বরগুনা প্রতিনিধি ::: বরগুনার আমতলীতে বালুবাহি জাহাজ পার করতে গিয়ে একটি লোহার ব্রিজের একাংশ ভেঙে ফেলছে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই। জানা গেছে ব্রিজটির নিচ থেকে ঠিকাদারি কাজের মালামাল নেয়ার জন্যই ব্রিজের মধ্যের অংশ খুলে ফেলার অভিযোগ তার বিরুদ্ধে।
উপজেলার সদর ইউনিয়নের গোলবুনিয়া ও আড়পাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের খোন্তাকাটা খালের উপরে অবস্থিত এই ব্রিজটি। প্রতিদিন এই গুরুত্বপূর্ণ ব্রীজটি দিয়ে ০২টি ইউনিয়নেয় প্রায় ১০-১২ হাজার মানুষ যাতায়াত করে।
এবিষয়ে ওই গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কিছুদিন আগে আমতলী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোতাহার মৃধার ছোট ভাই সিদ্দিক মৃধা, ‘তার ঠিকাদারি কাজের মালামাল নেয়ার জন্য ব্রিজের মধ্যাংশে বালুবাহী জাহাজ দিয়ে ধাক্কা দেয়। এতে ব্রিজের মধ্যের অংশ খুলে পড়ে যায়। এরপর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের ভাই সিদ্দিক মৃধা রাতের আঁধারে কিছু শ্রমিক দিয়ে সেতুটির মাঝখানের খুঁটিগুলো খুলে একপাশে বেঁধে দেয়। ব্রিজের উপর দিয়ে মানুষের হাঁটা চলার জন্য কিছু বাঁশ দিয়ে চলাচল উপযোগী করে দেন তিনি।
এবিষয়ে স্থানীয় কালাম গাজী ও জামাল মিয়া বলেন, চেয়ারম্যানের ভাই সিদ্দিক মৃধা কাজ পাইছে ওই সামনে। সেই কাজের মালামাল জাহাজে করে নেয়। সেই জাহাজের ধাক্কায় ব্রিজ ভেঙে যায়। ব্রিজের নিচ থেকে সবসময় জাহাজ নেয়ার জন্য মাঝখানের খুঁটি খুলে এক পাশে বেধে দেয়। আমতলীতে তাদের অনেক ক্ষমতা। তাদের বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস এই এলাকায় কেহোর নাই।
কথা হয় খোন্তাকাটা গ্রামের মনির হাওলাদার সাথে। ব্রিজ ভাঙার বিষয় জিজ্ঞাসা করলে তিনি বলেন, আমতলী সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোতাহার মৃধার ভাই সিদ্দিক মৃধা তার জাহাজ নিয়ে ব্রিজ ভাঙে ফেলেছে। এরপর ফ্রিজের নিচ থেকে সব সময় মালামাল নেওয়ার জন্য ব্রিজের খুঁটি খুলে ফেলেছে। কেউ প্রতিবাদ করার বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, হ্যাঁগো বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস এই আমতলীতে কারো নাই। আমরা কথা কইলে একটা মামলা দিয়ে আমাগো জেলে ঢুকাইয়া দেবে। এমনকি মারতেও পারে। আমতলী থানায় কেউ হ্যাগো থামাইতে পারে? হ্যাঁগো ওসিও থামাইতে পারেনা! হ্যাঁগো যদি থানার ওসি থামাইতে পারে হ্যালে ওসিরে আমি আব্বা বোলামু। আমরা নিরীহ মানুষ দিন আনী দিন খাই এসব বিষয়ে আমরা কোন কথা বলতে পারমুনা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিদ্দিক মৃধা বলেন, আপনারা সাংবাদিক। যেকেউ হোক আপনাদের খবর দিয়েছে। তা নাহলে আপনারা এখানে আসতেন না। আপনারা যেমন সাংবাদিক আমাদেরও ভাই বেরাদার সাংবাদিক আছে! তাই এটা নিয়ে আর কিছু বলার নাই ভাই। আমরা সবকিছুই বুঝি সন্ধ্যায় আমার সাথে দেখা কইরেন। ব্রিজের খুটি খোলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, একজন নাগরিক হিসেবে আমার একটা দায়িত্ব আছে না! মানুষে ব্রিজের মালামাল নিয়ে যাবে। এজন্য আমি লোকজন এনে ব্রিজের খুটি খুলে একপাশে ঝালাই করে রেখেছি। যাতে করে কেউ মালামাল চুরি করে না নিয়ে যেতে পারে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) আমতলী উপজেলা প্রকৌশলী মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, সরেজমিনে সেতু এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে ব্রিজটি একেবারে অকেজ হয়ে গেছে। তাই এটা অকশন দিয়ে পুনরায় একটি সেতু করার প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।