মামুনুর রশীদ নোমানী :
সম্প্রতিকালে ফেসবুক বা অন্য কোন সোস্যাল মিডিয়া বা কোন অনলাইন পোর্টালে প্রবেশ করা মাত্র হরেক রকমের অনলাইন বিজনেসের গ্রুপ,পেজ ও সাইট সামনে চলে আসে। আমি অনলাইনে টুকটাক অর্ডার দেই। অর্ডারের মধ্য বই থাকে বেশী। এর পরে খাবার,সৌখিন জিনিষপত্র মানিব্যাগ ইত্যাদি। লিষ্টে কাপড়ও রয়েছে। বইতে এখনো প্রতারিত হইনি তবে বিভিন্ন সময়ে বইয়ে থাকা মুল্যের চেয়ে দিগুন বেশী দাম নিয়েছে। কম্পিলিন দিয়েছি। উত্তর এখনো আসেনি। আগষ্ট মাসে দুটি মানি ব্যাগের অর্ডার দিলাম দুটোই এসেছে। তবে অর্ডার অনুযায়ী একটি আরেকটি এসেছে ভিন্ন ধরনের। আমি নিয়েছি কুরিয়ার থেকে। ক্যাশ অন ডেলিভারি। ফেরৎ দেয়ার সুযোগ থাকলেও ফেরৎ দেইনি। দুটো মানি ব্যাগের মধ্য একটি ছিল যথেষ্ট নিম্মমানের। ঢাকা শহরের পল্টন এলাকা বা বাইতুল মোকাররম বা মতিঝিলের ফুটপাতের মানি ব্যাগ অর্ডার করা মানি ব্যাগের মান থেকে অনেক ভালো।
সরিষা তেল,মধু,খেজুর,চকলেট অনলাইনে অর্ডার করেছি। যথা সময়ে পেয়েছি। কোন কম্পিলিন নেই।
অনলাইন শপিংয়ের আরও নানা ফাঁদ আবিষ্কার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সম্প্রতি ফেসবুকে কিছু প্রতারক চক্র বিভিন্ন ব্যবসায়িক নামে অনলাইন শপিংয়ের পেজ খুলে স্মার্টফোন বিশেষ মূল্য ছাড়ে বিক্রি করার বিজ্ঞাপন দিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা করছে। এসব অনলাইন শপ থেকে পণ্য অর্ডার করে কেউ পাচ্ছেন নষ্ট পুরনো মোবাইল, আবার কেউ পাচ্ছেন খালি প্যাকেট।
এসব অনলাইন শপের বাহারি অফার সহজেই মন কেড়ে নেয় যে কোনো অজ্ঞ ক্রেতার। বাজার থেকে কম মূল্যে ব্র্যান্ড নিউ মোবাইল ফোন বিক্রির প্রলোভনমূলক এসব বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পা দিচ্ছেন অনেকেই। কয়েক সপ্তাহ আগের ঘটনা। স্কুলছাত্র শাহাদাৎ হোসেন আলভী (১৪) কোরিয়ান ফোন মার্ট নামক ফেসবুকের একটি অনলাইন শপ থেকে ৪,৫০০ টাকা দিয়ে একটি আইফোন এক্স এর মাস্টার কপি অর্ডার করে পায় শুধু খালি প্যাকেট। পরবর্তীতে ক্রেতা আলভী তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে আশানুরূপ কোনো তথ্য পায়নি। এসব অনলাইন শপ বিশেষ ডিসকাউন্ট দিয়ে আপনাকে যে কোনো স্মার্টফোন দিতে চাইবে, বলবে কোরিয়ান এক কোম্পানি এই ডিসকাউন্ট দিচ্ছে। এখান থেকে মোবাইল অর্ডার করলে আগেই ডেলিভারি খরচ ১০০/১৫০ টাকা বিকাশ করতে হবে, বাকি টাকা পার্সেল পৌঁছানোর পর দিতে হবে। বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে পার্সেল পাঠায় এসব প্রতারক চক্র। সাধারণত কুরিয়ার থেকে পার্সেল নেওয়ার আগে টাকা জমা দিতে হয়, কারণ এ ধরনের ঝামেলা এড়াতে কুরিয়ার সেবার প্রতিষ্ঠানগুলোর এটি একটি প্রক্রিয়া। সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ে দারাজের সাইট থেকে স্যামসং ফোন অর্ডার করে হুইল সাবান পাওয়ার বিষয়টি ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
এসব ফাঁদে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কিশোর-কিশোরী, অনলাইন প্রতারণার ক্ষেত্রে অজ্ঞ এমন মানুষই বেশি পতিত হয়ে আসছে। প্রতিদিন সারা দেশ থেকে কত মানুষ নিয়মিত এভাবে প্রতারিত হচ্ছে তার কোনো ইয়ত্তা নেই।
সাইবার ক্রাইমের বিশেষ টিম নিয়মিত এরকম প্রতারক চক্র গ্রেফতার করছে, তারপরও এদের দৌরাত্ম্য যেন কমছেই না। বিশেষ করে জাতীয় কিছু উৎসবের সময় যখন মানুষ কেনাকাটার দিকে একটু বেশি ঝুঁকে, ঠিক এমন সময় এসব অনলাইনের প্রতারক চক্রগুলো আরও বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। নানারকম লোভনীয় অফার দিয়ে অনলাইন প্রতারণার ফাঁদে ফেলছে সাধারণ মানুষকে। কাজেই এসব অনলাইন শপ থেকে সাবধান!
অভিজ্ঞতা হল…..
১. এখন আর না দেখে যাচাই বাছাই ছাড়া কোন পন্য ডেলিভারি নিবনা।
২. টাউট বাটপার মার্কা অনলাইন শপে অর্ডার দিবনা।
৩.যাদের গ্রহনযোগ্যতা নেই অখ্যাত অনলাইন শপে কোন কেনা অর্ডার দিবনা।
৪.যারা অগ্রিম টাকা চায় তাদেরকে কোন অর্ডার করবোনা টাকা দিয়ে।
৫.ক্যাশ অন ডেলিভারি নীতি মেনে চলবো বিগত দিনের ন্যায়।
৬.অর্ডার অনুযায়ী পন্য না দিলে কুরিয়ার থেকে গ্রহন করবোনা।