২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
বরিশালে ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার চরকাউয়ায় যুবলীগ নেতা খান মামুনের গণসংযোগ বাংলাদেশে বর্তমানে ভারতের তাবেদার সরকার শাসন করছে : বরিশালে ভিপি নুর বরিশালে নামাজের সময় মসজিদের এসি বিস্ফোরণ, ইমামের কক্ষে আগুন উজিরপুরে ধর্ষণ মামলার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি গ্রেপ্তার কাউখালীতে পাটি খাতে রূপালী ব্যাংকের ক্লাস্টার ভিত্তিক ঋণ বিতরণ বিআরডিবি'র কার্যক্রম পরিদর্শনে সচিববৃন্দ মনপুরায়, কিশোরীদের সচেতনতামূলক প্রশিক্ষণ ও উঠান বৈঠক বরিশালে ‘সাড়ে তিনশ’ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত শহর রক্ষা বাধ দখলের মহোৎসব উজিরপুরে মাদকসহ জেলা ডিবি'র খাচায় ১ মাদক কারবারী আটক রাজাপুরে নিখোজ ভ্যান চালকের লাশ ভাসছিলো নদীতে

এবার মুখ খুললেন ফরচুন’র মালিক মিজানুর রহমান

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

বরিশাল বাণী:

বরিশাল বিসিক এলাকার প্রতিষ্ঠান ফরচুন সুজ লিমিটেড ও ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীদের দ্বন্দ্বের ফলে গতকাল বরিশালের বাস ও লঞ্চ যাত্রীরা সীমাহীন দুর্ভোগের সম্মুখীন হয়েছেন। কেননা, ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা বিনা নোটিশে লঞ্চ ও বাস চলাচল বন্ধ করে দিয়েছিল। পরবর্তীতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদেক আবদুল্লাহ’র হস্তক্ষেপে গতকাল রাত ১১টার পর লঞ্চ ও বাস চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। তবে আজ পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান-এর উপস্থিতিতে নাম উল্লেখ না করে সিটি মেয়র ফরচুন সুজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করেছেন।

এর প্রেক্ষিতে টেলিফোনে ফরচুন সুজ লিমিটেডের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান-এর সাক্ষৎকার নিয়েছেন ফ্রিল্যান্স জার্নালিস্ট শেখ রিয়াদ মুহাম্মদ নুর। সেই সাক্ষাৎকার রিয়াদ নুরের ভাষায় নিম্নে হুবহু তুলে ধরা হলো।

আমিঃ আপনার বিরুদ্ধে একটি মামলা হয়েছে, সেই মামলার ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি?

মিজানুর রহমানঃ গতকাল সকালবেলা এক ফ্যাক্টরি থেকে অন্য ফ্যাক্টরি যাচ্ছিলাম, আমাদের তো তিনটি ফ্যাক্টরি, ওখানে এক ফ্যাক্টরি থেকে দুইটি মেয়ে বের হয়ে যাচ্ছিলো, তিন-চারজন ছেলে ওদের টানাহেঁচড়া করছিল। আমার সাথে থাকা কলিগকে বললাম দেখো তো কি হয়েছে, আমাকে জানালো ওরা একটি মেয়েকে ধাক্কা দিয়েছে, আমি বললাম ওদেরকে ধরো এবং আমি দেখলাম পিছনে আমাদের বীট পুলিশের তিনজন অফিসার দাঁড়িয়ে ছিলো। তাদের ডাক দিয়ে বললাম ওদেরকে নেন, নিয়ে একজায়গায় রাখেন। তখন তারা ওদের ফরচুনের ভিতরে রাখলেন। ইতিমধ্যে থানার ওসিকে জানিয়েছে, ডিসি নর্থ, র‍্যাবকে ফোন দিয়েছি। ফোন দিয়ে বললাম এই এই ঘটনা, আপনারা আসেন। ওনারা ১০ মিনিটের মধ্যে চলে আসেন। তারপর কাউনিয়া থানার ওসি তদন্ত ও র‍্যাবের টুআইসি’র উপস্থিতিতে পুলিশের হাতে সোহাগকে তুলে দেয়া হয়। কিন্তু রাতে জানতে পারি উল্টো আমার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে।

আমিঃ আপনার বিরুদ্ধে অভিযোগ আপনি শর্টগানের মুখে মামলার বাদিকে অপহরণ করে আপনার ফ্যাক্টরিতে আটক করে শারিরীক ভাবে নির্যাতন করেছেন, এই বিষয়ে কি বলবেন?

মিজানুর রহমানঃ এইটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, তাছাড়া তখন তো পুলিশ উপস্থিত ছিল।

আমিঃ মামলার বাদি একজন নির্মান সামগ্রী বিক্রেতা তিনি আপনার কাছে বাকিতে বালু বিক্রি করেছিলেন, সেই বাকির টাকা আদায় করতে গেলে আপনি তাকে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে, এ বিষয়ে কি বলবেন?

