১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

উজিরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষক কর্তৃক অর্ধশত বেত্রাঘাত, ২ দিন নিখোঁজ ছিল শিক্ষার্থী

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

নাসির শরীফ, উজিরপুর প্রতিনিধি ::: বরিশাল জেলার উজিরপুরে মাদ্রাসা শিক্ষকের অর্ধশত বেত্রাঘাত খেয়ে ভয়ে ২ দিন নিখোঁজ ছিল এক শিক্ষার্থী। উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের হস্তিশুন্ড এ.আর.তালুকদার কমপ্লেক্স মাদ্রাসার হাফেজি পড়ুয়া ছাত্র মাহিম মল্লিককে (১৩) ২৬ জুন দুপুরে শরীরের বিভিন্ন স্থানে অর্ধশতাধিক বেত্রাঘাত করে রক্তাক্ত জখম করে এবং বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দেয় সহকারি শিক্ষক মাওলানা শাহিন। হুমকির মুখে আতঙ্কে ওই শিশু মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে গিয়ে নিখোঁজ হয়।

এদিকে সন্তানের খোঁজ না পেয়ে দিশেহারা হয়ে পরে বাবা-মাসহ পরিবারের লোকজন। এরপর অনেক খোজাখুজির পরে ঘটনার দুই দিন পরে ২৮ জুন শুক্রবার সকালে শিশুটির সন্ধান পাওয়া যায়।

সূত্রে জানা যায়, মাহিম তার নানা খোলনা গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ মজিবর রহমান খানের বাড়িতে থেকে লেখাপড়া করে। মাহিম জল্লা ইউনিয়নের মুন্সিরতালুক গ্রামের সৌদি প্রবাসী আরিফ মল্লিকের ছেলে।

আহত শিক্ষার্থী মাহিম মল্লিক সাংবাদিকদের কান্না করে বলে, শাহিন হুজুর আমাকে নানা বাড়িতে যাওয়ার অপরাধে ক্ষিপ্ত হয়ে লাঠি দিয়ে ৪০/৫০ টি আঘাত করে এবং পরবর্তীতে পিটিয়ে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তাই ভয়ে আমি নানা বাড়িতে না গিয়ে হেটে অনেক দুরে চলে যাই। আমাকে কয়েকজন লোক খাবার ও চিকিৎসা করায় এবং ঘুমাতে দেয়।

শিক্ষার্থীর নানা সাবেক ইউপি সদস্য মোঃ মজিবর রহমান খান অভিযুক্ত শিক্ষকের বিচারের দাবী জানান এবং কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক মাওলানা শাহিন সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমাকে ক্ষমা করুন ভবিষ্যতে আর কোন শিক্ষার্থীকে পিটাবো না।

মুহতামিম মাওলানা নুরুল আলম জানান, মাহিম আমাদের কাউকে কিছু না বলে বাড়িতে চলে যাওয়ায় তার মায়ের সামনেই তাকে পিটিয়েছে শিক্ষক শাহিন। এতে সমস্যা কোথায়। তিনি নিখোঁজের বিষয়টি অস্বীকার করেন।

মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা আব্দুর রাজ্জাক তালুকদার বলেন, কোন শিক্ষার্থীকে মারধর করা আইনসম্মত নয়। আমি অসুস্থ ঢাকায় আছি, সুস্থ হয়ে বাড়িতে এসে বিষয়টি মিমাংসা করবো।

উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জাফর আহম্মেদ জানান, বিষয়টি জানা নেই, ঘটনাস্থলে পুলিশের ফোর্স পাঠিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তীতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবিএম জাহিদ হোসেন জানান, বিষয়টি জানা নেই।

উজিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাখাওয়াত হোসেন জানান ,বিষয়টি জানা নেই, তবে খতিয়ে দেখা হবে।

এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মামলা হয়নি। অপরদিকে হামলার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে অত্র প্রতিষ্ঠানের মুহতামিম ও অভিযুক্ত শিক্ষক।

এদিকে কোমলমতি শিক্ষার্থীর উপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষককে অচিরেই গ্রেফতার পূর্বক দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন আহত শিক্ষার্থীর পরিবার ও এলাকাবাসী।

সর্বশেষ