১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম

আমতলীতে মশার কামড়ে অতিষ্ঠ জনজীবন !

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

হারুন অর রশিদ, আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি। বরগুনার আমতলীতে মশার উপদ্রবে অতিষ্ঠ জনজীবন। রাত দিন মশার উৎপাত চলছে সমান তালে। মশার যন্ত্রণা থেকে পরিত্রান পেতে কয়েল ও অ্যারোসলসহ বিভিন্ন উপকরণ ব্যবহার করেও মশার হাত থেকে যেন নিস্তার মিলছে না। এতে যেমন মানুষের স্বাভাবিক কাজকর্ম বিঘিœত হচ্ছে, তেমনি ডেঙ্গুসহ মশাবাহিত রোগের ঝুঁকি বাড়ছে। মশার যন্ত্রণায় দিনের বেলায়ও স্বাভাবিকভাবে কাজকর্ম করা যাচ্ছে না। সন্ধ্যা নামার সাথে সাথে আরো কয়েকগুন উৎপাত বেড়ে যায়। তখন মশা তাড়ানো উপকরণ ছাড়া বসে থাকা দুরুহ হয়ে পড়ে। মশার উৎপাতে শিক্ষার্থীরা ঠিকভাবে লেখাপড়া করতে পারছে না। পাশাপাশি উপজেলার ব্যবসায়ীরাও রয়েছে চরম বিপাকে। মশার কামড় খেয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসে থাকা তাদের জন্য কষ্টকর হয়ে পড়েছে। উপজেলা পরিষদের চার পাশে ডোবা নালাগুলো কঁচুরি পানায় ভরপুর এবং ময়লার ভাগারে পরিনত হয়েছে। প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চোঁখের সামনে উপজেলা পরিষদের গেটেই রয়েছে ময়লার ভাগার। যা কেউ পরিস্কার পরিছন্ন করতে এগিয়ে আসছে না। ময়লার ভাগার থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে মারাত্মক পরিবেশ দুষণ, মশার বংশ বিস্তার ও ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। পরিবেশ দুষণ ও মশার উৎপাত বৃদ্ধি থেকে পরিত্রাণ পেতে দ্রæত ডোবা- নাল থেকে কচুরীপানা ও ময়লার ভাগার পরিস্কারের দাবী জানিয়েছেন ভূক্তভোগীরা। এছাড়া উপজেলা ৭টি ইউনিয়নের অধিকাংশ খাল, ডোবা ও নালাগুলো কচুরীপানা ও ময়লা আবর্জনায় পরিপূর্ণ থাকায় প্রতিনিয়ত মশার বংশ বিস্তার হচ্ছে। উপজেলার আমতলী পৌরসভা এবং চাওড়া, হলদিয়া, কুকুয়া ও সদর ইউনিয়নের উপরদিয়ে প্রবাহিত ৩০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ২০০ মিটার প্রস্থের চাওড়া- সুবন্দি বদ্ধ নদীটি বছরের পর বছর চুরীপানায় পরিপূর্ণ থাকায় পানি পঁচে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দুষিত করছে। প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ মশার বংশ বৃদ্ধির কারখানা বলে পরিচিত এ নদীর দু-পাড়ের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ভাইরাসসহ বিভিন্ন রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আতংকে রয়েছে। ভূক্তভোগী বাসিন্দাদের মতে, মশার এসব আবাসস্থলগুলো নিয়মিত পরিষ্কার- পরিচ্ছন্ন রেখে মশা নিধন অভিযান উপজেলা প্রশাসনের শুরু করতে হবে। তবেই মশার উৎপাত থেকে অনেকটাই পরিত্রাণ পেত উপজেলাবাসী। আবার মশা নিধন উপজেলা প্রশাসনের ওপর ছেড়ে দিলেই চলবে না এর সঙ্গে সকল এলাকাবাসীকে সচেতনতামূলক ভূমিকা পালন করতে হবে। নিজের আবাসস্থল পরিচ্ছন্ন রাখতে বসবাসকারীদের সহযোগিতা করতে হবে। বাড়ির ময়লা-আবর্জনা যেখানে সেখানে না ফেলে নির্দ্দিষ্ট স্থানে ফেলা উচিত। এমনটি করা হলে মশার উৎপাত অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। চন্দ্রা গ্রামের শাহাবুদ্দিন বলেন, চাওড়া- সুবন্দি বদ্ধ নদীটি বছরের পর বছর চুরীপানায় পরিপূর্ণ থাকায় পানি পঁচে যেমন দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দুষিত করছে তেমনি প্রতিদিন মশার কামড়ে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে নদীর দু-পাড়ের প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। উপজেলার মহিষডাঙ্গা এলাকার কলেজ পড়ুয়া শিক্ষার্থী মোঃ বেল্লাল ও তানিয়া বলেন, মশার কারণে রাতের বেলায় চেয়ার- টেবিলে বসে লেখাপড়া করা কষ্টকর। তাই নিরুপায় হয়ে তাকে মশারি টাঙিয়ে বিছানায় বসে লেখাপড়া করতে হচ্ছে। পৌরসভার স্কুল শিক্ষার্থী মাহিদ, নিদি, সারা, সুমাইয়া বলেন, মশার কামড়ে আমরা ঠিকমত পড়াশুনা করতে পারছিনা। পৌরসভার মাজার রোড এলাকার গৃহীনি রুমা বেগম জানায়, মশার অত্যাচারে ঘরে-বাইরে কোথাও স্বস্তি মিলছে না। দিনের বেলায়ও ঘরে কয়েল জ্বালিয়ে রাখতে হচ্ছে। পৌর মেয়র মোঃ মতিয়ার রহমান বলেন, পৌর শহরে মশা নিধনে দ্রæত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শহরের মধ্যে ময়লার ভাগারগুলো দ্রæত পরিস্কার করার ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। যেখানে সেখানে বাড়ির ময়লা-আবর্জনা না ফেলে নির্দ্দিষ্ট স্থানে ফেলতে তিনি পৌরবাসীকে অনুরোধ করেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ কাওসার হোসেন মুঠোফোনে বলেন, শীঘ্রই মশা নিধন ও পরিস্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু করা হবে।

সর্বশেষ