১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

করোনা প্রকোপেও থেমে নেই বরিশাল কোতয়ালী থানা পুলিশের চাঁদাবাজী

শেয়ার করুনঃ

Share on facebook
Facebook
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on email
Email

রিপোর্ট আমিনুল শাহীন :

করোনা যুদ্ধে প্রথম সারির যোদ্ধা হিসেবে পুলিশের ভুমিকা প্রশংসিত। দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি প্রাণ দিয়েছেন অনেকেই। করোনা কালীন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করার পরেও বিএমপি’র কোতয়ালী মডেল থানার কয়েকজন কর্মকর্তার চাঁদাবাজীর কারনে ভাবমূর্তী বিলীনের পথে। করোনা সংক্রমণ রোধে লকডাউন ঘোষণার পর থেকেই বেপরোয়া চাঁদাবাজীতে নেমে পড়েন কয়েকজন অসাধু কর্মকর্তা। এমনকি বিএমপি‘র এলাকার বাহিরে গিয়ে নদী দাপিয়ে জেলেদের কাছ থেকে টাকা উত্তোলনের এন্তার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে।

কর্মহীন মানুষদের হাহাকারও তাদের মন গলাতে পারেনি। তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি মাছ ব্যবসায়ী, জেলে, মুদি ব্যবসায়ী, পলিথিন ব্যবসায়ী, এমনকি টাকার বিনিময়ে বাল্য বিবাহকেও বৈধ করেছে এরা।
অভিযোগ কারীরা জানান, পুলিশের ভয়েই বাধ্য হয়ে টাকা দিতে হয়। অন্যথায় জীবিকা চালানো দায় হয়ে পড়ে। উপরন্ত নানা অভিযোগে করা হয় হয়রানী। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা কোতয়ালী থানার প্রত্যন্ত এলাকা চরমোনাই ইউনিয়ন সহ তার আশপাশ এলাকায় অবৈধ ভাবে চাঁদা উত্তোলনের জোন হিসেবে বেছে নিয়েছে।

সূত্রে জানাযায়, ৪বছরের অধীক সময় চরমোনাই ইউনিয়নে দ্বায়িত্বে ছিলেন কোতয়ালী মডেল থানার এএসআই শরীফ।
দীর্ঘদিন এক এলাকার দ্বায়িত্ব পালন করায় আইন বাস্তবায়নের পাশাপাশি অবৈধ পন্থায় টাকা উপার্যনের ধান্দা শুরু করেন।
সূত্রে আরো জানাযায় এস আই বশির ও এ,এসআই শরীফ সহ কয়েকজনের একটি টিম গঠিত হয় যারা বিভিন্ন যায়গা থেকে টাকা তুলে।
মেহেন্দিগঞ্জ এলাকার চরভোলানাথের জেলে আবুল দর্জি বলেন, ‘গত এপ্রিল মাসে বশির স্যার ও শরিফ স্যার সহ ৪জন ট্রলার নিয়ে এসে আমার কাছে ২০হাজার টাকা দাবী করে। আমি ১০হাজর টাকা দিয়ে রক্ষা পাই।’

নলচর এলাকার মাছ ব্যবসায়ী আল-আমিন গাজী বলেন, ‘ গত ২৩ মার্চ কাঠের পোল এলাকা থেকে আমার মাছের ট্রাক আটকিয়ে ১লক্ষ টাকা দাবী করে এসআই বশির ও এএসআই শরীফ। ২৫ হাজার টাকার বিনিময়ে তারা মাছের ট্রাক ছেড়ে দেয়। এছাড়াও মার্চ মাসে আরো ২বার মাছ আটকিয়ে ২০ হাজার টাকা নেয় তারা।’

বুখাই নগর বাজারের ব্যবসায়ী গবিন্দ চন্দ্র মিস্ত্রী বলেন, ‘ এপ্রিল মাসে আমার দোকানের গোডাউনে পলিথিন আছে এমন অভিযোগ এনে এসআই বশির, এএসআই শরীফ সহ আরো ২জন আমার নিকট ২লক্ষ টাকা দাবী করে। প্রথমে তারা আমার মোবাইলটি জব্দ করে। পরে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা দিলে আমার মোবাইল ফেরত দেয় এবং আমি রক্ষা পাই।’

ডিঙ্গামানিক এলাকার দোকানী আবুল কালাম বলেন, ‘লক ডাউনে দোকানের মালামাল নষ্ট হয়ে যায় অপর দিকে পারিবারিক প্রয়োজনে দোকান খুলি। দোকানের ঝাপ খোলার অপরাধে এএসআই শরীফ সহ ৪জন আমার দোকানে এসে আমাকে বসিয়ে রেখে আমার ছেলে ও ভাইয়ের কাছে ৫হাজার টাকা দাবী করে। তাদেরকে ৩হাজার টাকা দিয়ে রক্ষা পাই।’
একই এলাকার আরেক দোকানী ইয়ার হোসেন বলেন, ‘ আমি সহ অনেকের কাছ থেকে পুলিশ টাকা নিয়েছে। বলে কি লাভ হবে।’
এ ব্যাপারে কোতয়ালী মডেল থানার এসআই বশির বলেন, ‘ সকল অভিযোগ মিথ্যা। যদি কেউ প্রমাণ করতে পারে, তাহলে চাকরি ছেড়ে চলে যাব, অন্যথায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’

এএসআই শরীফ বলেন,‘ ভাই এসব কি বলেন, আসেন দুই ভাই চা খাই। এর পরে কথা হবে।’
এএসআই কামরুল (২) বলেন,‘ বিভিন্ন সময় বিভিন্ন টিমে ঐ এলাকায় দ্বায়িত্ব পালন করেছি। তবে আমি কোন চাঁদা উত্তোলনের সাথে জড়িত নই।’

এব্যাপারে বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো: শাহাবুদ্দিন খান (বিপিএম বার) বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোন অভিযোগ পাইনি, তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

সর্বশেষ