আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি ::: বরগুনার আমতলীর গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিাড়ি গ্রামে একটি ইটভাটায় দাদনের ৪০ হাজার টাকা আদায়ের জন্য শিকলে বেধে সর্দারের নির্যাতনে আনিছ গাজী নামক এক শ্রমিকে মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রবিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় তার মৃত্যু হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নতদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে পাঠিয়েছে।
জানা গেছে, আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের কালিবাড়ি গ্রামে অবস্থিত ‘ইসলাম এন্ড সন্স’ নামে একটি ইটভাটায় শ্রমিকের কাজ করতেন একই ইউনিয়নের ডালাচারা গ্রামের মৃত চানমিয়া গাজীর ছেলে আনিছ গাজী (৫০)। দুই মাস আগে তিনি ভাটার সর্দার ছালাম চৌকিদারের নিকট থেকে ৪০ হাজার টাকা দাদন নেন। দাদন নিয়ে কয়েক দিন কাজ করে ৮দিন পূর্বে আনিছ বাড়ি চলে যান। বাড়ি যাওয়ার পর সে আর কাজে ফিরে না আসায় গত বৃহস্পতিবার রাতে সর্দার ছালাম চৌকিদার ও খালেক আনিছ গাজীকে তার বাড়ী থেকে ধরে এনে ভাটায় থাকার ঘরে শিকলে বেধে রাখেন এবং নির্যাতন করেন। নির্যাতনে রবিবার সকালে তার মৃত্যু হয় বলে দাবী স্ত্রী ফিরোজা বেগমের। তার মৃত্যুর খবর পেয়ে আমতলী থানার পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রবিবার সন্ধ্যায় বরগুনার মর্গে পাঠায়।
স্ত্রী ফিরোজা বেগম অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামী আনিছ গাজীকে ছালাম সর্দার ও খালেক ধরে এনে ভাটার থাকার ঘরে পায়ে শিকল পরিয়ে রেখে নির্যাতন করে। নির্যাতনে অসুস্থ হয়ে তিনি মারা যন। আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
নির্যাতনে শ্রমিক আনিছ গাজীর মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পরার পর ওই ভাটার সকল শ্রমিকরা পালিয়ে গেছে বলে জানান নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। তারা বলেন- বর্তমানে ভাটার কাজ বন্ধ রয়েছে।
নির্যাতনে শ্রমিকের মৃত্যুর খবর পেয়ে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. আব্দুস ছালাম, আমতলী -তালতলী সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো, রুহুল আমিন ও আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখয়াত হোসেন তপু ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
ভাটার মালিক মো ফারুক গাজী বলেন, সর্দার কাকে দাদন দিয়েছে এ বিষয়টি আমার জানা নেই। শ্রমিকের মৃত্যুর বিষয়ে বলেন- শুনেছি অসুস্থ হয়ে মারা গেছে।
আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখয়াত হোসেন তপু বলেন, লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনার মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বরগুনার পুলিশ সুপার মো. আব্দুস ছালাম বলেন, তদন্ত চলছে। এ ঘটনার সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।