মিজানুর রহমানঃ একদম বাজে কথা, সে কোনো ব্যবসায়ী না। এক সময়ে আমার ফ্যাক্টরিতে সিকিউরিটি গার্ডের চাকুরী করতো, চুরির দায়ে তাকে বের করে দেয়া হয়েছিল। আমিঃ কিন্তু বলা হচ্ছে তিনি নগরীর ১ নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ নেতা! মিজানুর রহমানঃ সে মোটেও আওয়ামী লীগ নেতা নয়। বরং একসময়ে বিএনপির সাবেক এমপি মুজিবুর রহমান সরোয়ারের চা-টা এনে দিত। এখন একজন ছাত্রলীগ নেতার ছত্রচ্ছায়ায় বিভিন্ন অপকর্ম করে বেড়ায়।

আমিঃ বলা হচ্ছে আপনি বিএনপি-জামাতের লোক, আপনার ভাই জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করেছেন!

মিজানুর রহমানঃ আমি যদি বিএনপি-জামাতের লোক হতাম তাহলে ২০১৩ সালের আন্দোলনে আমার ৪টি বাস পুড়িয়ে দেয়া হত না, আমার ফ্যাক্টরিতে বোমা মারা হত না এবং আমার ভাই কখনোই জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচন করেনি।

আমিঃ গতকালের ঘটনা আপনি মেয়র মহোদয়কে জানিয়েছিলেন?

মিজানুর রহমানঃ আমি তিনবার ফোন দিয়েছিলাম, কিন্তু তিনি আমার ফোন ধরেননি। তবে বিভাগের অভিভাবক হিসেবে বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়কে জানিয়েছি, ডিসি সাহেবকে জানিয়েছি।

আমিঃ আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা আপনার উপর বেশ ক্ষিপ্ত বলে মনে হয়, এর কারণ কি?

মিজানুর রহমানঃ আমি নিজেও আওয়ামী লীগের লোক, বিগত মেয়র নির্বাচনের সময়ে আমি দিনরাত বর্তমান মেয়র মহোদয়ের পক্ষে কাজ করেছি। তবে আওয়ামী লীগের অল্পকিছু লোক রয়েছে যারা আমার ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। আমিঃ এর কারণ কি?মিজানুর রহমানঃ বিসিক-এর ৫৩ কোটি টাকার কাজের মধ্যে ১৮ কোটি টাকার কাজ দেয়া হয়েছে, বাইরের কিছু ঠিকাদার সেসব কাজ পেয়েছে। যেহেতু আমি বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সভাপতি তাই ঠিকাদারি কাজ না পাওয়ায় তারা আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়েছে।

আমিঃ বিসিক বিসিসি’র জমি দখল করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে এবং আপনি বিষয়টির জন্য দায়ী বলে অভিযোগ করা হয়, এ ব্যাপারে আপনার বক্তব্য কি?

মিজানুর রহমানঃ না বিষয়টি সঠিক নয়, বিসিক তার নিজস্ব জায়গায় কাজ করছে, সেই কাজ ইতিমধ্যে শেষের পথে। তাছাড়া কাজ করছে ঠিকাদার এখানে আমার ব্যক্তিগত কোন সংপৃক্ততা নেই। তবে শিল্প সমিতির সভাপতি হিসেবে বিসিক-এর স্বার্থ রক্ষা করা আমার দায়িত্ব। যদি সিটি কর্পোরেশনের জায়গা দখল করা হয়ে থাকে তাহলে তারা আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারে, তেমন কিছুই তো করা হয়নি। বরং সেই কাজ নিয়ে আমার ভাইকে মান্না নামে একলোক মেয়র মহোদয়ের উপস্থিতিতে মারধোর করেছে। বিষয়টি তিনি মিটমাট করিয়ে দিতে পারতেন কিন্তু তা তিনি করেননি। ফলে আমরা মামলা করেছিলাম। কিন্তু মেয়র মহোদয়ের পিতা আমাকে ফোন করে বিষয়টি আর না বাড়ানোর পরামর্শ দিলে আমরা আর বাড়াবাড়ি করেনি। অথচ পরবর্তীতে আমাদের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করা হয়েছিল। তবে প্রশাসনের সহযোগিতা ও মেয়র মহোদয়ের পিতার অনুমতি নিয়ে আমরা বিসিক-এর উন্নয়ন কাজ সুন্দরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।

আমিঃ আপনার কর্মীকে হয়রানি করা হয়েছে এই বিষয়ে আপনি আইনগত কোন ব্যবস্থা নিবেন কি?

মিজানুর রহমানঃ না। এবিষয়ে যা করার তা করেছি, এখন পুলিশ যদি কোন ব্যবস্থা না নেয় তাহলে আমার কি করার আছে! তবে ভুক্তভোগীরা যদি আইনগত ব্যবস্থা নিতে চায় তাহলে তারা তা নিতে পারে। তবে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

আমিঃ আপনার ফ্যাক্টরির নারীদের হয়রানি করার কারন কি হতে পারে?

মিজানুর রহমানঃ আসলে তার চরিত্রে সমস্যা রয়েছে। সকালে কাজ শুরুর আগে ও সন্ধ্যায় কাজ শেষে সে তার দলবল নিয়ে নারী শ্রমিকদের উত্যক্ত করে থাকে।

আমিঃ তাহলে এমন একজনের পক্ষে স্বয়ং মেয়র মহোদয় কেন কথা বলছেন?

মিজানুর রহমানঃ এ ব্যাপারে আমি কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।

আমিঃ সময় দেয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

মিজানুর রহমানঃ আপনাকেও ধন্যবাদ।

সর্বশেষ