১৩ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

করোনায় সব স্বপ্ন চুরমার, প্রবাসফেরত স্বপন এখন চা দোকানী!

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

রাহাদ সুমন, বিশেষ প্রতিনিধি॥ দু’চোখে রঙিন স্বপ্ন নিয়ে জীবনকে বদলে ফেলতে চাকরি নামের সোনার হরিণের খোঁজে ১৯ মাস পূর্বে সুদূর কাতার গিয়েছিলেন বরিশালের বানারীপাড়ার পশ্চিম সলিয়াবাকপুর গ্রামের স্বপন। সেখানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করে ভালোই কাটছিলো তার। স্বপনের কাতার যেতে হওয়া ঋন একটু একটু করে পরিশোধের পাশাপাশি স্ত্রী,১০ বছর বয়সী জুঁই ও তিন বছরের মেয়ে জামিলাকে নিয়ে সংসার ভালোই চলছিলো। দু’মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়ে তাদের আলোকিত জীবন গড়ে তোলার পাশাপাশি সংসারে সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য আনার স্বপ্ন নিয়ে কাতারে রাত-দিন কাজ করে অর্জিত অর্থ দেশে পাঠাতেন তিনি। কিন্তু স্বপনের চোখে রঙিন স্বপ্ন হারিয়ে হঠাৎ অমানিশার ঘোর অন্ধকার নেমে আসে। আর সেই অন্ধকার নামিয়ে দেয় কোভিড-১৯ প্রাণঘাতি নভেল করোনাভাইরাস। করোনার কারনে কাতারে ৫ মাস বেকার হোম কোয়ারেন্টাইন জীবন কাটিয়ে গত চার মাস পূর্বে তাকে দেশে ফিরে আসতে হয়। দেশে এসে কর্মহীন থেকে সংসারে নিত্য অভাব ও বিদেশে যেতে হওয়া ঋন পরিশোধের চাপে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। কোথাও কোন কাজ না পেয়ে স্বপন নিরুপায় হয়ে পড়ে। অবশেষে সম্প্রতি বানারীপাড়া পৌর শহরের বন্দর বাজারের ফেরীঘাট সংলগ্ন সন্ধ্যা নদীর তীরে শহর রক্ষা বাধের আদলে নির্মিত নতুন রাস্তার পাশে বাঁশ,টিন ও পলিথিন দিয়ে ছোট্ট একটি ছাপড়া ঘর তুলে সেখানে চা-বিস্কুট-সিঙ্গারার দোকান দেন তিনি। এ দোকানে সারাদিনে তার আয় ২০০ থেকে ৩০০ টাকা। তার এ সামান্য আয় দিয়ে সংসারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় অবস্থা। কিভাবে দু’মেয়ের লেখাপড়ার খরচ,৪ জনের সংসারের ভরণপোষন ও ঋন পরিশোধ করবে এ দুঃশ্চিন্তায় তিনি কাতর। এছাড়া নদীর তীরে রাস্তার পাশে অস্থায়ীভাবে গড়ে তোলা দোকানটিও পৌর কতৃপক্ষ যেকোন সময় সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিতে পারে এ শঙ্কাও রয়েছে তার। প্রাণঘাতি করোনা স্বপনের সব স্বপ্ন দুঃস্বপ্নে পরিণত করে বিদেশের সুখের জীবনে অমানিশার ঘোর অন্ধকার নামিয়ে আজ তাকে ফুটপাতের অনিশ্চিত জীবনের দিকে ঠেলে দিয়েছে। এ বিষয়ে স্বপন বলেন, করোনা আমাকে পথে বসিয়েছে। বড় আশা নিয়ে আমি কাতার গিয়েছিলাম। ফিরে আসলাম খালি হাতে। এখন যে ভালো কোনো ব্যবসা করব সেই উপায়ও নেই আমার কাছে। কিছু অর্থ পেলে ভালো কোনো ব্যবসার পরিকল্পনার কথাও জানান তিনি।

সর্বশেষ