২রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

ইন্দুরকানীতে অনুমতি না নিয়েই ইউপি ভবনে আ.লীগের কার্যালয়

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

পিরোজপুর প্রতিনিধি ::: পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলার সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) পরিত্যক্ত ভবনে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় করা হয়েছে। তবে এর জন্য কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

উপজেলার ইন্দুরকানী সদর ইউনিয়ন পরিষদের ভবনের দ্বিতীয় তলায় উপজেলা আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের কার্যালয় লেখা সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়েছে। সেখানে থাকা চারটি কক্ষ নিয়ে দলের কার্যালয় হিসেবে কাজ করছে দলটি।

গত প্রায় এক সপ্তাহ আগে কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি না নিয়ে ওই ভবনটিতে কার্যালয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, গত ২০২১ সালে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। পরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ভাড়া করা ঘরে ইন্দুরকানী সদর ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে। ভবনটির দ্বিতীয় তলা খালি ছিল। পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনের দ্বিতীয় তলায় গত কয়েকদিন আওয়ামী লীগ দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড সাঁটানোয় আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে ইন্দুরকানী উপজেলা পরিষদের সামনের সড়কে ভাড়া ঘরে চলত উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রম।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক ইউপি সদস্য জানান, ভবনটির নিচের পাঁচটি কক্ষ দোকান হিসেবে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। তবে এর কোনো টাকা ইউনিয়ন পরিষদের তহবিলে জমা হয় না।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, ভবনটির দ্বিতীয় তলার সাঁটানো রয়েছে, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাইনবোর্ড। আর নিচ তলায় কয়েকটি দোকান।

এ বিষয়ে জানতে ওই ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. মতিউর রহমান কাইউম বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো বক্তব্য দিতে পারছি না। কেননা, আমি ছোট চাকরি করি। এ ব্যাপারে বক্তব্য দেওয়ার এখতিয়ার (ক্ষমতা) আমার নাই। আপনি চেয়ারম্যানের কাছে জিজ্ঞাসা করেন।

ওই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ করিম ইমন বলেন, আমি ভারতে ছিলাম। এ সুযোগে আমার বা কর্তৃপক্ষের কোনো অনুমতি না নিয়ে গত প্রায় ২০ দিন আগে আওয়ামী লীগের কিছু লোক সেখানে দলীয় কার্যালয়ের সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন। সেখানে তারা তাদের দলীয় কার্যক্রম চালাচ্ছেন। আমাকে বিষয়টি ইউপি সচিব মোবাইল ফোনে জানিয়েছেন। আমি বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) জানিয়েছিলাম। কিন্তু গত সোমবার (০৭ জুলাই) দেশে ফিরছি। এখন নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়ার কথা ভাবছি। আমি গত দেড় বছর চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছি। এর আগেই ওই পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, দোকান ভাড়ার টাকা আমি নিচ্ছি না। এর আগের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বে থাকারা (প্রশাসক) কী করেছেন তা তারা জানেন।

এ ব্যাপারে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মনিরুজ্জামান সেলিম হাওলাদার বলেন, শহরের একটি ভাড়া বাসায় সংগঠনের কার্যক্রম চলত। ওই বাসাটি আমি দায়িত্ব নিয়ে ভাড়া নিয়েছিলাম। ঘরটি মালিক সম্প্রতি আমাকে ভাড়া দেবেন না বলে জানিয়েছেন। এ অবস্থায় ওই ঘরটি ছাড়তে হয়েছে। আমি ব্যবসার কাজে ঢাকায় থাকি। তাই সংগঠনের উপজেলা যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান আমাকে ইউনিয়ন পরিষদের পরিত্যক্ত ভবনের কথা জানান। পরে শুনেছি, তিনি সেখানে ওই সাইনবোর্ড লাগিয়েছেন। তবে সাময়িক সময়ের জন্য সেখানে সাইনবোর্ড লাগানো হয়েছে। শিগগিরই আমরা অন্য জায়গায় জমি কিনে সেখানে দলীয় কার্যালয় করার চেষ্টা করছি।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুৎফুন্নেসা খানম জানান, পরিত্যক্ত ওই ভবনে কোনো কার্যক্রম চালানোর সুযোগ নেই। বিষয়টি আমি উপজেলা চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি, তিনি পদক্ষেপ নেবেন।

এ বিষয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মতিউর রহমান জানান, ওখানে ছাত্রলীগের ছেলেরা সাইনবোর্ড টানিয়েছে। আওয়ামী লীগ সেখানে বসে না, ছাত্রলীগের ছেলেরা সেখানে বসে। আওয়ামী লীগের সাইনবোর্ড সাঁটানো হয়েছে কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সাইনবোর্ড থাকতে পারে। তবে ভবনটি পরিত্যক্ত হলেও সেখানে তো দোকান আছে।’’

সর্বশেষ