১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

আগৈলঝাড়ায় শিকলে বেঁধে বিবস্ত্র ছবি তুলে গৃহবধূকে মধ্যযুগীয় নির্যাতন

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

শামীম আহমেদ :: বোনের শ্বশুড় বাড়িতে বেড়াতে এসে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন এক গৃহবধূ। বোনজামাতার সাথে বিরোধের জেরধরে প্রতিপক্ষের লোকজনে এ হামলা চালিয়েছে। এসময় ওই গৃহবধূকে শিকল দিয়ে গাছের সাথে বেঁধে বিবস্ত্র করে ছবি তোলার অভিযোগ উঠেছে।

খবর পেয়ে মঙ্গলবার সকালে থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে নির্যাতনের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছেন। ঘটনাটি জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলার দক্ষিণ বাগধা গ্রামের। উপজেলা হাসপাতালে শষ্যাশয়ী নির্যাতিতা গৃহবধূ পারভীন বেগমের (২৮) বাড়ি পিরোজপুরের স্বরুপকাঠী উপজেলার কাটাখালী গ্রামে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দক্ষিণ বাগধা গ্রামের কাশেম খানের সাথে একই বাড়ির ইমদাদুল হক বাহাদুরের বাড়ির প্রবেশ পথ নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে বিরোধ চলে আসছে। অতিসম্প্রতি কাশেম খান বাড়িতে প্রবেশের পথে বেড়া দেয়ায় ইমদাদুলসহ কয়েকটি পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পরে।

স্থানীয় একটি মসজিদের ইমাম ইমদাদুল হক বাহাদুর জানান, গত রবিবার বিকেলে তাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে তার স্ত্রী শিল্পী বেগমের ছোট বোন পারভীন বেগম, সুমি আক্তার ও ছোট ভাই শাহজালাল। তারা প্রতিপক্ষ কাশেম খানের বাড়ির পাশ দিয়ে তাদের বাড়িতে প্রবেশের সময় কাশেম খানের পুত্র ইলিয়াস খান ও তার স্ত্রী রেখা বেগম তাদের পথরোধ করে। এসময় বাগ্বিতন্ডার একপর্যায়ে ইলিয়াস তার স্ত্রী রেখা ও পুত্র আহাদ বেড়াতে আসা পারভীনের ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে হামলাকারীরা পারভীনকে প্রথমে রশি এবং পরে লোহার শিকল দিয়ে বাড়ির একটি আমড়া গাছের সাথে দুটি তালা দিয়ে আটকে রাখে। মারধরের সময় পারভীনের শরীরের পরিধেয় বস্ত্র ছিড়ে গেলে প্রায় বিবস্ত্র অবস্থায় মোবাইল ফোনে ছবি ও ভিডিও ধারণ করে ইলিয়াসের পুত্র আহাদ। মারধরের হাত থেকে পারভীনকে উদ্ধার করতে যাওয়ায় তার বোন সুমি ও ভাই শাহজালালকেও মারধর করা হয়।

খবর পেয়ে স্থানীয় গ্রামপুলিশ পরেশ দাস ঘটনাস্থলে পৌঁছে শিকলে বাঁধা পারভীনকে উদ্ধার করে। পরবর্তীতে আহত পারভীনকে হাসপাতালে নিতে বাঁধা প্রদান করে হামলাকারীরা। সোমবার দুপুরে পারভীন গুরুত্বর অসুস্থ্য হয়ে পরলে তাকে উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

মঙ্গলবার দুপুরে ইমাম ইমদাদুল হক বাহাদুর জানিয়েছেন, এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।

আগৈলঝাড়া থানার ওসি মোঃ গোলাম ছরোয়ার বলেন, খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে প্রত্যক্ষদর্শী ও হাসপাতাল পরিদর্শন করে নির্যাতিতার বক্তব্য রেকর্ড করেছেন। ভূক্তভোগীর পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

সর্বশেষ