকে (১২) ধর্ষণ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। ধর্ষণ শেষে স্কুল ছাত্রীর নগ্ন ছবি তুলে মোবাইল ফোনে ধারণ করে পুনঃরায় তাদের ডাকে সারা না দিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার হুমকি প্রদান করেছে বলে ধর্ষণের শিকার ভিকটিম স্কুল ছাত্রীটি অভিযোগ করেন। মান-সম্মানের ভয়ে ভিকটিমের অভিভাবক আইনগত কোন পদক্ষেপ নিতে সাহস পাচ্ছেন না। আজ মঙ্গলবার স্বজনরা ভিকটিম স্কুল ছাত্রীকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

জানাগেছে, উপজেলার মহিষডাঙ্গা গ্রামের বারেক মৃধার পুত্র ট্রাকের হেলপার বকাটে মেহেদী পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডেও ৫ম শ্রেনীর এক স্কুল ছাত্রীকে গত ৬ মাস ধরে উত্যাক্ত করে আসছিল। কিন্তু বখাটের প্রেমের প্রস্তাবে প্রথমে রাজি হয়নি ওই স্কুল ছাত্রী। কিন্তু গত ৩ মাস পূর্বে বখাটে মেহেদী ওই ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে।

গত ৭ নভেম্বর শনিবার বিকেলে বকাটে মেহেদী ওই স্কুল ছাত্রীর সাথে দেখা করবে বলে পৌর শহরের নতুন বাজার বাঁধঘাট চৌরাস্তা সংলগ্ন হোটেলে সকাল সন্ধ্যায় আসতে বলে। ভিকটিম স্কুল ছাত্রীটি মেহেদীর কথামত ওই হোটেলে যায় দেখা করতে। এসময় মেহেদী তার বন্ধু রাসেলকে নিয়ে ওই হোটেলে ভিকটিম স্কুল ছাত্রীর সাথে দেখা করতে আসে। এসময় মেহেদী তার ভাবীকে দেখানোর কথা বলে কৌশলে ওই স্কুল ছাত্রীকে হোটেলের সামনে জনৈক সোলায়মানের বাসায় নিয়ে যায়। ওই সময় সোলায়মান বাসায় থাকলেও দুই বখাটে ও স্কুল ছাত্রীকে ঘরে তুলে দিয়ে ঘরের বাহির থেকে তালা দিয়ে সোলায়মান বাসা থেকে চলে যায়। ওই বাসায় বসে দুই বন্ধু মিলে ভিকটিম ওই ছাত্রীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে বলে ভূক্তভোগী ছাত্রী অভিযোগ করেন।

ধর্ষণ শেষে ভিকটিম ওই স্কুল ছাত্রীর নগ্ন ছবি তুলে মোবাইল ফোনে ধারণ করেন দুই বখাটে দুই বন্ধু। এই ধর্ষণের ঘটনা কাউকে জানালে এবং পুনঃরায় তাদের ডাকে সারা না দিলে ওই ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ায় ভয় দেখিয়ে ভিকটিম ছাত্রীটিকে ছেড়ে দেয়। ওই দিন রাতেই বাসায় গিয়ে ধর্ষণের স্বীকার ভিকটিম স্কুল ছাত্রী এ ঘটনা তার পরিবারকে জানায়। মেয়ের নগ্ন ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়ার ভয়ে ওই স্কুল ছাত্রীর অভিভাবকরা এ ঘটনায় এতদিন পর্যন্ত কোন আইনি পদক্ষেপ নিতে সাহস পায়নি।

গতকাল সোমবার রাতে ওই দুই বখাটে মুঠোফোনে পুনঃরায় ভিকটিম স্কুল ছাত্রীকে তাদের সাথে একটি নির্জন স্থানে দেখা করতে বলেন। নিরুপায় হয়ে স্বজনরা আজ (মঙ্গলবার) সকালে ওই স্কুল ছাত্রীর নমুনা পরীক্ষার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছেন।

স্কুল ছাত্রীর বাবা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়ের নগ্ন ছবি ছেড়ে দেয়ার ভয়ে আমি এতদিন এ বিষয়ে কোন আইনি পদক্ষেপ নিতে সাহস পাইনি। আমি এ ঘটনার বিচার চাই ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের প্রশাসক ডাঃ শংকর প্রসাদ অধিকারী মুঠোফোনে বলেন, ভূক্তভোগী ওই ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করে তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। আগামী দুইদিন পরে এ নমুনার প্রতিবেদন পাওয়া যাবে।

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) মোঃ হেলাল উদ্দিন মুঠোফোনে বলেন, সংবাদ পেলে হাসপাতালে গিয়ে ভিকটিম ওই স্কুল ছাত্রীর সাথে কথা বলেছি। এ বিষয়ে দ্রুত আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।

Print Friendly, PDF & Email

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

সর্বশেষ